আছাদুজ্জামানের প্রভাবে ‘কলম মেম্বার’ হয়ে ওঠেন বেপরোয়া
ফরিদপুর ব্যুরো
প্রকাশ: ২২ এপ্রিল ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
ইব্রাহিম শেখ ওরফে ‘কলম মেম্বার’। তিনি ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার কামারগ্রামের বাসিন্দা। কলম মেম্বার আলোচিত সাবেক ডিএমপি’র (ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়ার ভাগনে ও আলফাডাঙ্গা উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক ইউপি সদস্য। মামা আছাদুজ্জামান মিয়ার প্রভাব কাজে লাগিয়ে হয়েছেন কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের নেতা। এই কলম মেম্বার আছাদুজ্জামান মিয়ার ভাগনে পরিচয়ে ও মামার প্রভাব খাটিয়ে এলাকায় জমি দখল, সালিশের নামে টাকা আদায়, চাঁদাবাজিসহ পুলিশে চাকরি, বদলি বাণিজ্য করে টাকা কামিয়েছেন দু’হাতে। এমনকি আছাদুজ্জামান মিয়া তাকে ভোট কারচুপির মাধ্যমে স্থানীয় আলফাডাঙ্গা উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার বানিয়েছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে অনিয়ম ও দুর্নীতির দায়ে কলম মেম্বারকে বরখাস্ত হতে হয়েছিল।
জানা গেছে, সাবেক ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়ার ভাগনে হওয়ার সুবাদে অনেক সম্পদ ও টাকার মালিক হয়েছেন এই কলম মেম্বার। গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার কেওয়া মৌজায় ইব্রাহিম শেখ কলমের নামে ১৬০ শতাংশ জমি রয়েছে। যার বাজারমূল্য কমপক্ষে পাঁচ কোটি টাকা। তবে এই জমির প্রকৃত মালিক সাবেক ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া। এছাড়া ‘সবুজ ছায়া’ নামে ইব্রাহীম শেখ একটি ঋণদান সংস্থার মালিক। যেখানে কমপক্ষে ১০ কোটি টাকার বিনিয়োগ আছে তার। এ প্রতিষ্ঠান থেকে চড়া সুদে ঋণ দেওয়া হয় মানুষকে। সাবেক ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়ার অবৈধ অর্থেই এই প্রতিষ্ঠানটি পরিচালিত হতো বলে অভিযোগ রয়েছে।
কলম মেম্বারকে রোববার দুপুরে ফরিদপুর শহরের আদালতপাড়া এলাকা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। দুপুরের পর তাকে আদালতে পাঠানো হয়। তার বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার আইনসহ একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানায় পুলিশ।
কোতোয়ালি থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ফাহিম ফয়সাল তরফদার বলেন, গত ২৫ সেপ্টেম্বর কোতোয়ালি থানায় হওয়া দ্রুত বিচার আইনের একটি মামলায় এজাহারভুক্ত আসামি কলম মেম্বার। এছাড়াও তিনি ঢাকার খিলগাঁওয়ে একটি মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। এসব বিষয়ে জানতে আলফাডাঙ্গা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আ. মান্নান মিয়ার বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। আলোচিত ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়াকে গত বছরের ১১ সেপ্টেম্বর র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) গ্রেফতার করে। এরপর থেকেই বিভিন্ন মামলায় তিনি কারারুদ্ধ আছেন। এছাড়া গত ১৮ ফেব্রুয়ারি আছাদুজ্জামান মিয়ার শ্যালক স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা হারিচুর রহমান সোহানকে গ্রেফতার করে কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট। আছাদুজ্জামান মিয়া ২০১৫ সালের ৭ জানুয়ারি থেকে ২০১৯ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ডিএমপি কমিশনারের দায়িত্বে ছিলেন।
