Logo
Logo
×

নগর-মহানগর

অনেকে নিঃস্ব হতাশ অসুস্থ, ভেঙে গেছে নতুন সংসার

Icon

রংপুর ব্যুরো

প্রকাশ: ২৯ আগস্ট ২০২৩, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

অনেকে নিঃস্ব হতাশ অসুস্থ, ভেঙে গেছে নতুন সংসার

রংপুরে গ্রাহকের বিনিয়োগের প্রায় ৩ কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা এমটিএফই নামের কথিত এমএলএম কোম্পানি। এরপরই গা ঢাকা দিয়েছে এর সিইওসহ অন্য কর্মীরা। এতে আসল ও লাভের কোনোটাই ফেরত না পেয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন ৫ শতাধিক নারী-পুরুষ। প্রতারণার শিকার হয়ে অনেকে হতাশায় অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। কারও নতুন সংসার ভেঙে গেছে। এই বিনিয়োগের পেছনে পীরগাছা উপজেলার প্রগতি নামের একটি সমবায় সমিতির লোকজন জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগীরা এমটিএফই-এর প্রতারকদের চিহ্নিত করে গ্রেফতারসহ আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

জানা যায়, পীরগাছা উপজেলার নেকমামুদ, তাম্বুলপুর, কান্দি, ছাওলাসহ পীরগাছা, কাউনিয়াসহ রংপুরের বিভিন্ন এলাকায় খেটে খাওয়া শ্রমজীবী, ব্যবসায়ী, তরুণ উদ্যাক্তা, শিক্ষকসহ সাধারণ মানুষকে টার্গেট করে প্রতারণার ফাঁদ পাতে মাল্টিন্যাশনাল ক্রেডিট এমএলএম কোম্পানি এমটিএফই। তারা মাত্র ৬১ হাজার টাকা বিনিয়োগে প্রতিমাসে ২৫ হাজার টাকা করে লাভ দেওয়ার কথা বলে, যা ছিল পুরো মিথ্যা। এতে ৫ শতাধিক মানুষ লাভের আশায় বিনিয়োগ করেছেন। এজন্য কেউ বিক্রি করেছেন শখের মোটরসাইকেল, কেউ নিয়েছেন ব্যাংক থেকে ঋণ। কেউ আবার রেখেছেন জমি বন্দক, নয়তো গরু-ছাগল বিক্রি করেছেন। এখন আসল ও লাভ কোনোটাই না পেয়ে নিঃস্ব তারা। এতে অনেকের পরিবারে দেখা দিয়েছে অশান্তি। শেষ সম্বল হারিয়ে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। চরম হতাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন কেউ কেউ।

পীরগাছা উপজেলার নেকমামুদ এলাকার ভ্যানচালক সুরুজ জামান জানান, ২৫ হাজার টাকা ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে বিনিয়োগ করেছেন এমটিএফইতে। লাভ-আসল কোনোটাই না পাওয়ায় তার পরিবারে অশান্তি দেখা দেয়। তাকে ছেড়ে চলে গেছে তার নতুন বউ। এ কারণে মানসিক ও শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন তিনি।

একই এলাকার সুলতান হোসেন ও শহিদুল হকসহ কয়েকজন জানান, লাভের আশায় প্রগতি সমিতির লোকজনের কথায় বিশ্বাস করে এমটিএফইতে বিনোয়োগ করেছেন তারা। এজন্য অনেকেই ধারদেনা করেছেন। এখন সব টাকা হারিয়ে হতাশায় আচ্ছন্ন তারা।

হোসনে আরা নামের এক গৃহবধূ বলেন, এমটিএফইতে ৬১ হাজার টাকা বিনিয়োগ করে এখন সর্বস্বান্ত হয়েছি। স্বামী দিনমজুর, ছেলে মেয়ে পাঁচজন। সংসারে সচ্ছলতা ফেরানোর আশাই কাল হয়েছে আমার। এছাড়া আনোয়ারুল, রতন, স্বপন, নজরুল ইসলাম, সোহেল রানা, শেফালী বেগমসহ আরও অনেকে প্রতারিত হওয়ার কথা জানান।

ভুক্তভোগীরা জানান, এ প্রতারণার নেপথ্যে পীরগাছা উপজেলার প্রগতি নামের একটি সমবায় সমিতির কর্মীরা ইন্ধন দিয়েছে। প্রগতি সমিতির আমিনুল, সুজা, হজরত আলী ও সিরাজুলসহ কয়েকজন ফুসলিয়ে অনলাইনে টাকা বিনিয়োগ করিয়েছে। বর্তমানে অফিসে তালা ঝুলিয়ে পলাতক প্রগতির কর্মীরা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রগতি সমিতির সদস্য অভিযুক্ত সিরাজুল ইসলাম প্রথমে বিষয়টি অস্বীকার করেন। পরে অবশ্য দোষ চাপান সমিতির সিইও আমিনুলসহ আরও দুজনের ওপর। তিনি বলেন, আমার মাধ্যমে কোনো লেনদেন হয়নি। এখানে মূল ব্যক্তি তিনজন-সিইও আমিনুল, কামিং সিইও সুজা আর হযরত আলী। তারাই টাকা নেওয়া থেকে শুরু করে সবকিছু করেছে। আমরা সেমিনারের মাধ্যমে এমটিএফই সম্পর্কে জানতে পারি।

এ ব্যাপারে পীরগাছা থানার ওসি মাসুমুর রহমান বলেন, এমটিএফই-এর প্রতারণার শিকার হয়েছে এমন কারও কোনো অভিযোগ এখনো পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম