Logo
Logo
×

নগর-মহানগর

মাঠে নামলেও দাঁড়াতে পারছেন না বিএনপি নেতাকর্মীরা

২৪ দিনে ৫৫ মামলায় গ্রেফতার ৯২৪

Icon

মজুমদার নাজিম উদ্দিন, চট্টগ্রাম

প্রকাশ: ২১ নভেম্বর ২০২৩, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

মাঠে নামলেও দাঁড়াতে পারছেন না বিএনপি নেতাকর্মীরা

প্রতীকী ছবি

চট্টগ্রামে হরতাল-অবরোধে মাঠে নামতে শুরু করেছেন বিএনপি নেতারা। এতদিন গ্রেফতার এড়াতে আড়ালে থাকলেও গত কয়েক দিন ধরে তাদের প্রকাশ্যে দেখা যাচ্ছে। তবে রাস্তায় দাঁড়াতে পারছেন না বেশিক্ষণ। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর অবস্থানের কারণে ঝটিকা মিছিল ও পিকেটিং করেই দ্রুত স্থান ত্যাগ করতে হচ্ছে। এ অবস্থায় আন্দোলনও হয়ে পড়েছে অনেকটা নিরুত্তাপ। একমাত্র দূর-পাল্লার বাস চলাচল বন্ধ থাকা ছাড়া হরতাল-অবরোধ জনজীবনে তেমন কোনো প্রভাব ফেলতে পারছে না।

বিএনপির দাবি, গত ২৮ অক্টোবর থেকে ২০ নভেম্বর পর্যন্ত ২৪ দিনে চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলায় ৯২৪ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ সময় দায়ের করা হয়েছে ৫৫টি মামলা। বিএনপি দলীয় সূত্র জানায়, রাস্তায় নামলেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ধরে নিয়ে যাচ্ছে। মামলা ছাড়াও শিকার হতে হচ্ছে শারীরিক নির্যাতনের। কোথাও কোথাও আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের হামলার মুখে পড়তে হচ্ছে। এ অবস্থায় আন্দোলনে সাবধানতা অবলম্বন করা হচ্ছে। গ্রেফতার এড়াতে কৌশলগত কারণে সব নেতা একসঙ্গে আন্দোলন কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন না। নেতাকর্মীদের একাধিক স্তরে ভাগ করে মাঠে নামানো হচ্ছে। যেন একটি স্তরের নেতা-কর্মীরা গ্রেফতার হলেও পরবর্তীতে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য আরেকটি স্তর প্রস্তুত থাকে। আপাতত নভেম্বর পর্যন্ত এভাবে আন্দোলন চালিয়ে ডিসেম্বর থেকে ‘অলআউট মুভমেন্টে’ যাওয়ার টার্গেট রয়েছে। তাই এখনই সব শক্তি ক্ষয় না করে নির্বাচনের আগ পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে নেওয়ার মতো অবস্থায় থাকতে চাইছে বিএনপি। চট্টগ্রাম নগর বিএনপির একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

গত ২৯ অক্টোবর হরতালের মধ্য দিয়ে মূলত বিএনপির সরকার পতনের একদফার ‘কঠোর’ আন্দোলন শুরু হয়। এরপর আরও কয়েক দফায় হরতাল-অবরোধ পালন করে দলটি। সোমবার টানা ৪৮ ঘণ্টার হরতাল শেষ হয়েছে। প্রথম দিকে সিনিয়র নেতাদের তেমন একটা রাস্তায় নামতে দেখা যায়নি। মধ্যমসারির নেতারা অল্প কিছু কর্মী নিয়ে ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে হরতাল-অবরোধের সমর্থনে মিছিল ও পিকেটিং করেছেন বিভিন্ন স্থানে। নগরীর প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ স্পটেই রয়েছে পুলিশ-র‌্যাবের সতর্ক পাহারা। এছাড়া প্রতিদিনই একাধিক স্থানে শান্তি সমাবেশ করছে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীরা। তাই সাবধানতার সঙ্গে মিছিল-পিকেটিং করে আসছিল বিএনপি।

সূত্রমতে, আন্দোলন আরও জোরদার করতে চট্টগ্রামের সিনিয়র নেতাদের মাঠে নামার তাগিদ দেওয়া হয়েছে কেন্দ থেকে। আর সে কারণে ৪৮ ঘণ্টার হরতালে নগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্ত অনেক নেতাই মাঠে নামেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আবদুস সাত্তার, এসকে খোদা তোতন, ইয়াছিন চৌধুরী লিটন, আবদুল মান্নান, মো. শাহ আলম, ইসকান্দার মির্জা, এসএম সাইফুল আলম, সদস্য আনোয়ার হোসেন লিপু, আহমেদুল আলম চৌধুরী রাসেল, আর ইউ চৌধুরী শাহীন, গাজী মোহাম্মদ সিরাজ উল্লাহ, নগর মহিলা দল সভাপতি মনোয়ারা বেগম মনি। এছাড়া বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের আরও কয়েকজন সিনিয়র নেতাকে মাঠে দেখা গেছে। তাদের নেতৃত্বে নগরীর বিভিন্ন স্থানে গত দুদিন বিক্ষিপ্ত ঝটিকা মিছিল ও পিকেটিং হয়েছে। এরপরও হরতাল পালিত হয়েছে ঢিলেঢালাভাবে। নগরীর জীবনযাত্রা ছিল অনেকটাই স্বাভাবিক।

চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা মো. ইদ্রিস আলী যুগান্তরকে বলেন, ‘গ্রেফতার এড়াতে সতর্কতার সঙ্গে আন্দোলন করতে হচ্ছে। বিভিন্ন স্তরে নেতাকর্মীদের ভাগ করে নামানো হচ্ছে মাঠে। নগরী ও জেলার বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ মিছিল, পিকেটিং হচ্ছে। হরতাল, অবরোধও পালিত হচ্ছে।’

তিনি জানান, ২৮ অক্টোবর থেকে ২০ নভেম্বর পর্যন্ত ২৪ দিনে চট্টগ্রাম নগরীতে ২১ মামলায় ৪৩৪ জন, উত্তর জেলায় ১৯ মামলায় ২৫০ জন এবং দক্ষিণ জেলায় ১৫ মামলায় ২৪০ জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রতিদিনই দায়ের করা হচ্ছে নতুন নতুন মামলা।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম