এসএসসি পরীক্ষার ফল
দেশসেরা যশোর বোর্ড
এবারও শীর্ষে সাতক্ষীরা তলানিতে মেহেরপুর * শতভাগ পাশ ৪২২ স্কুল শতভাগ ফেল নেই
এসএসসি পরীক্ষায় পাশের হারে দেশসেরা হয়েছে যশোর বোর্ড। এবার এ বোর্ডের পাশের হার ৯২ দশমিক ৩৩। যা দেশের সব শিক্ষাবোর্ডের মধ্যে সর্বোচ্চ। ২০২২ সালেও ৯৫ দশমিক ১৭ শতাংশ পাশের হার নিয়ে দেশসেরা হয়েছিল এই বোর্ড। তবে গত বছর পাশের হার ৮৬ দশমিক ১৭ ভাগে নেমে যাওয়ায় শীর্ষস্থান হাতছাড়া হয়েছিল। জিপিএ-৫ প্রাপ্তি গত বছরের তুলনায় সামান্য বেড়েছে। এ বছর পেয়েছে ২০ হাজার ৭৬১ জন। গত বছর এই সংখ্যা ছিল ২০ হাজার ৬১৭। এদিকে টানা তৃতীয়বারের মতো বোর্ডসেরা হয়েছে সাতক্ষীরা জেলা। অন্যদিকে পাশের হারে তলানিতে নেমেছে মেহেরপুর। এ বোর্ডে শতভাগ পাশ করেছে ৪২২টি স্কুলের শিক্ষার্থীরা।
বোর্ড কর্তৃপক্ষ বলছে, শিক্ষক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের যথাযথ নজরদাবি এবং অভিভাবকদের সহযোগিতায় শিক্ষার্থীরা যথাযথ প্রস্তুতি নিতে পারায় এই ফলাফল অর্জন সম্ভব হয়েছে।
যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ড. বিশ্বাস শাহিন আহম্মদ জানান, এ বছর যশোর বোর্ডে মোট ১ লাখ ৬০ হাজার ৯২৬ জন শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। এদের মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছে ১ লাখ ৪৮ হাজার ৫৭৭ জন। পাশের হার ৯২ দশমিক ৩৩ ভাগ। এতে যশোর বোর্ড দেশসেরা অবস্থান ফিরে পেয়েছে। এছাড়া এ বছর জিপিএ-৫ পেয়েছে ২০ হাজার ৭৬১ জন। এদের মধ্যে ছাত্রী ১১ হাজার ৪৩১ ও ছাত্র ৯ হাজার ৩৩০ জন।
বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর (২০২৩ সালে) মোট ১ লাখ ৫৫ হাজার ৭৫৯ জন শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিল। এদের মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছিল ১ লাখ ৩৪ হাজার ২১৩ জন। পাশের হার ছিল ৮৬ দশমিক ১৭ ভাগ। জিপিএ-৫ পেয়েছিল ২০ হাজার ৬১৭ জন। এদের মধ্যে ছাত্রী ১১ হাজার ৩৭০ ও ছাত্র ৯ হাজার ২৪৭ জন। এর আগে ২০২২ সালে ১ লাখ ৬৯ হাজার ৫০১ জন শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিল। এদের মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছিল ১ লাখ ৬১ হাজার ৩১৪ জন। পাশের হার ছিল ৯৫ দশমিক ১৭ ভাগ। জিপিএ-৫ পেয়েছিল ৩০ হাজার ৮৯২ জন। এই ফলাফলে দেশসেরা হয়েছিল যশোর।
যশোর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নারায়ন চন্দ্র দেবনাথ বলেন, যশোর শিক্ষাবোর্ডের নিজস্ব প্রশ্ন ব্যাংক রয়েছে। এজন্য অন্য শিক্ষাবোর্ডের তুলনায় যশোর একটু আলাদা। বোর্ডের প্রশ্ন ব্যাংক থেকে প্রাক নির্বাচনি ও নির্বাচনি পরীক্ষা নেওয়া হয়। এজন্য শিক্ষার্থীদের মধ্যে বোর্ড প্রশ্নের ভীতি কেটেছে। ওই সব পরীক্ষায় যারা খারাপ ফল করে, তাদের অতিরিক্ত নজরদারি করা হয়। এতে চূড়ান্ত পরীক্ষায় সবাই ভালো ফলাফল করেছে।
বোর্ডসেরা সাতক্ষীরা, তলানিতে মেহেরপুর : যশোর বোর্ডের অধীনে খুলনা বিভাগের ১০ জেলার মধ্যে এবারও ভালো ফলে শীর্ষস্থান দখলে রেখেছে সাতক্ষীরা। এবার এ জেলা থেকে ৯৬ দশমিক ১২ ভাগ শিক্ষার্থী পাশ করেছে। এর আগে গত বছর ৯১ দশমিক ৯৬ ভাগ এবং ২০২২ সালে ৯৭ দশমিক ৩৮ ভাগ শিক্ষার্থী পাশ করে বোর্ডসেরা হয়েছিল এই জেলা। আর পাশের হারের ভিত্তিতে বোর্ডের ফলাফলে তলানিতে নেমেছে মেহেরপুর। এ জেলার পাশের হার ৮৪ দশমিক ৯৬ ভাগ। গত বছর ষষ্ঠ অবস্থানে থাকা এই জেলার পাশের হার ছিল ৮৩ দশমিক ৭৩।
বোর্ডে দ্বিতীয় অবস্থান ধরে রেখেছে খুলনা জেলা। খুলনা থেকে ৯৪ দশমিক ৬০ ভাগ পরীক্ষার্থী কৃতকার্য হয়েছে। গত বছরও দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা এই জেলার পাশের হার ছিল ৯০ দশমিক ২১ ভাগ। গত বছর দ্বিতীয় অবস্থান থেকে তৃতীয় অবস্থানে নেমে যাওয়া যশোর জেলা এবারও একই অবস্থানে রয়েছে। জেলার পাশের হার ৯৪ দশমিক ২২। এদিকে টানা দু’বছর তলানিতে থাকা নড়াইল জেলা এবার চতুর্থ স্থানে উঠে এসেছে। এ বছর এই জেলার পাশের হার ৯৩ দশমিক ২৪। গত বছর এই জেলায় পাশের হার ছিল ৮০ ভাগ।
শতভাগ পাশ ৪২২ স্কুল, শতভাগ ফেল নেই : বোর্ডের অধীনে এবার ২ হাজার ৫৬৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে শতভাগ পাশ করেছে ৪২২টি স্কুলের শিক্ষার্থীরা। আর কেউ পাশ করতে পারেনি এমন প্রতিষ্ঠান একটিও নেই। বিষয়টি নিশ্চিত করে বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ড. বিশ্বাস শাহিন আহম্মদ জানান, গত বছর এ বোর্ডের তিনটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যশোরের শার্শা উপজেলার সাড়াতলা নিু-মাধ্যমিক বিদ্যালয়, সাতক্ষীরার তালা উদয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও নড়াইলের মুলাদি তালতলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থীই অনুত্তীর্ণ হয়েছিল। এ বছর কেউ পাশ করেনি এমন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নেই।