Logo
Logo
×

নগর-মহানগর

সাক্ষাৎকার: নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির উপাচার্য

গুণগত শিক্ষা ও গবেষণায় এগিয়ে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি

Icon

হুমায়ুন কবির

প্রকাশ: ১৬ মার্চ ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

গুণগত শিক্ষা ও গবেষণায় এগিয়ে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি

নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি উচ্চশিক্ষায় দেশের প্রথম বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। ১৯৯২ সালে ব্যবসায় প্রশাসন, কম্পিউটার সায়েন্স ও অর্থনীতি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টি যাত্রা শুরু করে। বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় সুবিশাল ক্যাম্পাসে উচ্চশিক্ষায় অবদান রেখে চলেছে এ ইউনিভার্সিটি। 
নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. আতিকুল ইসলাম যুগান্তরকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইউনিভার্সিটির শিক্ষা ও গবেষণাসহ নানা বিষয়ে কথা বলেছেন।
গুণগত শিক্ষা ও গবেষণার দিক দিয়ে এই ইউনিভার্সিটি দেশের প্রথম বলে মন্তব্য করেন উপাচার্য। তিনি বলেন, এ ইউনিভার্সিটি শিক্ষার্থীদের ক্যারিয়ার গড়ে দেয়। প্রতিবছর এ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করে বহু শিক্ষার্থী বিদেশে উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার জন্য যান। বাংলাদেশি শিক্ষকদের পাশাপাশি, আমেরিকা, যুক্তরাজ্য, কানাডা, ভারত ও নেপালসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের স্বনামধন্য শিক্ষক ও স্কলারদের দিয়ে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠদান করা হয়। তিনি জানান, নর্থসাউথ ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনা করছেন ১৯টি দেশের শিক্ষার্থী। সম্প্রতি তিনি তৃতীয় মেয়াদে উপাচার্য হিসাবে নিয়োগ পেয়েছেন। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন যুগান্তরের প্রতিবেদক হুমায়ুন কবির 
যুগান্তর : আপনার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম সম্পর্কে একটু বলুন।
অধ্যাপক আতিকুল ইসলাম : বর্তমানে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪টি অনুষদ রয়েছে। 
বিভাগগুলো 
অনুষদের অধীনে পরিচালিত হয়। এছাড়া কয়েকটি ইনস্টিটিউটও রয়েছে। এতে ২৫ হাজারের বেশি ছাত্রছাত্রী অধ্যয়নরত। ১৫ জন বিদেশি শিক্ষকসহ মোট শিক্ষকের সংখ্যা ৯শর মতো।
যুগান্তর : শিক্ষা ও গবেষণা ক্ষেত্রে নর্থসাউথ ইউনিভার্সিটির অর্জনগুলো কী কী?
অধ্যাপক আতিকুল ইসলাম : দেশে সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রথম সারিতেই রয়েছে। আন্তর্জাতিকভাবে আমাদের সাবজেক্টের র‌্যাংকিং পজিশনও ভালো অবস্থানে। টাইমস হায়ার এডুকেশন র‌্যাংকিংয়ে বিশ্বের ৫০ বছরের কম বয়সি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে আমরা ২১০-এর র‌্যাংকিং পেয়েছি। এটা একটা বড় অর্জন। বাংলাদেশ থেকে একমাত্র আমরাই এই পজিশনে আছি। আমাদের শিক্ষকদের প্রডাক্টিভিটি অনেক বেশি। আমার ধারণা, শিক্ষার গুণগতমান ও গবেষণায় বাংলাদেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে আমরা প্রথমে আছি।
যুগান্তর : এ অর্জনের পেছনে কোন বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে?
অধ্যাপক আতিকুল ইসলাম : আমরা শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে কোয়ালিটিকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকি। বিদেশের নামকরা কোনো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স করা না থাকলে আমরা প্রভাষক হিসাবে নিয়োগ দিই না। বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি না থাকলে সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি দেওয়া হয় না। পাশাপাশি আমাদের সঙ্গে যারা খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসাবে কাজ করছেন তারা বাংলাদেশের বেস্ট জায়গাগুলো থেকে আসেন। 
যুগান্তর : কেমন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বপ্ন দেখেন?
অধ্যাপক আতিকুল ইসলাম : আমার স্বপ্ন নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয় শুধু বাংলাদেশে নয় আন্তর্জাতিকভাবে যে সম্মান অর্জন করেছে তা ধরে রাখবে। আমরা আন্তর্জাতিক র‌্যাংকিংয়ের শীর্ষ ১০০ এশিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্ভুক্ত হতে চাই। নর্থসাউথের শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা শেষ করে ইতোমধ্যে আমেরিকাসহ বিশ্বের প্রথিতযশা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যেমন, হার্ভার্ড, এমআইটি, অক্সফোর্ড, ক্যামব্রিজ ছাড়াও অনেক স্বনামধন্য ইউনিভার্সিটিতে পিএইচডিসহ উচ্চতর পড়াশোনা ও গবেষণা করছে। সামনে বিশ্বের অন্যতম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসাবে নর্থসাউথকে গড়ে তুলতে চাই।
যুগান্তর : এ বিশ্ববিদ্যালয়কে এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে কোন বিষয়গুলোকে প্রাধান্য দিয়েছেন?
অধ্যাপক আতিকুল ইসলাম : আমি সব থেকে বেশি গবেষণাকে প্রাধান্য দিয়েছি। আমি যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম এলাম, তখন এখানে শিক্ষকদের কোনো রিসার্চ ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা ছিল না। আমি সে ব্যবস্থা করলাম। আগে শিক্ষকদের প্রতিবছর ৩টি সেমিস্টার ও প্রতি সেমিস্টারে ৪টি কোর্স পড়াতে হতো। আমরা এটি আস্তে আস্তে কমিয়ে এনে গবেষণা বাড়িয়েছি। এখানে ছাত্রদেরও গবেষণার সুযোগ আছে। 
যুগান্তর : দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য কী কী সুবিধা রয়েছে?
অধ্যাপক আতিকুল ইসলাম : আমরা ভর্তি পরীক্ষায় মেধা যাচাইয়ের মাধ্যমে ১০০ শিক্ষার্থীকে স্কলারশিপ দিই। যেসব শিক্ষার্থী প্রথমবর্ষে একাডেমিক পরীক্ষায় ভালো করে, তাদের বৃত্তি দেওয়া হয়। অসচ্ছল ছাত্রদের ফি মওকুফ করা হয়। টাকার অভাবে নর্থসাউথে পড়াশোনা শেষ করতে পারেনি, এমন কোনো ঘটনা নেই। ১৫শর বেশি মুক্তিযোদ্ধা সন্তান বিনা খরচে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন। এখানে রিকশাচালকের সন্তান ও ধনী লোকের সন্তান সবাই পড়াশোনা করছে।
যুগান্তর : শিক্ষার্থীদের কর্মজীবনে প্রবেশের ক্ষেত্রে আপনার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা কী?
অধ্যাপক আতিকুল ইসলাম : শিক্ষার্থীদের চাকরি নিশ্চিত করার জন্য আমরা সরাসরি বিভিন্ন ইন্ডাস্ট্রিতে বাধ্যতামূলক ৯-১২ সপ্তাহ ইন্টার্নশিপের ব্যবস্থা করে থাকি। ৯৫ শতাংশ শিক্ষার্থীর ওই ইন্ডাস্ট্রিতে চাকরি হয়ে যায়। অনেকে বিদেশে গিয়ে আরও পড়াশোনা করে।
যুগান্তর : আপনার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে বলুন
অধ্যাপক আতিকুল ইসলাম : নর্থসাউথের খুব উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ আছে বলে মনে করি। আমাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা হলো-রিসার্চ বাড়ানো, মেডিকেল ফ্যাকাল্টি বাড়ানো, স্টুডেন্ট ক্লাবগুলো আরও শক্তিশালী করা, ছাত্র-শিক্ষক কো-রিলেশন বাড়ানো। নতুন ক্যাম্পাসের জন্য পূর্বাচলে ২৫০ বিঘা জমি কেনা আছে। সেখানে দ্রুত নির্মাণ কাজ শুরু করা। আন্তর্জাতিকভাবে আমরা যে সুনাম অর্জন করেছি তার ধারাবাহিকতা রক্ষা করে আরও বিশ্বমানের ক্যাম্পাস গড়ে তুলতে চাই।
 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম