
প্রিন্ট: ০১ এপ্রিল ২০২৫, ১২:৫৫ এএম

মো. শাহীন সরদার, বাকৃবি
প্রকাশ: ২৮ মার্চ ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
আরও পড়ুন
বাজারে প্রক্রিয়াজাত মুরগির মাংসে মিলেছে টাইফয়েড (স্যালমোনেলা) ও ডায়রিয়ার (ইকোলাই) জীবাণু। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে। এছাড়াও দোকানে মুরগি অসুস্থ হলে বেশির ভাগ মালিক (৯৬.১৫ শতাংশ) মুরগি আলাদা রাখা বা মেরে ফেলার পরিবর্তে বিক্রি করে দেন। গবেষণা প্রতিবেদনটি ওয়ার্ল্ডস পোলট্রি সায়েন্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ শাখা আয়োজিত ১৩তম আন্তর্জাতিক পোলট্রি শো-২০২৫ এ উপস্থাপিত হয়েছে। গবেষণায় ময়মনসিংহ সদর ও এর আশপাশের পোলট্রি বাজারগুলোর অবস্থা পর্যবেক্ষণ, বায়োসিকিউরিটি, পোলট্রি জবাই সম্পর্কে বিক্রেতাদের মনোভাব যাচাই এবং বিক্রি করা মাংসের গুণগতমান যাচাই করা হয়। এতে নেতৃত্ব দেন বাকৃবির পোলট্রি বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. ইলিয়াস হোসেন। গবেষণায় ময়মনসিংহ সদরের চরপাড়া বাজার, মিন্টু কলেজ বাজার, মেছুয়া বাজার, নতুন বাজার, সানকিপাড়া বাজার, কেওয়াটখালী বাজার, শেষমোড় বাজার, সুতিয়াখালী বাজার, ভাবখালী বাজার, কে আর মার্কেট, শম্ভুগঞ্জ বাজার ও গাছতলাসহ ১২টি স্থানীয় বাজারের পোলট্রি দোকানের তথ্য নেওয়া হয়। একটি সুনির্দিষ্ট প্রশ্নাবলির তালিকা অনুসরণ করে এই ১২টি বাজারের ২৪টি পোলট্রি দোকানের কর্মীদের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়। এসব বাজারে সাধারণভাবে জবাই করা এবং প্রসেসিং ইউনিটের পদ্ধতি অনুসরণ করে পোলট্রি ফার্মে স্বাস্থ্যসম্মতভাবে জবাই করা মোট ২৬টি মাংসের (উরু ও বুকের মাংস) নমুনা এবং দুটি পানির নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এরপর নমুনাগুলো বাকৃবির মাইক্রোবায়োলজি অ্যান্ড হাইজিন ল্যাবে পরীক্ষা করা হয়। দেখা গেছে, স্থানীয় বাজারের মাংসে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে ক্ষতিকর ইকোলাই ও স্যালমোনেলার উপস্থিতি রয়েছে। যেখানে স্বাভাবিক অবস্থায় মাংসে এগুলো থাকার কথা নয়। স্থানীয় বাজারের মুরগির দোকানগুলোর অবস্থা সম্পর্কে ড. মো. ইলিয়াস হোসেন বলেন, গবেষণার তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ৮৪.৬২ শতাংশ দোকানে মুরগি রাখার পর্যাপ্ত জায়গা নেই, ৯২ শতাংশ দোকানে ময়লা পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা নেই এবং ৪৬.১৫ শতাংশ দোকানে পর্যাপ্ত আলো ছিল না। এছাড়াও, ৩০.৭৭ শতাংশ দোকানে মাংস কাটার জায়গা অস্বাস্থ্যকর ছিল এবং পরিকল্পিত বর্জ্য নিষ্কাশন ব্যবস্থা ছিল না। এরকম পরিস্থিতি ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি এবং দূষণের জন্য সহায়ক পরিবেশ তৈরি করে। স্বাস্থ্যকর মাংসপ্রাপ্তির বিষয়ে ড. ইলিয়াস বলেন, স্থানীয় বাজারগুলোর অধিকাংশ পোলট্রি দোকানে অপর্যাপ্ত জায়গায় পাখিগুলোকে রাখা হয় এবং অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে মুরগি জবাই করা হয়। যা অত্যন্ত স্বাস্থ্যঝুঁকি সম্পন্ন। এর সমাধানে স্থানীয় বাজারগুলোতে ক্ষুদ্র প্রসেসিং ইউনিট স্থাপনের মাধ্যমে ক্রেতাদের নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত মাংস পৌঁছে দেওয়া সম্ভব।