Logo
Logo
×

সম্পাদকীয়

অগ্নিনিরাপত্তা ঝুঁকিতে পুরান ঢাকা

প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনা বাস্তবায়নে গড়িমসি কেন?

Icon

সম্পাদকীয়

প্রকাশ: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

অগ্নিনিরাপত্তা ঝুঁকিতে পুরান ঢাকা

ফাইল ছবি

চকবাজারের চুড়িহাট্টা অগ্নিকাণ্ডের ৪ বছর পরও সেখানকার অলিগলিতে রাসায়নিক গুদাম ও কারখানা থাকার বিষয়টি কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না। কেবল চুড়িহাট্টাই নয়; অপরিকল্পিত অবকাঠামো ও সরু গলির পুরান ঢাকা বড় ধরনের অগ্নিঝুঁকিতে রয়েছে।

জানা গেছে, সেখানে ৭০ শতাংশ সড়কই অগ্নিনির্বাপণের গাড়ি চলাচলের অনুপযোগী। উল্লেখ্য, চুড়িহাট্টা অগ্নিকাণ্ডে অন্তত ৭৮ জনের মৃত্যুর পাশাপাশি সম্পদহানি হয়েছিল প্রচুর। এর আগে ২০১০ সালের ৩ জুন পুরান ঢাকার নিমতলীতে অগ্নিকাণ্ডে ১২০ জনেরও বেশি নারী-পুরুষ প্রাণ হারানোর পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেশকিছু দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন। 

সেগুলোর মধ্যে অন্যতম ছিল পরিকল্পিতভাবে কেমিক্যাল শিল্পজোন গড়ে তুলে পুরান ঢাকার সব কেমিক্যাল গোডাউন সরিয়ে নেওয়া এবং দাহ্য কেমিক্যাল আনা-নেওয়া বন্ধসহ সেখানে নিরাপদ পরিবেশ গড়ে তোলা। যদি বলা হয়, প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া দিকনির্দেশনা বাস্তবায়ন না হওয়ার কারণেই মূলত চুড়িহাট্টা অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছিল, তাহলে কি ভুল হবে?

চুড়িহাট্টা অগ্নিকাণ্ডের জন্য কর্তৃপক্ষের অবহেলাকে দায়ী করতে চাই আমরা। নিমতলী ট্র্যাজেডির প্রতিটি বর্ষপূর্তিতে আমরা বলে এসেছি-কবে কর্তৃপক্ষের টনক নড়বে, পুরান ঢাকাবাসীকে ভয়াবহ ঝুঁকির মধ্যে বাস করতে হবে আর কতদিন?

চকবাজার অগ্নিকাণ্ড আমাদের আশঙ্কাকেই সত্যে পরিণত করেছিল। এ পরিপ্রেক্ষিতে বলতে চাই-‘নিমতলী’ কিংবা ‘চুড়িহাট্টা’র মতো আর কোনো ট্র্যাজেডির মুখোমুখি হতে চাই না আমরা। কাজেই অনতিবিলম্বে পুরান ঢাকা থেকে সব রাসায়নিক গুদাম ও কারখানা সরিয়ে নিতে হবে। এজন্য সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। মেঘে মেঘে অনেক বেলা হয়েছে। আমরা আর কোনো অজুহাত বা আশ্বাসবাণী শুনতে চাই না। এখন যা দরকার তা হলো, কাজের মাধ্যমে প্রমাণ দেওয়া এবং এজন্য কাউকে না কাউকে সুনির্দিষ্টভাবে দায়িত্ব নিতে হবে।

জানা গেছে, পুরান ঢাকায় কেমিক্যাল ব্যবসার সঙ্গে যুক্তরা রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে সরকারের কোনো সিদ্ধান্তই কার্যকর হচ্ছে না; উপরন্তু আইন প্রয়োগকারী সংস্থার লোকজনও তাদের সমীহ করে থাকে। রাজনীতি যদি স্বতঃসিদ্ধ নিয়মের বাইরে যা খুশি তা-ই করার লাইসেন্স হয়, তাহলে জনআকাঙ্ক্ষাগুলো এদেশে কোনোদিনই পূর্ণতা পাবে না। আমরা আশা করব, দুটি ট্র্যাজেডি থেকে শিক্ষা নিয়ে পুরান ঢাকাকে কেমিক্যালমুক্ত করতে প্রশাসনিক পদক্ষেপের পাশাপাশি রাজনৈতিক অঙ্গীকারও থাকবে। রাজনৈতিক দলগুলোর শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা পুরান ঢাকার জনজীবন নিরাপদ রাখতে কার্যকর ভূমিকা রাখবেন, এটাই প্রত্যাশা।

 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম