মৌলিক সমস্যার সমাধানে নেই প্রতিশ্রুতি
তাবারক উল্লাহ কায়েস, কুমিল্লা
প্রকাশ: ০৬ মার্চ ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে উপ-নির্বাচন ঘিরে নগরজুড়ে নাগরিকদের মৌলিক সমস্যাগুলো নিয়ে আলোচনা চলছে। বিশেষ করে যানজট, জলাবদ্ধতা, মশার উপদ্রব, কিশোর গ্যাং, অলিগলিতে ময়লা-আবর্জনার স্তূপ এবং অপরিকল্পিত নগরায়ণ আলোচিত হচ্ছে। সিটি করপোরেশন প্রতিষ্ঠার একযুগ পরও সমস্যাগুলোর সমাধান পায়নি বাসিন্দারা। এ নির্বাচন ঘিরে নানা কৌশলি প্রচার-প্রচারণায় চার প্রার্থী দিচ্ছেন উন্নয়নের নানা প্রতিশ্রুতি। তবে মৌলিক সমস্যার সমাধানে তাদের কোনো প্রতিশ্রুতি নেই।
আগামী ৯ মার্চ অনুষ্ঠেয় নির্বাচন নিয়ে সরগরম কুমিল্লা। প্রার্থীরা চমকপ্রদ ইশতেহার ঘোষণা করলেও মৌলিক সমস্যাগুলো নিয়ে তাদের তেমন কোনো প্রতিশ্রুতি নেই। তবে একজন প্রার্থীর ১২ দফা ইশতেহারে সমস্যাগুলো তুলে ধরা হয়েছে।
২০১১ সালের ১০ জুলাই কুমিল্লা পৌরসভা এবং সদর দক্ষিণ পৌরসভা নিয়ে গঠিত হয় কুমিল্লা সিটি করপোরেশন। প্রতিষ্ঠার একযুগ পেরিয়ে গেলেও নাগরিকদের মৌলিক চাহিদাগুলো পূরণ হয়নি। প্রতিনিয়ত নাগরিকদের ঘাড়ে করের বোঝা বৃদ্ধি পেলেও বাড়ছে না সেবার মান। ১০ বছর মেয়রের দায়িত্ব পালন করেছেন মনিরুল হক সাক্কু। কিন্তু তিনি সমস্যাগুলোর সমাধান করতে পারেননি। যানজট, জলাবদ্ধতা, যত্রতত্র ময়লার স্তূপ, মশার উপদ্রব ও অপরিকল্পিত ভবনের কারণে বাসিন্দাদের নানামুখী সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। নগর কর্তৃপক্ষের যথাযথ উদ্যোগ না থাকায় সমস্যার সুরাহা হচ্ছে না। সম্প্রতি একটি আন্তর্জাতিক গবেষণা সংস্থা রাজধানী ঢাকার পর কুমিল্লাকে সবচেয়ে বেশি বায়ুদূষণ এলাকা হিসাবে চিহ্নিত করেছে।
এদিকে, নির্বাচন এলেই ভোটারদের নানা স্বপ্ন দেখানো হয়। আধুনিক ও তিলোত্তমা নগরী গড়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রার্থীরা ইশতেহার ঘোষণা করেন। কিন্তু নির্বাচন চলে গেলে ইশতেহার কাগজে-কলমেই থেকে যায়। নগরীর শাকতলা এলাকার বাসিন্দা সিহাব চৌধুরী বলেন, নির্বাচন এলেই প্রার্থীদের মুখে প্রতিশ্রুতির ফুলঝুড়ি শুনি। কিন্তু নির্বাচন চলে গেলে তারা সব ভুলে যান। আমাদের মৌলিক সমস্যাগুলোর সমাধানে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয় না। চর্থা এলাকার বাসিন্দা রোকন উদ্দিন বলেন, ধুলাবালির কারণে আমরা চলাফেরা করতে পারি না। বিশেষ করে বাচ্চাদের স্কুলে যেতে অনেক সমস্যা হয়। এছাড়া যানজট তো নিত্যদিনের সমস্যা। শহরের ব্যস্ততম রাস্তায় অপরিপক্ক চালক ইজিবাইক চালাচ্ছে। এতে প্রতিদিনই দুর্ঘটনা ঘটছে। নগর কর্তৃপক্ষের চোখে এসব পড়ে না। রানীরদীঘির পাড় এলাকার বাসিন্দা ইমদাদুল হক বলেন, মশার উপদ্রবে আমরা অতিষ্ঠ। কিন্তু নগর কর্তৃপক্ষ কি করছে বুঝি না। আমরা সিটির বাসিন্দা নাকি গ্রামের বাসিন্দা তা বুঝি না। নিয়মিত কর পরিশোধ করেও নাগরিক কোনো সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছি না। এ বিষয়ে সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী আবু সায়েম বলেন, স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে নগর পরিকল্পনার অনুমোদন পাইনি। তাই পরিকল্পিত নগরায়ণ বাস্তবায়ন করতে পারছি না। এছাড়া নাগরিকদের মৌলিক সমস্যাগুলো নিয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের পরিচ্ছন্ন কর্মীরা নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছে। সম্প্রতি মশার উপদ্রব বেড়ে যাওয়ায় আমরা বিষয়টি নিয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছি।