Logo
Logo
×

নগর-মহানগর

কালোবাজারির দখলে স্বপ্নের ট্রেনের টিকিট

Icon

জসিম উদ্দিন, কক্সবাজার

প্রকাশ: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

কালোবাজারির দখলে স্বপ্নের ট্রেনের টিকিট

সকাল আটটায় টিকিটের আশায় লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষায় ছিলেন রহিম উল্লাহ নামে এক যাত্রী। কিন্তু মাত্র কয়েক মিনিটেই শেষ হয়ে যায় রেলের সব টিকিট। শেষ পর্যন্ত টিকিট না পেয়ে ফিরতে হয়েছে তাকে। একই কথা বললেন আতিকুর রহমান মার্শাল নামে আরেকজন। তিনি বলেন, আমার পাঁচ বন্ধু কাউন্টার থেকে টিকিট না পেয়ে কালোবাজারিদের (ব্ল্যাকার) কাছ থেকে ১১০০ টাকা করে কিনেছে। টিকিট কালোবাজারে বিক্রি নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন কক্সবাজার আইকনিক রেলস্টেশনের সহকারী স্টেশন মাস্টার।

তথ্যমতে, দীর্ঘ ৫৩ বছর পর পহেলা ডিসেম্বর ঢাকা থেকে কক্সবাজার বাণিজ্যিকভাবে ট্রেন চলাচলের মধ্য দিয়ে স্বপ্ন বাস্তবায়ন হয়েছে দক্ষিণ চট্টগ্রামের মানুষের। ট্রেনযাত্রার অপেক্ষার পালা শেষ হলেও এবার বেড়েছে টিকিট না পাওয়ার আক্ষেপ। কাঙ্ক্ষিত টিকিটের জন্য সকাল থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে অথবা অনলাইনে চেষ্টার পর টিকিট পেতে ব্যর্থ হচ্ছেন যাত্রীরা। তবে বাড়তি টাকা দিলেই কালোবাজারে মিলছে কাঙ্ক্ষিত টিকিট।

অভিযোগ উঠেছে, কক্সবাজার স্টেশন ঘিরে ইতোমধ্যে গড়ে উঠেছে একাধিক চক্র। কালোবাজারি এ চক্রের অপতৎপরতায় সাধারণ যাত্রীদের নাগালের বাইরে চলে গেছে টিকিট। ফলে লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট পাওয়া যেন সোনার হরিণ। এ অবস্থায় কালোবাজারিতে জড়িতদের চিহ্নিত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন সাধারণ যাত্রীরা। তাদের অভিযোগ, সকাল ৮টা বাজার কয়েক মিনিটের মধ্যে টিকিট শেষ হয়ে যায়। ৭০০ থেকে ৮০০ টিকিট মাত্র কয়েক মিনিটে কীভাবে শেষ হয়ে যায়! এটা কীভাবে সম্ভব? কালোবাজারি চক্রের সঙ্গে অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জড়িত না থাকলে এমনটি হওয়ার কথা নয় বলেও দাবি তাদের। ঝিলংজা চান্দেরপাড়া এলাকার বাসিন্দা আহসানুল হক বলেন, আমার বাড়ি রেলস্টেশনের পাশে। যারা টিকিট নিতে স্টেশনে আসেন বেশিরভাগ যাত্রী টিকিট না পেয়ে হতাশ হয়ে ফিরে যান। সিন্ডিকেট না থাকলে ৭০০ থেকে ৮০০ টিকিট যায় কোথায়-প্রশ্ন তার। মোবারক হোসেন ও কফির উদ্দিন নামে দুজন বলেন, কালোবাজারিদের হাতে টিকিট না গেলে তারা অনলাইনে বিজ্ঞাপন দিয়ে কীভাবে টিকিট বিক্রি করে? হয়তো রেল চালুর আগেই সিন্ডিকেট হয়ে গেছে। টিকিট কিনতে না পারা সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘সরকার যাকে যেখানে দায়িত্ব দেয় সেখানেই সে মহালুটপাটে ব্যস্ত হয়ে পড়ে।’

তবে রেল কর্মকর্তারা বলছেন, টিকিট সিস্টেম শতভাগ অনলাইনে। ইতোমধ্যে ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত কক্সবাজার থেকে ঢাকা রুটে সব ধরনের টিকিট বিক্রি শেষ। তাই কাউন্টারে না পাওয়াটাই স্বাভাবিক। তবে কালোবাজারি হচ্ছে কিনা খতিয়ে দেখবেন বলে জানান তারা।

কক্সবাজার আইকনিক রেলস্টেশনের সহকারী স্টেশন মাস্টার আতিকুর রহমান বলেন, টিকিট শতভাগ অনলাইনে বিক্রি হয় বলে একসঙ্গে সব টিকিট বিক্রি শেষ হতেই পারে। এজন্য অনেক যাত্রী কাউন্টারে এসে টিকিট কিনতে পারেন না। তাই তারা সন্দেহ করছেন টিকিট কালোবাজারে বিক্রি হয়ে গেছে। তবে কেউ যদি টিকিট কিনে বিক্রি করে দেয় সেক্ষেত্রে আমাদের করার কিছুই থাকে না। তারপরও যদি আমাদের কেউ জড়িত থাকে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেব।

তিনি আরও বলেন, যদি কালোবাজারি বন্ধ করতে চাই তবে ‘টিকিট যার, ভ্রমণ তার’ একটি স্লোগানে এগিয়ে যেতে হবে। এক্ষেত্রে সবার সহযোগিতা জরুরি।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম