কারাগারে বসে ঝাড়ফুঁক দিচ্ছেন দরবেশ: রিজভী
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ৩০ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
বিএনপির সিনিয়র যুগ্মমহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, গত দেড় দশকে শেখ হাসিনা দেশে গোষ্ঠীতন্ত্র কায়েম করেছিলেন। এখন তিনি পাশের দেশ থেকে কর্মসূচির ঘোষণা দিচ্ছেন। আর যে কজন ধরা পড়ে জেলখানায় আছেন, তাদের মধ্যে একজন দরবেশ (সালমান এফ রহমান) কারাগার থেকে ঝাড়ফুঁক দিচ্ছেন।
বুধবার রাজধানীর রমনায় ইনস্টিটিউশন অব ইঞ্জিনিয়ার্সে এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৮৯তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আলোচনা সভার আয়োজন করে অ্যাসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (অ্যাব)। রিজভী বলেন, ‘তিনি (সালমান এফ রহমান) মাঝেমধ্যে জেলখানা থেকে ঝাড়ফুঁক পাঠাচ্ছেন যে, এতগুলো শ্রমিক নেমে গেলেই তো হয়। আমি জানি না, তাদের বিচার প্রক্রিয়া কীভাবে চলছে? কীভাবে তারা সেখান থেকে বেরিয়ে এসব কথা বলছেন। নিশ্চয়ই তাদের নানাভাবে সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।’
আওয়ামী লীগের আমলে কারাগারে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমাদেরকে কারাগারে নিয়ে মাদকসেবী ও ফাঁসির আসামিদের সঙ্গে রাখা হতো। আমাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে নির্যাতন-নিপীড়ন করা হয়েছে।’
রিজভী বলেন, ‘সরকার সংস্কারের কথা বলছে ভালো। কিন্তু সংস্কারের নামে আপনারা সময়ক্ষেপণ করবেন না। এমন সংস্কার আনুন যাতে ফ্যাসিবাদ পুনরায় প্রতিষ্ঠিত হতে না পারে। এমন সংস্কার নিয়ে আসুন যাতে মানুষ ন্যায়বিচার পায়।’
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘জিয়াউর রহমান বহুমুখী প্রতিষ্ঠান। স্বল্পপরিসরে তাকে নিয়ে আলোচনা করা কঠিন। তার বিভিন্ন কর্মকাণ্ড বিরাট বিস্তৃত। তিনি একজন সফল রাষ্ট্রনায়ক। যথা সময়ে দেশের মানুষের প্রয়োজন বুঝতে পেরেছিলেন। তার গুণাবলি ছিল অপরিসীম।
মুক্তিযুদ্ধে জিয়াউর রহমানের অবদান প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘তৎকালীন রাজনৈতিক নেতা ছিলেন দ্বিধান্বিত। সেসময় তিনি কী করবেন, কী করবেন না-এমন সময় শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণা শুনে দেশের মানুষ উদ্বেলিত হয়ে ওঠে। কিন্তু পলাতক প্রধানমন্ত্রীর স্বামী ড. ওয়াজেদ তার বইয়ে লিখে গেছেন, জিয়াউর রহমান ও তার অবদান মুছে ফেলতে সব চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র করেছিলেন শেখ হাসিনা।’ ইসলামী ছাত্রশিবিরের প্রকাশনায় মুক্তিযুদ্ধকে কটাক্ষ করে একটি লেখার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘ছাত্রশিবির তাদের লেখার মধ্যে মুক্তিযুদ্ধকে বিতর্কিত করেছে। এটি কেন? আমাদের শ্রেষ্ঠ অর্জন মুক্তিযুদ্ধ। সেটাকে ছোট করে, কটাক্ষ করে রাজনীতি কখনোই সফল হবে না।’
অ্যাবের সভাপতি ও আইইবির প্রেসিডেন্ট প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজুর সভাপতিত্বে ও যুগ্ম মহাসচিব প্রকৌশলী একেএম আসাদুজ্জামান চুন্নুর সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য দেন অ্যাবের মহাসচিব প্রকৌশলী আলমগীর হাছিন আহমেদ, প্রকৌশলী আব্দুল হালিম মিয়া, সহসভাপতি প্রকৌশলী মো. মোস্তাফা-ই জামান সেলিম (সিআইপি), আইইবি ঢাকা সেন্টারের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী হেলাল উদ্দিন তালুকদার, সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মাহবুব আলম প্রমুখ।
এদিন ছাত্র-জনতার গণ-আন্দোলনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে শহিদ শাফিকউদ্দিন আহমেদ আহনাফের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর একটি প্রতিনিধিদল। এ সময় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে পরিবারটিতে সহমর্মিতার বার্তা পৌঁছে দেন রুহুল কবির রিজভী। এ সময় আমরা বিএনপি পরিবারের আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমন, সদস্যসচিব কৃষিবিদ মোকছেদুল মোমিন মিথুন, সদস্য মাসুদ রানা লিটন, মুস্তাকিম বিল্লাহ, ফরহাদ আলী সজীব, রুবেল আমিন, শাহাদত হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।