কোস্টগার্ডের বিরুদ্ধে অভিযোগ
বরিশালে লঞ্চ থামিয়ে ১০ লাখ টাকার মাছ জব্দ
বরিশাল ব্যুরো
প্রকাশ: ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
বরিশালের মাঝ নদীতে দুটি লঞ্চ থামিয়ে ১০ লাখ টাকার বড় মাছ জব্দ করার অভিযোগ উঠেছে কোস্টগার্ডের বিরুদ্ধে। জাটকাবিরোধী অভিযানের নামে তারা বড় মাছ জব্দ করে। তবে জাটকা জব্দের কথা স্বীকার করলেও কোস্টগার্ড বড় মাছ নেওয়ার কথা অস্বীকার করেছে।
অভিযোগ-মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে বরিশাল সদর উপজেলার লাহারহাট এলাকায় বরিশালগামী এমভি ধানসিঁড়ি ও এমভি চরমোনাই-৭ লঞ্চের গতিরোধ করেন কোস্টগার্ড সদস্যরা। লঞ্চের স্টাফরা জানায়, এরপর লঞ্চে উঠে তারা প্রায় ১০ লাখ টাকার মাছ জব্দ করেন। এ অভিযোগ অস্বীকার করে বরিশাল কোস্টগার্ডের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট ছাব্বির বলেন, দুটি একতলা লঞ্চে অভিযান চালিয়ে অবৈধ জাল ও ২৫০ কেজি জাটকা জব্দ করা হয়েছে। পরে ভোলা জেলা মৎস্য কর্মকর্তার উপস্থিতিতে জাল পুড়িয়ে দেওয়া হয়। আর ২৫০ কেজি জাটকা এতিমখানায় দেওয়া হয়। তবে বড় মাছের বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না।
ভোলা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার দেব বলেন, মঙ্গলবার আমাদের কোনো সদস্য অভিযানে যাননি। কোস্টগার্ডের ওই অভিযানের বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। ব্যবসায়ী ও স্থানীয়দের অভিযোগ, বড় মাছ জব্দে সহযোগিতা করে এলাকার কথিত কয়েকজন সোর্স। তাদের সহযোগিতায় কোস্টগার্ডের কয়েকজন সদস্য ভয়ভীতি দেখিয়ে ইলিশ, আইড়, পাঙ্গাশ, গলদা চিংড়িসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ নিয়ে যায়। পরে এসব মাছ বিভিন্ন বাজারে বিক্রি করা হয়।
বাকেরগঞ্জ উপজেলার দাঁড়িয়াল ইউনিয়নের মৎস্য ব্যবসায়ী মনির পালোয়ান বলেন, আমাদের প্রায় দুই লাখ টাকার বড় পাঙ্গাশ, চিংড়ি, ইলিশ ছিল। শুনেছি ওই লঞ্চে এক ব্যবসায়ীর কিছু জাটকা পাওয়া গেছে। জাটকার অজুহাতে আমাদেরসহ কয়েকজন ব্যবসায়ীর বড় মাছ কোস্টগার্ড নিয়ে গেছে। আরেক মাছ ব্যবসায়ী লিটন জানান, আমার দেড় লাখ টাকার বড় সাইজের ইলিশ ছিল। অথচ অন্য এক ব্যবসায়ীর জাটকা আটকের পর আমার মাছও নিয়ে গেছে কোস্টগার্ড। পরে নিজস্ব সোর্স দিয়ে কোস্টগার্ড লাহারহাটে সেই মাছ বিক্রি করে। বরিশাল সদর উপজেলার চন্দ্রমোহন ইউনিয়নের মাছ ব্যবসায়ী বাদল মৃধা বলেন, এমন ঘটনা প্রতিদিনই ঘটাচ্ছে কোস্টগার্ড ও নৌ পুলিশের সদস্যরা। মৎস্য কর্মকর্তা ছাড়াই কতিপয় সোর্সকে সঙ্গে নিয়ে তারা অভিযানের নামে সব সাইজের মাছ জব্দ করে।
বরিশাল জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিমল চন্দ্র দাস বলেন, একাধিক জেলে আমার কাছেও ফোন করে বিষয়টি জানিয়েছে। ভোলা জেলার কোস্টগার্ডের সদস্যরা অভিযান চালিয়েছে বলে জানতে পেরেছি। কোস্টগার্ড জাটকা জব্দ করতে পারে। তবে বড় মাছ নিয়ে যাওয়ার কারণ আমার জানা নেই।