
প্রিন্ট: ০৭ এপ্রিল ২০২৫, ১১:৩৮ এএম

তাবারক উল্ল্যাহ কায়েস, কুমিল্লা
প্রকাশ: ৩০ মার্চ ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
আরও পড়ুন
কুমিল্লার লাকসামে আড়াই বছরেও শেষ হয়নি একটি সড়কের পাকাকরণের কাজ। এতে এ সড়কে নিত্য চলাচলকারী ২০টি গ্রামের স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, কৃষক, চাকরিজীবীসহ নানা শ্রেণি-পেশার কয়েক হাজার মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। ভুক্তভোগীরা জানান, ইউনিয়নের গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় প্রতিদিন ভোগান্তি পোহাচ্ছে এলাকার মানুষ। সড়কটির কাজ বন্ধ থাকায় এ এলাকার কৃষি পণ্যসহ খামারিদের উৎপাদিত মুরগি ও ডিম বাজারজাত করতে নানা সমস্যার কারণে লোকসান গুনতে হচ্ছে তাদের। স্থানীয়রা জানান, এ সড়কের পাশে রয়েছে কমিউনিটি ক্লিনিক, প্রাথমিক স্কুল, এতিমখানা, মসজিদ, মাদ্রাসা। দীর্ঘদিন ধরে সড়কটির দুরবস্থার কারণে এসব প্রতিষ্ঠানগুলোতে আসা-যাওয়া করতে সীমাহীন কষ্ট পোহাতে হচ্ছে।
জানা যায়, ২০২২ সালের ২৩ নভেম্বর স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর জেলার লাকসাম উপজেলার বাকই দক্ষিণ ইউনিয়নের মজলিসপুর হতে বরইগাঁও দেড় কিলোমিটার কাঁচা সড়ক পাকা করার জন্য কার্যাদেশ দেন। এরপর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ৩ থেকে ৪ ফুট গভীর করে বক্স কেটে কাজ শুরু করেছিল। কিন্তু ওই সড়কে শুধু বালি ফেলে কাজ বন্ধ করে দেন সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার। বালি ফেলে রাখার কারণে গত আড়াই বছর ধরে ওই এলাকার বরইগাঁও, কোটাইসা, দেবীপুর, কোয়ায়, নৈড়পাড়, নোয়াপাড়া, বিরামপুর, হরিশ্চর, মধুচর, দুপচর, পেরুল, মজলিসপুর, বাকই, কেমতলী গ্রামের মানুষ যানবাহনে চলাচল দূরের কথা হেঁটেও চলাচল করতে পারেন না। ফলে এসব গ্রামের কেউ অসুস্থ হলে অ্যাম্বুলেন্স পর্যন্ত আসতে চায় না। গেল বন্যা ও বর্ষাকালে এ সড়কে নৌকা দিয়ে চলাচল করতে হয়েছে। তবে পানি কমে গেলে কাদার কারণে আর চলাচল করতে পারেন না।
লাকসাম এলজিইডি অফিস সূত্রে জানা যায়, গ্রামীণ উন্নয়নে একটি প্যাকেজে ৪টি সড়ক করার জন্য প্রায় ৪ কোটি ৭৫ লাখ টাকা বরাদ্দে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করে। কিন্তু গত আড়াই বছরে সড়কগুলোতে কোনোটিতে ৫ শতাংশ, কোনোটিতে ১৫ শতাংশ কাজ হয়েছে।
এলাকার রফিক সর্দার বলেন, এটি এই এলাকার একমাত্র চলাচলের রাস্তা। আমরা অফিসে গিয়ে তাগাদা দিলে ঠিকাদারের লোকজন এসে টেপ ফিতা দিয়ে মেপে আবার চলে যান। এভাবে চলছে গত আড়াই বছর। ঢাকায় বসবাসকারী মজলিসপুর গ্রামের সমাজসেবক বদরুল হাসান মজুমদার সুমন বলেন, আমরা যারা এলাকার বাইরে থাকি আগে সপ্তাহে একবার হলেও এলাকায় এসে মানুষের খোঁজখবর নিতে পারতাম। কিন্তু এ সড়কের কারণে গত আড়াই বছর এলাকায় আসতে পারি না। ওই গ্রামের বাসিন্দা প্রবাসী শাহ আলম মজুমদার বলেন, এ সড়কটির কারণে দীর্ঘদিন প্রবাস থেকে এসে বাড়িতে গাড়ি নিয়ে আসতে পারি না।
লাকসাম উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রকৌশলী মো. সাদেকুর জাহান দিনার বলেন, নানা জটিলতায় সড়কটির কাজ শেষ করা যায়নি। তবে ঠিকাদারকে বলেছি দ্রুত কাজটি সম্পন্ন করতে। কুমিল্লা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের সিনিয়র সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আশরাফ জামিল বলেন, এ সড়কটিসহ জেলার অন্যান্য উপজেলায় যে কাজ বন্ধ রয়েছে সেগুলো দ্রুত শেষ করতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্দেশ দিয়েছি। না হলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।