প্রেস ক্লাবের উদ্যোগ
না.গঞ্জে প্রথমবারের মতো এক টেবিলে আইভী-শামীম
রাজু আহমেদ, নারায়ণগঞ্জ
প্রকাশ: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
নাগরিক সমস্যার সমাধান খুঁজতে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের (নাসিক) মেয়র সেলিনা হায়াত আইভী, এমপি সেলিম ওসমান ও এমপি একেএম শামীম ওসমান প্রথমবারের মতো এক টেবিলে বসেছেন। শনিবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাব আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে মেয়র আইভী ও শামীম ওসমানকে বেশ সাবলীল ভূমিকায় দেখা যায়। রাজনৈতিক বৈরিতা ভুলে দুজনের মধ্যে কথপোকথনও হয়েছে।
প্রেস ক্লাব ভবনে আয়োজিত ‘যানজট ও ফুটপাত দখল’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকের শুরুতে নাসিক মেয়র আইভী বলেন, এখানে আমরা যারা উপস্থিত হয়েছি-তারা সবাই মিলেমিশে কাজ করলে জেলায় কোনো সমস্যা থাকবে না। মৌমিতা পরিবহণের বাসগুলো দাপটের সঙ্গে রাস্তা দখল করে থাকে। ট্রাফিক পুলিশের কাজ হলো যানজট নিরসন করা। কিন্তু মেয়র বা এমপিদের ওপর তারা এটা চাপিয়ে দিতে পারে না। বারবার ট্রাফিক পুলিশকে অবৈধ স্ট্যান্ডের তালিকা দিলেও সেগুলো উচ্ছেদ করা হয় না। তিনি বলেন, শহরের যত্রতত্র হকার থাকতে পারবে না। আর এটা আমার বড় দুই ভাইকে (সেলিম ওসমান ও শামীম ওসমান) কথা দিয়ে যেতে হবে। তিনি আরও বলেন, আমরা ৬০০ হকারকে পুনর্বাসন করেছি। পুরো শহর হকারদের দখলে। আমি কোনো অজুহাত শুনতে চাই না। তিনি বলেন, প্রশাসন মেয়রের কথা শোনে না। তারা এমপিদের কথা শোনে।
এমপি সেলিম ওসমান বলেন, প্রশাসনকে প্রশাসনের মতো করেই চলতে হবে। হকারদের উঠিয়ে দিলে তারা কোথায় যাবে। এ চিন্তা প্রশাসনের করলে হবে না। কোনো না কোনোভাবে তাদের রিজিকের ব্যবস্থা হয়ে যাবে। আমাদের মধ্যে স্বজনপ্রীতিটা বেশি। কঠোর থেকে কঠোরতর হতে হবে। ১০ বছরের চেষ্টার পর আমরা একত্রিত হতে পেরেছি। এখানে বসে আমরা সিদ্ধান্ত নেব। তিনি বলেন, প্রশাসনকে বলতে চাই-স্ট্যান্ডগুলোকে খালি করেন। এরপর নোটিশ দিন ফুটপাতে কোনো দোকান থাকবে না। শহরে কয়টি বাস আছে, টেম্পোগুলো কার, স্ট্যান্ড কে চালায়, সেই হিসাব আমাকে দিন।
নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের এমপি শামীম ওসমান বলেন, ইপিজেড ছুটি হলে সিদ্ধিরগঞ্জের রাস্তা অকেজো হয়ে যায়। ফুটওভার হলে সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে। আমি ও আইভী একটা কাগজে সই করে পাঠালেও এটা (সমাধান) হয়ে যাবে। তিনি বলেন, ভালো কাজ আমরা সবাই মিলেমিশে করব। পুরো শহর হকারমুক্ত করুন। কবে করবেন জানান। মেয়র আবেদন করলে প্রশাসন পুলিশ ও ম্যাজিস্ট্রেট দেবে। তিনি আরও বলেন, বিআরটিএ প্রয়োজনের অতিরিক্ত গাড়ির পারমিশন দেবে না। আর এক্ষেত্রে আমাদের নারায়ণগঞ্জের পরিবহণ ব্যবসায়ীদের আগে মূল্যায়ন করা উচিত।
গোলটেবিল বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রেস ক্লাবের সভাপতি আরিফ আলম দিপু। উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান চন্দন শীল, বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) রুহুল আমিন সাগর, বিআরটিএ’র সহকারী পরিচালক (ইঞ্জি.) শামসুল কবীর, বিকেএমইএ’র সিনিয়র সহসভাপতি মনসুর আহমেদ, বাংলাদেশ ক্লোথ মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি প্রবীর কুমার সাহা, নারায়ণগঞ্জ চেম্বারের ভাইস প্রেসিডেন্ট সোহেল সারোয়ার, নাসিকের কাউন্সিলররা, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, তিন থানার ওসি, নারায়ণগঞ্জ বারের সভাপতি প্রমুখ।