কুসিক উপনির্বাচন
শেষ দিনে তিন প্রার্থীর ব্যাপক শোডাউন
তাবারক উল্লাহ কায়েস ও আবুল খায়ের, কুমিল্লা
প্রকাশ: ০৮ মার্চ ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
কুমিল্লা সিটি করপোরেশনে (কুসিক) মেয়র পদে উপনির্বাচনে প্রচারের শেষ দিন বৃহস্পতিবার ব্যাপক শোডাউন করেছেন তিন প্রার্থী। বাস প্রতীকের প্রার্থী তাহসিন বাহার সূচনা সকাল থেকেই নগরীর কান্দিরপাড় এলাকায় গণসংযোগ ও শোডাউন করেন। ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থী নিজাম উদ্দিন কায়সার বিপুলসংখ্যক বিএনপি নেতাকর্মী নিয়ে নগরীর কান্দিরপাড় থেকে চকবাজার পর্যন্ত গণসংযোগ করেন। আর হাতি প্রতীকের প্রার্থী নুর উর রহমান মাহমুদ তানিম নগরীর চর্থা ও থিরাপুকুরপাড় এলাকায় গণসংযোগ করেন। তবে টেবিল ঘড়ি প্রতীকের প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কু অনেকটা নীরবে-নিভৃতে নগরীর ১২নং ওয়ার্ড এলাকায় গণসংযোগ করেন। এই চার প্রার্থীর মধ্যে সূচনা ছাড়া অন্য তিন প্রার্থী সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। তাদের দাবি সূচনার কর্মী-সমর্থকরা পেশিশক্তি দেখাচ্ছে। এতে সুষ্ঠু নির্বাচন বিঘ্নিত হতে পারে।
আগামীকাল এই সিটির উপনির্বাচনে ভোটগ্রহণ হবে। এতে বিএনপি বলয়ের দুজন এবং মহানগর আওয়ামী লীগের দুজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
সকাল সাড়ে ১০টায় নগরীর স্টেডিয়াম মার্কেট থেকে গণসংযোগ শুরু করেন বাস প্রতীকের প্রার্থী তাহসিন বাহার সূচনা। এ সময় স্টেডিয়াম মার্কেটের ব্যবসায়ীরা তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। পরে প্ল্যান্টেন এসআর শপিং কমপ্লেক্স ও লিবার্টি চত্বর হয়ে সাত্তার খান কমপ্লেক্স, খন্দকার হক টাওয়ার, সোনালী স্কয়ার ও রাজগঞ্জ বাজারের পথসভায় বক্তব্য দেন সূচনা। এ সময় বিভিন্ন মার্কেটের ব্যবসায়ীসহ নানা পেশার মানুষ প্রচারে অংশ নেন।
নগরীর কান্দিরপাড়-রাজগঞ্জ সড়কে গণসংযোগকালে বিভিন্ন পথসভায় সূচনা বলেন, কুমিল্লার মানুষের ওপর আমার বিশ্বাস ও মহান আল্লাহর ওপর ভরসা আছে। সবার কাছে দোয়া চাই যেন কাজের মাধ্যমে আপনাদের সম্মান যেন ফিরিয়ে দিতে পারি। আপনারা দায়িত্ব দিলে স্মার্ট বাংলাদেশের সঙ্গে তাল মিলিয়ে কুমিল্লাকে একটি স্মার্ট সিটি হিসেবে গড়ে তুলব। সবার জন্য একটি সুন্দর নিরাপদ বাসযোগ্য নগরী গড়ব। আজ ঐতিহাসিক ৭ মার্চ। ১৯৭১ সালের এই দিনে বঙ্গবন্ধুর একটি ভাষণ পুরো জাতির ভাগ্যে বদলে দিয়েছিল। ৯ তারিখ আপনাদের একটি ভোট কুমিল্লায় নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে।
ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থী নিজাম উদ্দিন কায়সার বিএনপি নেতাকর্মীদের নিয়ে নগরীর কান্দিরপাড় থেকে চকবাজার পর্যন্ত গণসংযোগ এবং শোডাউন করেন। এ সময় তিনি অভিযোগ করেন, বাস প্রতীকের প্রার্থী তাহসিন বাহার সূচনার কর্মী-সমর্থকরা ভোটের মাঠে পেশিশক্তি দেখাচ্ছে। ভোটের মাঠে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। বিএনপি নেতাকর্মীদের কেন্দ্রে না যেতে হুমকি দিচ্ছে। তিনি বলেন, আমি এসব বিষয় রিটার্নিং কর্মকর্তাকে অবহিত করেছি। আমরা মাঠে থেকে সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। নির্বাচন কমিশন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হলে বিএনপি নেতাকর্মীদের নিয়ে আমরা অপশক্তির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াব। কায়সার বলেন, আমাকে ছাড়া বাকি তিন প্রার্থী পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে মানুষকে ধোঁকা দিচ্ছে। আসলে তারা তিনজন এমপি বাহাউদ্দীনের ঘনিষ্ঠ লোক। এদিন বিকালে তিনি নগরীর কালিয়াজুড়ি এলাকায় গণসংযোগ ও উঠান বৈঠক করেন।
টেবিল ঘড়ি প্রতীকের প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কু গণসংযোগকালে বলেন, সংসদ সদস্য বাহাউদ্দীন কন্যা মাঠে পেশিশক্তি প্রদর্শন করছেন। এরই মাঝে আমার বেশ কয়েকজন নেতাকর্মীর ওপর হামলা হয়েছে। আমার উঠান বৈঠকে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। আমার নিজস্ব হোটেলে ভাঙচুর করা হয়েছে। সুষ্ঠু নির্বাচনের কোনো সম্ভাবনা আমি দেখছি না। তাদের এমন মারমুখী অবস্থানে ভোটারদের মাঝে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে।
হাতি প্রতীকের প্রার্থী নুর উর রহমান মাহমুদ তানিম গণসংযোগকালে বলেন, ‘আমাদের তিনজন প্রার্থীর একই শঙ্কা নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ এখনো নিশ্চিত হয়নি। একজন প্রার্থী চেষ্টা করছেন যেন ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে না আসেন। কম ভোটার উপস্থিতি নিয়ে তিনি জয় ছিনিয়ে নিতে চাচ্ছেন।’
এ বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা ফরহাদ হোসেন বলেন, প্রার্থীদের সব অভিযোগ আমরা আমলে নিয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।