Logo
Logo
×

নগর-মহানগর

যুগান্তরকে ডা. শাহাদাত হোসেন

চট্টগ্রাম সিটিকে ক্লিন ও হেলদি হিসাবে গড়ে তোলা হবে

Icon

মজুমদার নাজিম উদ্দিন, চট্টগ্রাম

প্রকাশ: ১৫ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

চট্টগ্রাম সিটিকে ক্লিন ও হেলদি হিসাবে গড়ে তোলা হবে

ডা. শাহাদাত হোসেন

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়রের দায়িত্ব নিয়ে প্রথমেই বন্দরনগরীকে ‘গ্রিন, ক্লিন ও হেলদি’ সিটি হিসাবে গড়ে তুলতে চান ডা. শাহাদাত হোসেন। নিশ্চিত করতে চান নাগরিক সুযোগ-সুবিধা। একই সঙ্গে জলাবদ্ধতা নিরসন, সিটি গভর্নমেন্ট ধারণার বাস্তবায়ন ও চসিককে একটি স্বাবলম্বী প্রতিষ্ঠান হিসাবে গড়ে তুলতে কাজ করতে চান। শনিবার যুগান্তরের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।

মামলার রায় পেয়ে চট্টগ্রাম নগর বিএনপির সাবেক সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন চলতি সপ্তাহেই বসতে যাচ্ছেন চসিকের মেয়রের চেয়ারে। সেসঙ্গে নতুন একজন মেয়র পেতে যাচ্ছেন চট্টগ্রাম নগরবাসী। চসিক নির্বাচনের প্রায় সাড়ে তিন বছর পর আদালতের রায়ে মেয়রের দায়িত্ব নেওয়ার অপেক্ষায় আছেন শাহাদাত। এরই মধ্যে তাকে মেয়র ঘোষণা করে সংশোধিত গেজেট বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। এখন শুধু শপথ গ্রহণের আনুষ্ঠানিকতাই বাকি। চলতি সপ্তাহের যে কোনো দিন শপথ গ্রহণ শেষে চসিকের মেয়রের দায়িত্ব নিতে পারেন তিনি। শাহাদাত বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক হিসাবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।

তিনি যুগান্তরকে বলেন, আমার নির্বাচনি ইশতেহারে অনেকগুলো বিষয় ছিল। সেগুলো বাস্তবায়নই আমার মূল লক্ষ্য। এর আওতায় জলাবদ্ধতা নিরসন যেমন আছে, তেমনি আছে সুন্দর, পরিচ্ছন্ন ও একটি বাসযোগ্য শহরে রূপ দেওয়ার কাজও। ক্লিন নগরী গড়তে চসিকের জনবলকে কাজে লাগিয়ে দ্রুত ময়লা-অবর্জনা অপসারণ করা হবে। নগরীকে পরিচ্ছন্ন রাখতে নাগরিকদেরও কিছু দায়িত্ব রয়েছে। পলিথিন ও ককশিট যত্রতত্র যেন নাগরিকরা না ফেলেন, সেজন্য তাদের সচেতন করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।

রাজনীতির পাশাপাশি দীর্ঘদিন ধরে সুনামের সঙ্গে চিকিৎসা পেশায়ও নিয়োজিত আছেন শাহাদাত হোসেন। তাই হেলদি সিটি গড়ার দিকে দৃষ্টি দিতে চান। নগরবাসীর চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে প্রথমেই ওয়ার্ড পর্যায়ে যেসব কমিউনিটি ক্লিনিক আছে সেগুলোকে সংস্কারের মাধ্যমে রোগীবান্ধব হিসাবে গড়ে তোলা হবে বলে জানান তিনি। এতে রোগীরা নিজ নিজ ওয়ার্ড থেকেই প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা পাবেন।

চসিককে স্বাবলম্বী করতে আয়বর্ধক প্রকল্পে জোর দেওয়া হবে জানিয়ে শাহাদাত বলেন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনার একটা ধারণা রয়েছে। পচনশীল বর্জ্যকে সয়েল প্রোডাক্টে পরিণত করে জৈব সার উৎপাদনের আয়বর্ধক প্রকল্প নেওয়া হবে। এছাড়া বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সহ যেসব সম্পত্তি ও প্রতিষ্ঠান চসিকের হাতছাড়া হয়ে গেছে, সেগুলো পুনরুদ্ধারের উদ্যোগ নেওয়া হবে। প্রয়োজনের ভিত্তিতে অগ্রাধিকর ভিত্তিতে প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে জানিয়ে বিএনপির এ নেতা বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে গণমুখী রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। কোভিড মহামারীসহ বিভিন্ন দুর্যোগে মানুষের পাশে ছিলাম। এখনো আছি। তাই আমি জানি, কখন নগরবাসীর সেবায় কোন কাজটি করতে হবে। আমার কাছে কাউকে অনুমতি নিয়ে আসতে হবে না। আমার দরজা সবার জন্য সবসময় খোলা থাকবে।

জলাবদ্ধতা নিরসনের বিষয়ে ডা. শাহাদাত বলেন, এটা চট্টগ্রাম নগরীর সবচেয়ে বড় সমস্যা। জলাবদ্ধতা নিরসনে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের একটা প্রকল্প আছে। তারা বলছে, ২০২৬ সালের দিকে ৮০ শতাংশ সুফল পাওয়া যাবে। এখানে একটা সিটি গভর্নমেন্ট হওয়া খুব জরুরি। সেবাপ্রদানকারী সব সংস্থা নগর সরকারের অধীনে কাজ করবে। তাহলে একটা শৃঙ্খলা থাকবে। নগরবাসী পরিকল্পিত উন্নয়নের সুফল পাবেন। নগর সরকার ছাড়া পরিকল্পিত উন্নয়ন কখনো সম্ভব নয়। ডা. শাহাদাত আশা প্রকাশ করে বলেন, চলতি সপ্তাহের মধ্যে শপথ অনুষ্ঠান আয়োজনের উদ্যোগ নেবে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। শপথ শেষে দায়িত্ব নিয়ে চসিককে পুরোপুরি একটি সেবামূলক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করবেন। ২০২১ সালের ২৭ জানুয়ারি চসিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী (নৌকা) এম রেজাউল করিম চৌধুরী ৩ লাখ ৬৯ হাজার ২৪৮ ভোট পেয়ে মেয়র নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি প্রার্থী (ধানের শীষ) শাহাদাত হোসেন পান ৫২ হাজার ৪৮৯ ভোট। ভোটকেন্দ্র দখল, জাল ভোট, ভোটারদের ওপর হামলা, ফলাফলে ডিডিজিটাল কারচুপিসহ নানা অভিযোগ এনে ওই সময় ফল প্রত্যাখ্যান করেন শাহাদাত। ওই বছরই নির্বাচনি ট্রাইব্যুনালে এ নিয়ে মামলা করেন। সেই মামলার প্রায় সাড়ে তিন বছর পর গত ১ অক্টোবর শাহাদাত হোসেনকে চসিক মেয়র ঘোষণা করে নির্বাচনি ট্রাইব্যুনাল।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম