Logo
Logo
×

নগর-মহানগর

জুলাইয়ে গুলিবিদ্ধ বাঘার রনি

‘মনে হয়েছিল বাঁচব না, কালেমা পড়া শুরু করি’

Icon

আমানুল হক আমান, বাঘা (রাজশাহী)

প্রকাশ: ৩০ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

‘ছাত্রদের দেখে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী রাস্তা বন্ধ করে দিয়ে গুলি ছুড়তে থাকে। উপরে চক্কর দেওয়া হেলিকপ্টার থেকেও নির্বিচারে গুলি ছোড়া হয়। গুলিতে ৪ জন ঘটনাস্থলেই নিহত হন। একটি গুলি আমার বাঁ-পায়ের ঊরু ভেদ করে বেরিয়ে যায়। প্রচুর রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। আশপাশে তেমন কেউ ছিল না। তখন মনে হয়েছিল আমি আর বাঁচব না। তখন কালেমা পড়া শুরু করি।’ সম্প্রতি যুগান্তরকে কথাগুলো বলছিলেন রাজশাহীর বাঘা উপজেলার চন্ডিপুর গ্রামের এলাহী বক্সের ছেলে রনি আহমেদ (৩০)। যিনি জুলাই আন্দোলনে রাজধানীর বনশ্রীতে গুলিবিদ্ধ হন। এখন কাজে যোগ দিলেও পুরোপুরি সেরে উঠেননি রনি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ভয়াবহ স্মৃতি এখনো তাড়িয়ে বেড়ায় তাকে।

ঢাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন রনি। থাকতেন রামপুরার বনশ্রী এলাকার ভাড়া বাসায়। তার ভাষ্যমতে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গিয়ে ঢাকার বনশ্রীতে ধাওয়া-পালটাধাওয়ার মধ্যে পড়েন তিনি। ২০২৪ সালের ১৭ জুলাই দুপুরে বনশ্রীর বাসায় ফেরার সময় দেখেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গুলি করতে করতে সামনের দিকে যাচ্ছে। এ সময় নিজেকে স্থির রাখতে না পেরে ছাত্রদের সঙ্গে আন্দোলনে যুক্ত হন। সেখানেই গুলিবিদ্ধ হন। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় বনশ্রী এলাকার একটি বাসায় আশ্রয় নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা নেন। পরে রাজধানীর অ্যাডভান্স হাসপাতালে নেওয়া হয় তাকে। রনি বলেন, হাসপাতালে গিয়ে দেখি বিপুলসংখ্যক গুলিবিদ্ধ মানুষ। শয্যা নেই, ফ্লোরে চিকিৎসা চলছে। বাসায় চলে আসি। বাসা থেকে লুকিয়ে হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছিলাম। ২৬ জুলাই চিকিৎসকরা জানান, এখানে আসার দরকার নেই। আসলে তুলে নিয়ে যাবে। তখন ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়িতে চলে আসি। ভয়ে পাশের উপজেলায় বোনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে চিকিৎসা নিই। সেখান থেকে জানতে পারি পুলিশ খোঁজখবর নিচ্ছে ঢাকা থেকে কারা এলাকায় ফিরেছে। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর নিজ বাড়িতে ফিরে আসি। দীর্ঘদিন বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে চাকরিতে যোগ দিয়েছি। রনির মা নিলুফা বেগম বলেন, গুলিবিদ্ধ পায়ে আগের মতো শক্তি পাচ্ছে না আমার ছেলে। যেভাবে গুলি করেছে তাতে ওর ফিরে আসার কথা ছিল না। আল্লাহ ওকে বাঁচিয়েছেন। বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আশাদুজ্জামান বলেন, বর্তমানে রনি সুস্থ রয়েছে। তবে সেরে উঠতে সময় লাগবে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম