Logo
Logo
×

নগর-মহানগর

ফরিদপুরের মথুরাপুর দেউল

মুঘল আমলের অনন্য দৃষ্টিনন্দন স্থাপত্যশৈলী

Icon

জাহিদ রিপন, ফরিদপুর

প্রকাশ: ১২ এপ্রিল ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

মুঘল আমলে নির্মিত ‘মথুরাপুর দেউল’ এক অনন্য দৃষ্টিনন্দন ঐতিহাসিক স্থাপনা। প্রায় ৪০ শতক জমির উপর প্রায় ৮০ ফুট উচ্চতাবিশিষ্ট দেউলটি কারুকাজ খচিত। ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার গাজনা ইউনিয়নের মথুরাপুর গ্রামে ‘মথুরাপুর দেউল’ অবস্থিত। একে ‘মথুরাপুর মঠ’ও বলা হয়। মুঘল আমলের কীর্তি ঐতিহাসিক স্থাপনাটি দেখতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সৌন্দর্য প্রেমীরা প্রতিনিয়ত ছুটে আসেন।

আনুমানিক ষোড়শ শতাব্দীতে ‘মথুরাপুর দেউল’ নির্মাণ করা হয়েছে। তবে এটি সপ্তদশ শতকের স্থাপনা বলেও কারও কারও ধারণা। কিংবদন্তি-রাজা প্রতাপাদিত্যকে যুদ্ধে পরাজিত করে মুঘল সম্রাট আকবরের সেনাপতি রাজা মানসিংহ এটি নির্মাণ করেছিলেন। অন্য সূত্র মতে, ষোড়শ শতকে মুঘল সম্রাট আকবরের আমলে গভর্নর সংগ্রাম সিংহ বিজয়স্ত হিসাবে এটি নির্মাণ করেছিলেন। এর গায়ে টেরাকোটার অপূর্ব দৃষ্টিনন্দন ও শৈল্পিক কাজ শোভা পায়। ফরিদপুর শহর থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের মধুখালী-বালিয়াকান্দি আঞ্চলিক সড়কে ‘মথুরাপুর দেউলটি’ অবস্থিত। এর অবস্থান মধুখালী সদর থেকে দুই কিলোমিটার দূরে গাজনা সড়কের পশ্চিম দিকে। এর বিপরীত দিক দিয়ে বয়ে গেছে চন্দনা নদী।

ষোড়শ শতাব্দীর স্থাপনাগুলোর মধ্যে মথুরাপুর দেউল একমাত্র রেখা প্রকৃতির দেউল। বারো কোণবিশিষ্ট কাঠামোয় নির্মিত স্থাপনায় একমাত্র দক্ষিণমুখী প্রবেশপথ রয়েছে। স্থাপনাটির মূল গঠন উপাদান চুন-সুরকির মিশ্রণ। পুরো স্থাপনাজুড়ে টেরাকোটার জ্যামিত্যিক ও বাহারি চিত্রাঙ্কন রয়েছে। স্থাপত্যশৈলীর অনন্য নিদর্শন দেউলটির অবয়বজুড়ে রয়েছে শিলাখণ্ডের ছাপচিত্র, মাটির ফলকের তৈরি অসংখ্য ছোট ছোট মূর্তি। রামায়ণ ও কৃষ্ণলীলার মতো হিন্দু পৌরাণিক কাহিনীর চিত্র, গায়ক, নিত্যকলা, পবনপুত্র বীর হনুমান এবং যুদ্ধচিত্রও দেউলের গায়ে খচিত রয়েছে। প্রতিটি কোণের মাঝখানে কৃত্তিমুখা স্থাপন করা হয়েছে। তবে দেউলটির কোথায় কিছু লেখা নেই। বহুদিন ধরে দেউলটি অযত্নে পড়েছিল। বর্তমানে এটি প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের সুরক্ষিত সম্পদ। ২০১৪ সালে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক আবু হেনা মোর্শেদ জামানের উদ্যোগে জেলা প্রশাসন দেউলটির সংস্কার ও সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ হাতে নেয়। মার্চে শেষভাগে সংস্কার ও সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ শেষ হয়। এরপর আর দেউটির তেমন কোনো যত্ন নেওয়া হয়নি। এখানে অনেকে ঘুরতে এসে হতাশ হন। ভ্রমণ পিপাসুদের দাবি দেউলটিকে টিকিয়ে রাখার।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম