কাল চসিক মেয়র হিসাবে দায়িত্ব নেবেন
চট্টগ্রামে ডা. শাহাদাতকে বড় সংবর্ধনার প্রস্তুতি
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র হিসাবে শপথ গ্রহণের পর ডা. শাহাদাত হোসেন মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব গ্রহণ করবেন। ঢাকা থেকে সোনার বাংলা এক্সপ্রেসে নেতাকর্মীদের নিয়ে তিনি সকালে চট্টগ্রামে ফিরবেন। চট্টগ্রাম রেল স্টেশনে তাকে বড় ধরনের সংবর্ধনা দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন নেতাকর্মীরা।
ঢাকায় সচিবালয়ের সম্মেলন কক্ষে রোববার ডা. শাহাদাত মেয়র হিসাবে শপথ নেন। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ তাকে শপথ বাক্য পাঠ করান। শপথ গ্রহণ শেষে নতুন মেয়র ডা. শাহাদাত গণমাধ্যমকে বলেন, এ বিজয়ের মাধ্যমে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পথ সুগম হয়েছে। সেবা প্রদানকারী সংস্থাগুলোকে সঙ্গে নিয়ে তিনি পরিকল্পিত চট্টগ্রাম নগরী গড়ে তোলার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন বলে জানান। এদিন তিনি বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীসহ শীর্ষ নেতাদের নিয়ে ঢাকায় শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মাজার জিয়ারত করেন।
মেয়রের একান্ত সচিব মারুফুল হক চৌধুরী যুগান্তরকে বলেন, মেয়রের চট্টগ্রাম সফরসূচি ও কর্মসূচি ঠিক করা হয়েছে। মঙ্গলবার ভোরের ট্রেন সোনার বাংলা এক্সপ্রেসে ডা. শাহাদাত চট্টগ্রামে ফিরবেন। দুপুর ১২টায় তিনি চট্টগ্রাম স্টেশনে পৌঁছবেন। বিএনপি নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ তাকে বড় ধরনের সবংর্ধনা দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। প্রথমে তিনি হজরত শাহ আমানত শাহ (রহ.) ও বদর আউলিয়া (রহ.) মাজার জিয়ারত করবেন। বিকালে টাইগারপাসে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন কার্যালয়ে মিলাদ মাহফিল ও দোয়া-মোনাজাত শেষে মেয়র হিসাবে ডা. শাহাদাত দায়িত্বভার গ্রহণ করবেন।
৫ আগস্ট পট পরিবর্তনের পর চসিক মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী আত্মগোপনে চলে যান। এরপর চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার তোফায়েল ইসলামকে প্রশাসক হিসাবে নিয়োগ দেওয়া হয়। পরে তার নিয়োগও বাতিল করে সংশোধিত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। বর্তমানে চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করছেন। ২০২১ সালের ২৭ জানুয়ারি চসিক নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরীর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন নগর বিএনপির তৎকালীন আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন। রেজাউল করিম চৌধুরীকে ৩ লাখ ৩৯ হাজার ২৪৮ ভোটে মেয়র ঘোষণা করা হয়। আর ডা. শাহাদাতের প্রাপ্ত ভোট মাত্র ৫২ হাজার ৪৮৯ দেখানো হয়। কিন্তু আকাশ-পাতাল ব্যবধানের এ ফলাফল মেনে নিতে পারেননি ডা. শাহাদাত। ভোট ডাকাতি, জালিয়াতি ও কারসাজির মাধ্যমে তার বিজয় ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে তিনি অভিযোগ তুলেছিলেন। নিজেকে মেয়র ঘোষণা চেয়ে ডা. শাহাদাত চট্টগ্রামের নির্বাচনি ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন। এ মামলায় ১ অক্টোবর আদালত ডা. শাহাদাত হোসেনকে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ঘোষণা করেন। এর ৭ দিন পর ৮ অক্টোবর শাহাদাত হোসেনকে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ঘোষণার সংশোধিত প্রজ্ঞাপন জারি করে নির্বাচন কমিশন। তিনি সর্বোচ্চ ১৪ মাস দায়িত্ব পালন করতে পারবেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়। নগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক গাজী মোহাম্মদ সিরাজ উল্লাহ যুগান্তরকে বলেন, ডা. শাহাদাত হোসেন বিএনপির একজন অনুকরণীয় ও অনুসরণীয় নেতা। চট্টগ্রামের সাধারণ মানুষও তাকে অসম্ভব পছন্দ করেন। আশা করছি নগর উন্নয়নে ডা. শাহাদাত বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখতে পারবেন। বড় ধরনের শোডাউনের মাধ্যমে তাকে চট্টগ্রামে বরণ করা হবে বলে জানান তিনি।