Logo
Logo
×

নগর-মহানগর

রমেক হাসপাতালের ডেন্টাল ইউনিট

আধুনিক চিকিৎসা সরঞ্জাম নষ্ট হচ্ছে অব্যবস্থাপনায়

২০১৪ সালে কেনা ২০ লাখ টাকার ওপিজি রেডিওগ্রাফার পড়ে আছে * ৫টি এক্সরে মেশিন বাক্সবন্দি অবস্থায় আছে

Icon

রংপুর ব্যুরো

প্রকাশ: ০৩ মার্চ ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

উত্তরের আট জেলার রোগীদের উন্নত চিকিৎসার একমাত্র ভরসার স্থান রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতাল। এক হাজার শয্যার এ চিকিৎসাসেবা কেন্দ্রে প্রতিদিন গড়ে সাড়ে ৪ হাজার রোগীর চিকিৎসা দেওয়া হয়।

হাসপাতালের ডেন্টাল চেয়ারের মূল্য ৫ থেকে ৬ লাখ টাকা হলেও এর হিসাবে দেখানো হয়েছে ৫৬ লাখ টাকা। এখন সেই ডেন্টাল ইউনিটের সব অত্যাধুনিক চিকিৎসা সরঞ্জামও অব্যবস্থাপনায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ফলে চিকিৎসা কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

রোগীদের জন্য সরকারিভাবে আধুনিক চিকিৎসা সরঞ্জাম কেনা হলেও তা কাজে আসছে না শুধু লোকবল সংকটের কারণে-বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দপ্তরে বারবার জানানোর পরেও কোনো সুরাহা হয়নি।

হাসপাতালের বহির্বিভাগ থেকে জানা যায়, প্রতিদিন ১১০ থেকে ১৩০ জন রোগী বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসেন। রুট ক্যানেল, দাঁত তোলা ও দাঁত ফিলিং করতে প্রতিদিন ৫০ থেকে ৬০ জন রোগী আসছেন। ২০১৩ সালে ডেন্টাল সিবিসিটি মেশিন অর্থাৎ সিটি স্ক্যান মেশিন হাসপাতালে বসানো হয়। তারপর থেকে ওই মেশিন দিয়ে কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা সম্ভব হয়নি। চিকিৎসকরা বলছেন, বাংলাদেশে মাত্র দুটি মেশিন আছে। তার মধ্যে একটি ঢামেকের ডেন্টাল ইউনিটে এবং আরেকটি রমেকের ডেন্টাল ইউনিটে। এমনকি বেসরকারিভাবে চিকিৎসা দেওয়ার মতো কোথাও নেই এই মেশিন। যার বাজারমূল্য প্রায় এক কোটি টাকা।

এ ছাড়া ২০ লাখ টাকার ওপিজি (অর্থোপেন্টামোগ্রাম) রেডিওগ্রাফার মেশিনটি এসেছে ২০১৪ সালে। এখন পর্যন্ত রোগীর পরীক্ষায় এটি কোনো কাজে আসেনি। অন্যদিকে ডেন্টাল এক্স-রে (পেরিএপিক্যাল এক্স-রে) মেশিন পাঁচটি বসানো হলেও অপারেটর না থাকায় এখনো বাক্সবন্দি হয়েই পড়ে রয়েছে।

ডিজিটাল এক্স-রে সেন্টার (আরভিজি) পাঁচটি মেশিন বসানো হলেও কাজে আসছে না একটিও। ডেন্টাল ইউনিট কর্তৃপক্ষ মেশিনগুলো সচল রাখার জন্য হাসপাতালের রেডিওলোজি বিভাগকে অপারেট করার জন্য আবেদন করেছে। তাতেও সাড়া মেলেনি।

ওরাল ও মেক্সিলোফেসিয়াল সার্জারি আন্তঃবিভাগে ১১টি শয্যা রয়েছে। সেখানে ক্যানসার রোগীর অপারেশন করানো হয়, যা করাতে গেলে দুই থেকে চার লাখ টাকা প্রয়োজন। চিকিৎসকরা বলছেন, উত্তর বঙ্গের বেশির ভাগ মানুষ পান-জর্দা খেতে অভ্যস্ত। তাই প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে ক্যানসার রোগীই বেশি আসেন। কিন্তু এই রোগের অপারেশনের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি নেই। আর যে সব আছে তাও আবার চালু হচ্ছে না লোকবল সংকটের কারণে।

ডেন্টাল ইউনিট সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টার মধ্যে দাঁতের সব ধরনের সমস্যা নিয়ে রোগীরা হাসপাতালে আসেন। কিন্তু প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের ঘাটতিসহ জনবল সংকটে রোগীরা যথাযথ চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে শুরুতে পাঁচটি চেয়ার থাকলেও এখন সচল রয়েছে মাত্র একটি। অথচ এই চেয়ারের মূল্য ৫ থেকে ৬ লাখ টাকা হলেও হিসাবে দেখানো হয়েছে ৫৬ লাখ টাকা, যা নিয়ে দুদকে মামলা চলমান রয়েছে।

রমেক ডেন্টাল ইউনিটের সহকারী অধ্যাপক ও ইউনিট প্রধান ডা. ফেরদৌসী বেগম বলেন, ‘মেশিনগুলো চালু করতে আগের পরিচালককে চিঠি দিয়েছি। নতুন পরিচালক আসার পরে আবারও মৌখিকভাবে জানিয়েছি, যাতে করে যন্ত্রগুলো চালু করে রোগীদের কষ্ট লাঘব করা যায়।’

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আশিকুর রহমান বলেন, ‘হাসপাতালের যেখানে যাই সেখানেই সমস্যা। আসলে কোনটা বেশি দরকার, সেটা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজ করা হবে। ঢাকায় কথা বলে ডেন্টাল ইউনিটের সমস্যাগুলো সমাধান করা হবে।’

Jamuna Electronics

img img
Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম