পিঁপড়ায় চলে তাদের সংসারের চাকা
সমির মল্লিক, খাগড়াছড়ি
প্রকাশ: ০৮ নভেম্বর ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
পিঁপড়ার ডিম সংগ্রহ করে সংসার চলে তাদের। এক-দুজন নয়, এর ওপর নির্ভরশীল তিন শতাধিক মানুষ। খাগড়াছড়ির মাটিরাঙা, মানিকছড়ি, দীঘিনালাসহ বিভিন্ন উপজেলায় দেখা যায় তাদের। এমনই এক গ্রাম আছে-যেখানে অন্তত ২৫ জনের জীবিকা চলে পিঁপড়ার ডিম সংগ্রহ করে।
শিশিরভেজা ভোরে তাদের বেরিয়ে পড়া, বিকালে ডিম সংগ্রহ করে বাড়ি ফেরা। একদল মানুষ বাঁশের ঝুড়ি আর লম্বা বাঁশ নিয়ে খুঁজে বেড়ান এক পাহাড় থেকে অন্য পাহাড়ে। পাহাড়ের বিভিন্ন গাছে পিঁপড়ার বাসা থেকে ডিম সংগ্রহ করেন তারা। দিনে এক থেকে দুই কেজি পিঁপড়ার ডিম সংগ্রহ করেন প্রত্যেকে। এ ডিম প্রতি কেজি বিক্রি হয় ৫০০ থেকে ৬০০ টাকায়।
মাটিরাঙার গোমতি ইউনিয়নের রংমিয়াপাড়ার রুস্তম আলী বলেন, সাত বছর ধরে এ পেশায় আছি। সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত পাহাড়ে পাহাড়ে ঘুরে লাল পিঁপড়ার ডিম সংগ্রহ করি। বিক্রি করি স্থানীয় পাইকারদের কাছে। এসব ডিম মাছের খাবার ও বড়শি দিয়ে মাছ ধরার টোপ হিসাবে ব্যবহার করা হয়।
আরেক ডিম সংগ্রহকারী কামাল হোসেন বলেন, এ কাজ বেশ কষ্টকর। গাছের উপরের ডালে পিঁপড়া বাসা বাঁধে। ডিম সংগ্রহ করার সময় পিঁপড়ার কামড় খেতেই হয়। পিঁপড়ার বাসার পরিমাণের ওপর উপার্জন নির্ভর করে।
একই এলাকার বাসিন্দা ডিম সংগ্রহকারী জসিম উদ্দিন বলেন, লাল পিঁপড়ার বাসায় প্রচুর সাদা ডিম মেলে। মেহগনি, আম, লিচু, কনক, কড়াইসহ দেশীয় গাছগুলোতে লাল পিঁপড়ার বাসা পাওয়া যায়।
স্থানীয় ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমার ২৫ জন নির্দিষ্ট ডিম সংগ্রহকারী আছে। তাদের থেকে কিনে সেসব ডিম দেশের বিভিন্ন জায়গায় পাঠাই। মাছের খামারি ও শৌখিন মাছ শিকারিদের কাছে এসব ডিম সরবরাহ করা হয়।
জাকির হোসেন নামে আরেক ব্যবসায়ী জানান, আমার তত্ত্বাবধানে ১৮ জন সংগ্রহকারী কাজ করে। তাদের থেকে ডিম কিনে শৌখিন মাছ শিকারিদের কাছে বিক্রি করি। প্রতি কেজিতে ৫০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত লাভ হয়। প্রতিদিন ২০ থেকে ৪০ কেজি ডিম সংগ্রহ করে বিভিন্ন জেলায় পাঠাই।