দিনভর পথে পথে ভোগান্তি
বরিশালের ১১ রুটে ২৪ ঘণ্টা পর বাস ধর্মঘট প্রত্যাহার
বরিশাল ব্যুরো
প্রকাশ: ৩০ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
বিএম কলেজের এক ছাত্রীর কাছ থেকে হাফ ভাড়া না নেওয়ার জেরে মারধর ও ভাঙচুরের ঘটনায় বরিশাল বিভাগের ১১ রুটে ডাকা বাস ধর্মঘট ২৪ ঘণ্টা পর প্রত্যাহার করেছেন শ্রমিকরা। বুধবার সন্ধ্যা ৭টায় মালিক, শ্রমিক ও জেলা প্রশাসক দেলোয়ার হোসেনসহ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে শ্রমিকদের দাবি মেনে নিলে ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বরিশাল সড়ক পরিবহণ মালিক গ্রুপের সভাপতি জিয়া উদ্দিন সিকদার। এদিকে এর আগে বাস চলাচল বন্ধ থাকায় বুধবার দিনভর পথে পথে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহান হাজার হাজার যাত্রী। কুয়াকাটায় আটকা পড়েন পাঁচ শতাধিক পর্যটক। বাস বন্ধ থাকার সুযোগে ইজিবাইক, অটো, মাহেন্দ্র ও মোটরসাইকেল চালকরা দ্বিগুণ ভাড়া আদায় করেন যাত্রীদের কাছ থেকে।
সরেজমিন দেখা গেছে, ধর্মঘটের কারণে টার্মিনালে সারি সারি দাঁড়িয়ে আছে শতশত বাস। এ কারণে বরিশালের রূপাতলী বাস টার্মিনাল থেকে বরিশাল-খুলনা রুটে বাস চলাচল বন্ধ ছিল। এছাড়া অভ্যন্তরীণ রুট পিরোজপুর, মঠবাড়িয়া, পাথরঘাটা, ভান্ডারিয়া, ঝালকাঠি, নলছিটি, বরগুনা, বাউফল, পটুয়াখালী, কুয়াকাটায় বাস চলাচল করেনি। ফলে এই ১১ রুটের যাত্রীরা চরম দুর্ভোগকে সঙ্গী করে থ্রিহুইলার বা মোটরসাইকেলে গন্তব্যে রওয়ানা দিতে দেখা গেছে। বরিশাল সড়ক পরিবহণ মালিক গ্রুপের সভাপতি জিয়া উদ্দিন বলেন, ঝালকাঠি মালিক সমিতির একটি বাসে বিএম কলেজের এক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে হাফ ভাড়া না নেওয়ায় টার্মিনালে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে। শিক্ষার্থীরা মালিক শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে কোনো ধরনের আলাপ না করেই পাঁচটি বাস ও শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যালয় ভাঙচুর করেছে। আহত করেছে সাত শ্রমিককে। তাই মালিক-শ্রমিকদের জানমাল রক্ষার নিশ্চয়তার দাবিতে ধর্মঘট ডেকেছিল শ্রমিকরা। বৈঠকে সেই দাবি মেনে নেওয়ায় আমরা ধর্মঘট প্রত্যাহার করেছি।
বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মিজানুর রহমান বলেন, ত্রিপাক্ষিক মিটিংয়ে ফলপ্রসূ আলোচনার মধ্যদিয়ে ধর্মঘট প্রত্যাহার করেছেন শ্রমিকরা। বর্তমানে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
মঙ্গলবার বিকালে বিএম কলেজের এক ছাত্রীর কাছ থেকে হাফ ভাড়া আদায় নিয়ে ঝালকাঠি রুটের একটি বাসের হেলপার খারাপ আচরণ করেছেন বলে অভিযোগ ওঠে। এরপর শিক্ষার্থীদের ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল মীমাংসার জন্য টার্মিনালে গেলে তিনজনকে শ্রমিকরা মারধর করেছে বলে অভিযোগ ওঠে। এরপর শিক্ষার্থী ও বাস শ্রমিকদের মধ্যে দফায় দফায় ধাওয়া-পালটাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় পাঁচটি বাস ও শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যালয় ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে। পরে মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বাস ধর্মঘটের ডাক দেন রূপাতলী বাস টার্মিনালের শ্রমিকরা। তাদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে মালিকরাও দাবি আদায়ে জোট বাধেন। এতে বরিশাল বিভাগের ছয় জেলার ১১টি রুটে বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ফলে টানা ২৪ ঘণ্টা চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে যাত্রীদের।