Logo
Logo
×

নগর-মহানগর

ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন: ফরিদপুর-১

বিএনপিতে এগিয়ে নাসির, মাঠে জামায়াতের ইলিয়াস মোল্লা

জাহিদ রিপন

জাহিদ রিপন

প্রকাশ: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন-তারিখ এখনো ঠিক না হলেও ফরিদপুরের চারটি আসনে বিভিন্ন দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা প্রচার-প্রচারণা চালাতে শুরু করেছেন। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বিএনপি, জামায়াতসহ বিভিন্ন দলের সম্ভাব্য প্রার্থী এলাকায় তাদের উপস্থিতির জানান দিচ্ছেন। রাজনৈতিক নানা কর্মসূচিতে যোগদানের পাশাপাশি এলাকায় শীতবস্ত্র বিতরণ, ওয়াজ-মাহফিল, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অতিথি হয়ে কৌশলে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন। এছাড়া যারা জুলাই আন্দোলনে শহিদ কিংবা আহত হয়েছেন তাদের বাড়িতে গিয়ে খোঁজখবর নেওয়া থেকে শুরু করে পরিবারের মাঝে অনুদান প্রদান করছেন। নানা সামাজিক কর্মকাণ্ডে নিজ নিজ নির্বাচনি এলাকায় বেশিরভাগ সময় ব্যয় করছেন। অনেক স্থানে পোস্টার-ব্যানার সাঁটিয়ে চাইছেন দোয়াও। অবশ্য আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের কোনো সাংগঠনিক তৎপরতা ফরিদপুরের কোনো নির্বাচনি এলাকায় নেই বলে জানিয়েছে স্থানীয় সূত্রগুলো।

ফরিদপুর-১ আসনটি বোয়ালমারী, মধুখালী ও আলফাডাঙ্গা উপজেলা নিয়ে গঠিত। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তথ্য অনুযায়ী এই আসনে ভোটার ৪ লাখ ৭৭ হাজার ৯৮১ জন। আসনটিতে আগাম নির্বাচনি তৎপরতা শুরু করেছেন জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি, সাবেক এমপি খন্দকার নাসিরুল ইসলাম। পাশাপাশি জামায়াতের নেতাকর্মীরা মসজিদ-মাদ্রাসা ও দোয়া মাহফিলে উপস্থিত হয়ে ইসলামী শাসন ব্যবস্থার নানা দিক তুলে ধরে বক্তব্য দিচ্ছেন। সমর্থন চাইছেন এলাকাবাসীর। এ আসনে জামায়াতের সবুজ সংকেত পেয়ে এলাকায় কাজ করছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক (অব.) ড. মো. ইলিয়াস মোল্লা। এছাড়া এই আসনে সাবেক বিএনপি নেতা, সাবেক এমপি, বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহ মো. আবু জাফর নতুন দল বিএনএমে যোগ দিলেও নির্বাচনি এলাকায় সরব হতে দেখা যায়নি।

বিএনপির অন্যতম মনোনয়নপ্রত্যাশী জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি, সাবেক এমপি খন্দকার নাসিরুল ইসলাম। তিনি বোয়ালমারী উপজেলার কাদিরদি এলাকার বাসিন্দা। দলীয় নেতাকর্মীরা ফরিদপুর-১ আসনে খন্দকার নাসিরকে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী হিসাবে তুলে ধরে গণসংযোগ করছেন। এলাকায় তিনি ব্যাপক সাংগঠনিক কার্যক্রম শুরু করেছেন। বিভিন্ন সভা, সমাবেশ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ ছোট-বড় অনুষ্ঠানে অতিথি হয়ে নিজের উপস্থিতি জানান দিচ্ছেন। আগামী দিনে জনগণের সহযোগিতা চাইছেন। এছাড়া আওয়ামী লীগের গত ১৫ বছরের শাসনামলে বিএনপির যেসব নেতাকর্মী হামলা-মামলার শিকার হয়েছিলেন তাদের সহযোগিতা করে দলকে সংগঠিত করছেন। এলাকায় ঘুরে সাধারণ মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন।

বোয়ালমারী উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম বলেন, কৃষক দলের ‘সিনিয়র ম্যান’ হিসাবে নাসিরুল ইসলাম এ আসনের তিন উপজেলাতে বেশ জনপ্রিয়। তার সঙ্গে থেকে আমরা দলের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। আশা করি তিনি আগামী নির্বাচনে নমিনেশন পাবেন এবং বিপুল ভোটে জয়লাভ করবেন। আগামী নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া প্রসঙ্গে খন্দকার নাসিরুল ইসলাম বিদেশ সফরের আগে বলেন, এলাকার মানুষের জন্য দলের হয়ে কাজ করে যাচ্ছি। মানুষের কল্যাণে তাদের পাশে থেকেছি। এছাড়া বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৩১ দফা নিয়ে মানুষের কাছে যাচ্ছি। অতীতেও এলাকার মানুষের সুখে-দুঃখে কাছে থেকেছি। তাই তারা আগামী নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী হিসাবে আমাকে দেখতে চান।

জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী হিসাবে মাঠে কাজ করছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. মো. ইলিয়াস মোল্লা। তিনি বোয়ালমারী উপজেলার কামালদিয়া কালপোহা গ্রামের বাসিন্দা। চাকরি থেকে অবসরের পর তিনি এলাকার মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়িয়েছেন। এছাড়া দলের নেতাকর্মীরা বেশ তৎপর। তারা মসজিদ-মাদ্রাসায় গিয়ে ইসলামি শাসন ব্যবস্থার নানা সুফলের কথা তুলে ধরছেন। জামায়াতের আমির ডা. মো. শফিকুর রহমান ১৬ জানুয়ারি ফরিদপুর-১ আসনের অন্তর্গত মধুখালী আখচাষি কল্যাণ ভবনের সামনে উপজেলা ও পৌর জামায়াতের আয়োজনে এক পথসভা করেন। সেখানে তিনি বলেন, দেশের শান্তি প্রতিষ্ঠায় জামায়াতে ইসলামীর কোনো বিকল্প নেই। আমরা যেন সবাই মিলেমিশে স্বপ্নের নতুন বাংলাদেশ গড়তে পারি, আল্লাহ আমাদের তৌফিক দান করুন।

বোয়ালমারী উপজেলা জামায়াতের সাধারণ সম্পাদক কামালউদ্দিন বলেন, এলাকায় আমরা ড. ইলিয়াস হোসেনের হয়ে কাজ করছি। দলীয় হাইকমান্ড থেকে গ্রিন সিগন্যাল পেয়ে তিনি এলাকার মানুষের সঙ্গে আগের চেয়ে বেশি সময় দিচ্ছেন।

আগামী নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া প্রসঙ্গে ড. মো. ইলিয়াস মোল্লা যুগান্তরকে বলেন, জামায়াত ক্ষমতায় গেলে আল্লাহর আইন অনুযায়ী মদিনা সনদে রাষ্ট্র গঠনে গুরুত্ব দেওয়া হবে। এছাড়া ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টানসহ স্বাধীন দেশের ১৮ কোটি মানুষের নাগরিক অধিকার সমানভাবে নিশ্চিত করা হবে। অতীতে যারা ভুল করেছে তারা আল্লাহর কাছে মাফ চেয়ে ভুল শুধরাতে পারেন। মা-বোনেরা যাতে নির্বিঘ্নে চলাফেরা করতে পারেন সেই ব্যবস্থা করা হবে।

তবে ফরিদপুর-১ আসনে জাতীয় পার্টিসহ অন্য কোনো প্রার্থীকে তৎপরতা চালাতে দেখেননি স্থানীয়রা।

ফরিদপুর

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম