Logo
Logo
×

সম্পাদকীয়

অগ্রিম টিকিট বিক্রি কার্যক্রম

ঈদে জনদুর্ভোগ কাম্য নয়

Icon

সম্পাদকীয়

প্রকাশ: ১১ এপ্রিল ২০২৩, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

অগ্রিম টিকিট বিক্রি কার্যক্রম

ফাইল ছবি

পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ৭ এপ্রিল থেকে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রয় কার্যক্রম শুরু করেছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। উল্লেখ্য, বিগত বছরগুলোয় মুষ্টিমেয় কিছু স্টেশনে অগ্রিম টিকিট বিক্রির ব্যবস্থা থাকায় কাউন্টারের সামনে ২-৩ দিন পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থাকার পর স্বল্পসংখ্যক মানুষ কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যের টিকিট সংগ্রহ করতে পারতেন। এবার ‘টিকিট যার, ভ্রমণ তার’-রেলের নতুন এ স্লোগান সামনে রেখে ‘রেল অ্যাপসে’র মাধ্যমে একযোগে শতভাগ অগ্রিম টিকিট বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। নতুন এ ব্যবস্থায় এবারের ঈদযাত্রায় রেলযাত্রীদের দুর্ভোগ ও ভোগান্তি কিছুটা হলেও কমবে বলে আশা করা হয়েছিল। কিন্তু অনলাইনে টিকিট কাটতে গিয়ে নাকি যাত্রীরা আরও বেশি হয়রানির শিকার হচ্ছেন; টিকিট প্রত্যাশীদের বড় একটা অংশ অনলাইনে ঢুকতেই পারছেন না।

বস্তুত অনলাইন জটিলতায় দিশেহারা অধিকাংশ যাত্রী বুঝতে পারছেন না এ পরিস্থিতিতে করণীয় কী? তাছাড়া প্রশ্ন উঠেছে, যাদের স্মার্টফোন ও কম্পিউটার রয়েছে, তাদের মধ্যে অল্পসংখ্যক মানুষ যৎসামান্য টিকিট পেলেও সাধারণ যাত্রীদের মধ্যে যাদের স্মার্টফোন বা কম্পিউটার নেই; কিংবা যারা ইন্টারনেট চালাতে জানেন না, তাদের ক্ষেত্রে কী সমাধান? রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ অবশ্য টিকিট পাচ্ছেন না এমন যাত্রীদের জন্য ঢাকা-চট্টগ্রামগামী আন্তঃনগর সুবর্ণ এক্সপ্রেস বাদে বাকি ৩৬টি আন্তঃনগর ট্রেনে কেবল যাত্রার দিন আসনবিহীন ২৫ শতাংশ টিকিট বিক্রির ঘোষণা দিয়েছে। এতে দুর্ভোগের মাত্রায় তেমন একটা হেরফের হবে বলে মনে হয় না। কাজেই এমন পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত, যা হবে সর্বজনীন এবং তার ফলে মানুষ স্বচ্ছন্দে ও নিরাপদে ঈদে বাড়ি যেতে পারবেন।

ঈদ মানে খুশি ও আনন্দ হলেও প্রতিবছরই ঈদযাত্রা নিয়ে নিরানন্দের সুর ধ্বনিত হতে দেখা যায়। ঈদের আগে যানবাহনের টিকিট কালোবাজারি, যানজট, ছিনতাই-ডাকাতি ও চাঁদাবাজি বৃদ্ধি পাওয়া, জাল নোট, সড়ক ও লঞ্চ দুর্ঘটনা বৃদ্ধি, ফেরি চলাচল বন্ধ, শ্রমিক অসন্তোষ ও রাস্তা অবরোধসহ নানা ঘটনায় ঈদের আগে জনদুর্ভোগ চরমে ওঠে। ঈদের উৎসব-আনন্দ সামনে রেখে নাড়ির টানে প্রতিবছর পথে নামে অসংখ্য মানুষ। প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে কেউ সড়কপথে, কেউ রেলপথে, কেউ নৌপথে, আবার কেউ আকাশপথের যাত্রী হয়। আসন্ন ঈদুল ফিতরেও নিশ্চয়ই এর ব্যতিক্রম ঘটবে না। বাড়ি ফেরার প্রথম ধাপ হলো যানবাহনের আগাম টিকিট সংগ্রহ করা। অতীতে দেখা গেছে, ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার পরও বিভিন্ন যানবাহনের আগাম টিকিট সংগ্রহ করতে পারেননি অসংখ্য যাত্রী। আর যারা টিকিট পেয়েছেন, তাদের চড়া মূল্য পরিশোধ করতে হয়েছে। পরিতাপের বিষয় হলো, সড়কপথ, নৌপথ, রেলপথ কিংবা আকাশপথ-ঈদের আগে কোনোটিই সাধারণ মানুষের জন্য স্বস্তিদায়ক হয় না। নির্ঝঞ্ঝাট ও নিরাপদ ভ্রমণের প্রত্যাশা নিয়ে ঘরমুখো মানুষ টিকিটের জন্য এসব পথে চলাচলকারী যানবাহনের টিকিট কাউন্টারে ভিড় জমানোর পর দীর্ঘসময় লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যের টিকিট সংগ্রহ করতে ব্যর্থ হন। তাদের কাছে উৎসবের রঙ ফিকে হতে বাধ্য। সাধারণ মানুষের ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে যা যা করা দরকার, সরকার তার সবকিছুই করবে, এটাই প্রত্যাশা।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম