Logo
Logo
×

সম্পাদকীয়

ক্ষতিকর ইটভাটা

ব্লকের ব্যবহারকে উৎসাহিত করতে হবে

Icon

সম্পাদকীয়

প্রকাশ: ১৮ জানুয়ারি ২০২৩, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

ক্ষতিকর ইটভাটা

রাজশাহী অঞ্চলে তিন ফসলি জমির উর্বর মাটি কেটে ইটভাটায় বিক্রি করা হচ্ছে। গতকাল যুগান্তরে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। বিষয়টি উদ্বেগজনক। বস্তুত দেশে ইট তৈরির পুরোনো পদ্ধতি চালু থাকার ক্ষতি অনেক। ইটভাটার কারণে বায়ুদূষণ ঘটছে মারাত্মকভাবে। নষ্ট হচ্ছে ফসলি জমি। ধ্বংস হচ্ছে পাহাড় ও গাছপালা। সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয়, এ পদ্ধতিতে ইট তৈরির কারণে মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে জনস্বাস্থ্যের। তারপরও বন্ধ হয়নি পরিবেশ বিধ্বংসী ইটভাটার কার্যক্রম। উল্লেখ্য, ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন ২০১৩ (সংশোধিত) ২০১৮ অনুযায়ী আবাসিক, সংরক্ষিত ও বাণিজ্যিক এলাকা, সিটি করপোরেশন, পৌরসভা বা উপজেলা সদর ও কৃষিজমিতে ইটভাটা স্থাপন করা যাবে না। এ আইন লঙ্ঘন করেই চলছে অবৈধ ইটভাটাগুলোর কার্যক্রম। এগুলোর কার্যক্রম বন্ধ করা জরুরি হয়ে পড়েছে।

বস্তুত দেশের সব ইটভাটার কার্যক্রমই পর্যায়ক্রমে বন্ধ করে ভবন নির্মাণে ইটের বিকল্প পরিবেশবান্ধব ব্লক ব্যবহারে যেতে হবে সংশ্লিষ্টদের। দেশে এ প্রক্রিয়া শুরুও হয়েছে। বেসরকারি পর্যায়ে ব্লক তৈরির বেশকিছু কারখানা গড়ে উঠেছে। তবে এ ব্যাপারে সরকারের তেমন কোনো উদ্যোগ নেই। অথচ ২০২৫ সালের মধ্যে সব ধরনের সরকারি নির্মাণে ব্লক ব্যবহারের নির্দেশ রয়েছে। ব্লকের প্রসার ঘটলে কম খরচে মানসম্মত নির্মাণকাজ করা সম্ভব হবে।

জানা যায়, ইটভাটায় জ্বালানি হিসাবে ব্যবহার হয় আমদানিকৃত নিম্নমানের কয়লা। এ কয়লা পোড়ানোর ফলে প্রচুর পরিমাণ ছাই তৈরি হয়। অন্যদিকে ইটভাটা থেকে বায়ুমণ্ডলে নানা দূষিত উপাদানও যোগ হচ্ছে। গবেষণায় দেখা গেছে, এসব উপাদান মানবদেহে শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে প্রবেশ করলে রেসপিরেটরি সিস্টেম ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। এ কারণে ইটভাটার আশপাশে বসবাসরত মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্যগত সমস্যা দেখা যায় বেশি। এছাড়া ইটভাটা থেকে নির্গত ছাই পার্শ্ববর্তী নদী বা জলাশয়ে নিষ্কাশিত হয়। ওই বর্জ্য পানিতে মিশে বিভিন্ন ধরনের বিষাক্ত উপাদান জলজ উদ্ভিদ ও প্রাণীর মাধ্যমে খাদ্যশৃঙ্খলের দ্বারা মানুষের শরীরে প্রবেশ করছে। ফলে মানুষ বিভিন্ন ধরনের জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। কৃষিজমির ওপরও ইটভাটার ক্ষতিকর প্রভাব রয়েছে। জমির উর্বরতা শক্তি কমছে। কাজেই সব দিক বিবেচনা করে ইটের পরিবর্তে ব্লকের ব্যবহারকে উৎসাহিত করতে সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।

 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম