Logo
Logo
×

নগর-মহানগর

চীনের সঙ্গে ঐতিহ্যগত সম্পর্ক রয়েছে: ডা. শফিকুর রহমান

Icon

কালিয়াকৈর (গাজীপুর) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৭ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

চীনের সঙ্গে ঐতিহ্যগত সম্পর্ক রয়েছে: ডা. শফিকুর রহমান

গাজীপুরের কালিয়াকৈরে রোববার শীতবস্ত্র ও খাদ্যসামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান -যুগান্তর

জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, চীনের সঙ্গে আমাদের ঐতিহ্যগত সম্পর্ক রয়েছে। দেশটি থেকে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা এখানে এসেছেন। তারা এখানকার সমাজ পরিবর্তনের ক্ষেত্রে অবদান রেখেছেন। আবার এই অঞ্চল থেকেও জ্ঞানী-গুণী ব্যক্তিরা তাদের আরও জ্ঞানের পরিধি বৃদ্ধি করার জন্য চীন সফর করেছেন। সেখান থেকে বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ভাষা এসব বিষয়ে তারা উৎকর্ষ সাধন করে এসেছেন।

তিনি রোববার সকালে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার সফিপুর ওয়ামীর স্থায়ী ক্যাম্পে শীতবস্ত্র ও খাদ্যসামগ্রী বিতরণ উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন। লং লিভ ফ্রেন্ডশিপ এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন, গাজীপুর জেলা জামায়াতের আমির ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম, জেলা সাধারণ সম্পাদক শফিউদ্দিন আহম্মেদ, কালিয়াকৈর উপজেলা জামায়াতের আমির বেলাল উদ্দিন সরকার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে এক হাজার দুস্থ ব্যক্তির মধ্যে শীতবস্ত্রের পাশাপাশি চাল, ডাল, তেল, চিনিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী বিতরণ করা হয়।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে জামায়াত আমির বলেন, দুনিয়ায় ভাষার দিক থেকে যেসব জাতি খুবই কাছাকাছি তাদের মধ্যে অন্যতম চীন। তাদের মনের আদান-প্রদান খুবই চমৎকার। আমরা চাই চীনের সঙ্গে আমাদের ভাষাগত সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হোক। তাহলে আমাদের হৃদয়ের বন্ধন আরও সুদৃঢ় হবে। চায়নার সরকার এরই মধ্যে কল্যাণমূলক কাজের পদক্ষেপ নিয়েছে। জামায়াত আমির বলেন, চীনের মান্যবর রাষ্ট্রদূতের মাধ্যমে আমরা আহ্বান জানাতে চাই, বিশাল একটি দেশ চীন, আপনারা বিভিন্ন পলিটিক্যাল পার্টিকে সেখানে সম্মানিত করছেন, দাওয়াত দিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন, তার পাশাপাশি সাংবাদিকমহল, বুদ্ধিজীবী, শিক্ষাবিদ যারা তাদেরও আপনারা এই সুযোগটা বেশি বেশি করে দেবেন। তাহলে সমাজ বিনির্মাণে তারা আরও বেশি অর্থকরী ভূমিকা রাখবেন। আমরা মিলেমিশে হাতে হাত ধরে পাশাপাশি থেকে প্রিয় বাংলাদেশকে সবাই মিলে ভালোবাসব।

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা লাভের পর থেকে চীন বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদান করে। ১৯৭৬ সাল থেকে বাংলাদেশের উন্নয়নে চীন গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। বাংলাদেশের যতগুলো বড় প্রকল্প রয়েছে। অধিকাংশে চীনের সহায়তা রয়েছে। বাংলাদেশের দীর্ঘতম সেতুতে চীনের আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা পার্টনারশিপ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। যা দক্ষিণবঙ্গের প্রায় সাড়ে ৫ কোটি মানুষের জীবনকে সহজ করে দিয়েছে। বাংলাদেশের সবচেয়ে যে বড় সম্মেলন কেন্দ্র রয়েছে চীন-বাংলাদেশ সম্মেলন কেন্দ্র। এটি মূলত চীন আমাদের উন্নয়ন সহযোগী হিসাবে বাস্তবায়ন করেছিল। কিন্তু পরে বন্ধুত্বের নিদর্শন হিসাবে পুরোটাই বাংলাদেশকে উপহার দিয়েছে। আমরা এজন্য বাংলাদেশের জনগণের পক্ষ থেকে চীন ও দেশটির প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংসহ জনগণকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।

সকালে চীনা রাষ্ট্রদূত অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত হলে ওয়ামী স্কুলের শিক্ষার্থীরা ফুল দিয়ে অভ্যর্থনা জানান। শীতবস্ত্র বিতরণের পাশাপাশি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে প্রতিটি পরিবারকে চাল, ডাল, তেল, চিনিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের একটি করে প্যাকেট দেওয়া হয়। অনুষ্ঠান শেষে রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন এতিম শিশু ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন।

এ সময় চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেন, চীন সরকারের পক্ষ থেকে গাজীপুরের মানুষের জন্য কিছু শীতের কম্বল ও খাদ্যসামগ্রী নিয়ে এসেছি। শীতকালীন তাপমাত্রা হ্রাস পাওয়ায় অনেকের জীবনযাত্রা দুরূহ হয়ে পড়েছে। এই কম্বল শীত নিবারণে সহায়ক হবে। তিনি আরও বলেন, জামায়াতের আমিরকে ধন্যবাদ জানাই, বাংলাদেশের মানুষকে সহায়তা করার সুযোগ করে দিয়েছেন। আমি এই ওয়ামী স্কুল পরিদর্শন করে খুশি হয়েছি। এই স্কুলে অনেক এতিম শিক্ষার্থীকে জামায়াতে ইসলামীর মাধ্যমে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এই এতিম শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছে। আমরা এই প্রতিষ্ঠানে চীনের পক্ষ থেকে সহায়তা দেব। আমরা চীন রাষ্ট্রে ভবিষ্যতে এতিম ও শিক্ষকদের আমন্ত্রণ জানাব, আমাদের জীবনযাত্রা দেখার জন্য। তিনি বলেন, গত বছর জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসার সরঞ্জাম সরবরাহের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। চীন ঢাকায় একটি আধুনিক হাসপাতাল নির্মাণ করবে। তিনি আরও বলেন, চীন ঢাকা ও আশপাশের শহরের বর্জ্য প্রকল্প স্থাপন করছে। আগামীতে বাংলাদেশের মানুষ আরও সস্তায় বিদ্যুৎ ব্যবহার করতে পারবে। চীনে দুই কোটির ওপরে মুসলমান রয়েছেন। সেখানে বাংলাদেশ জামায়াতের আমির পরিদর্শন করে তাদের জীবনমান পরিদর্শন করেছেন।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম