যুগান্তর-বিপিএ-সিআরপি গোলটেবিল বৈঠক
ফিজিওথেরাপি চিকিৎসায় সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা জরুরি
ফিজিওথেরাপি সেন্টারগুলোর ৯০ শতাংশই অবৈধ
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২১ আগস্ট ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
যুগান্তর কার্যালয়ে রোববার যুগান্তর, সিআরপি ও বাংলাদেশ ফিজিওথেরাপি অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত ‘রিহ্যাবিলিটেশন আইন ও বাস্তবায়ন’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান, সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু ও যুগান্তর সম্পাদক সাইফুল আলমসহ আলোচক ও অতিথিরা -যুগান্তর
স্বাধীনতা যুদ্ধে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা এবং দেশের আপামর জনসাধারণের রিহ্যাবিলিটেশন চিকিৎসাসেবা বঙ্গবন্ধুই সর্বপ্রথম নিশ্চিত করেছেন। ১৯৭২ সালে বাংলাদেশে ‘রিহ্যাবিলিটেশন ইনস্টিটিউট অ্যান্ড হসপিটাল ফর ডিজেবল্ড’ প্রতিষ্ঠা করেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধুর হাত ধরেই স্নাতক পর্যায়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিজিওথেরাপি শিক্ষা ১৯৭২-৭৩ শিক্ষাবর্ষ চালু হয়। আজ ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
বর্তমান সরকার ২০১৮ সালের ৭১নং আইন ‘বাংলাদেশ রিহ্যাবিলিটেশন কাউন্সিল আইন’ জাতীয় সংসদে পাশ করে। কিন্তু আজও এ আইনের অধীনে পেশাজীবী নিবন্ধন, পেশাজীবীদের মধ্য থেকে রেজিস্ট্রার নিয়োগ, লাইসেন্স প্রদান, শিক্ষা কার্যক্রমের স্বীকৃতি ও অনুমোদন, শিক্ষা বা সেবা প্রতিষ্ঠান অনুমোদনের মতো কোনো কার্যক্রমই দৃশ্যমান হয়নি। ফিজিওথেরাপি সেন্টারগুলোর ৯০ শতাংশই অবৈধ। ফিজিওথেরাপি চিকিৎসাকে গুরুত্ব দিয়ে সাধারণ মানুষকে সেবা দেওয়া নিশ্চিত করতে হবে। একই সঙ্গে এ চিকিৎসাকে যথাযথ কার্যকর করতে সরকারি-বেসরকারি সব উদ্যোগ বাস্তবায়ন করতে হবে।
রোববার বিকালে যুগান্তর, বাংলাদেশ ফিজিওথেরাপি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ) এবং সেন্টার ফর দ্য রিহ্যাবিলিটেশন অব দ্য প্যারালাইজড (সিআরপি)’র যৌথ উদ্যোগে ‘রিহ্যাবিলিটেশন আইন ও বাস্তবায়ন’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এসব কথা বলেন।
যুগান্তর কার্যালয়ে বিশ্ব ফিজিওথেরাপি দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত ওই গোলটেবিল বৈঠকে মন্ত্রী, দেশের শীর্ষ চিকিৎসক, গবেষক, গণমাধ্যমকর্মী ও নীতিনির্ধারকরা বক্তব্য দেন। তারা ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা যথাযথ বাস্তবায়ন ও সেবা নিশ্চিত করার গুরুত্ব তুলে ধরেন। একই সঙ্গে ফিজিওথেরাপি চিকিৎসাবিষয়ক প্রতিবেদন করার ব্যাপারে গণমাধ্যমকর্মীদের আহ্বান জানান।
পক্ষাঘাতগ্রস্তদের পুনর্বাসন কেন্দ্র সিআরপি গত ৪০ বছর বিরামহীনভাবে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের পুনর্বাসন সেবায় কাজ করছে। সিআরপি’র একটি বৃহৎ বিভাগ হচ্ছে ফিজিওথেরাপি বিভাগ।
গোলটেবিল বৈঠকটি সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ ফিজিওথেরাপি অ্যাসোসিয়েশনের কনসালট্যান্ট ডা. ফারজানা শারমিন।
পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান : গোলটেবিল বৈঠকে পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান বলেন, ‘মানুষকে সুস্থ থাকতে হবে। এজন্য নিশ্চয় যথাযথ চিকিৎসার প্রয়োজন। আমি নিজেও ফিজিওথেরাপি সেবা নিচ্ছি। দেশে মানুষ বিভিন্ন সময় শারীরিক ব্যথা-বেদনার শিকার হচ্ছেন। এদের চিকিৎসায় একটি সুনির্দিষ্ট চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে হবে। নতুবা কর্মক্ষমতা হারাবে অসংখ্য মানুষ। আমাদের শহর থেকে গ্রামাঞ্চলে এমন রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা শত শত। এসব সাধারণ মানুষের জন্য ফিজিওথেরাপিবিষয়ক চিকিৎসা প্রদানে পর্যাপ্ত সেন্টার এবং দক্ষ চিকিৎসক-জনবল নিশ্চিত করতে হবে। তবে বর্তমান সরকার এ বিষয় বাস্তবায়নে কাজ করছে। চিকিৎসাসেবায় সরকার সব ধরনের ব্যবস্থা করছে। সরকার কমিউনিটি ক্লিনিক তৈরি করে ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছে। কিন্তু একটি সরকার তা বন্ধ করে দেয়। বর্তমান সরকার তা আবার চালু করে এই ক্লিনিক সেবা সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিয়েছে। যেখানে সাধারণ মানুষের ৯০ শতাংশ চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে।’
মন্ত্রী এমএ মান্নান আরও বলেন, ‘তবে আমি মনে করি চিকিৎসাসেবায় আরও প্রতিষ্ঠান স্থাপন করা জরুরি। আমরা করছিও তাই। আমরা বিশ্বাস করি মানুষের মৌলিক চাহিদার অন্যতম হচ্ছে চিকিৎসা। যে কোনো চিকিৎসা প্রদানে অনিয়ম-দুর্নীতি রুখতে সম্মিলিত প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। ফিজিওথেরাপি সেন্টারগুলো নিয়মতান্ত্রিকভাবে পরিচালনা করতে হবে। অবৈধ সেন্টারগুলো চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমার সুনামগঞ্জ হাওড় এলাকায় আমি নিজেই জমি দেব, সেখানে একটি অত্যাধুনিক ফিজিওথেরাপি সেবাকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা হবে। এটা বাস্তবায়নে আমি আহ্বানও জানিয়েছি। সাধারণ মানুষের উন্নয়নে কাজ করতে হবে। এদের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে হবে। আমি আমার এলাকায় ৫০০ বেডের একটি হাসপাতাল করছি যার ৮০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। আমি খুব কাছ থেকে দেখছি, আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিক্ষা-স্বাস্থ্য খাতে ব্যাপক উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, মানুষের কল্যাণে যা করা দরকার তা করতে হবে। স্থাপনা তৈরি করেন, মানুষ ঠিকই আসবে, সেবা নেবে, উপকৃত হবে।’
সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু : বৈঠকে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু বলেন, “মহান মুক্তিযুদ্ধে যেসব মুক্তিযোদ্ধা-সাধারণ মানুষ পঙ্গুত্ববরণ করেছেন, সেসব মানুষকে চিকিৎসা দিতে বঙ্গবন্ধু মরিয়া হয়ে ওঠেন। ওই সময় বঙ্গবন্ধু যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের জার্মানিসহ বিভিন্ন দেশে চিকিৎসার জন্য পাঠান। এরই ধারাবাহিকতায় বঙ্গবন্ধুই সর্বপ্রথম ফিজিওথেরাপি চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে ১৯৭২ সালে বাংলাদেশে ‘রিহ্যাবিলিটেশন ইনস্টিটিউট অ্যান্ড হসপিটাল ফর ডিজেবল্ড’ প্রতিষ্ঠা করেন। বঙ্গবন্ধুর হাত ধরেই স্নাতক পর্যায়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিজিওথেরাপি শিক্ষা ১৯৭২-৭৩ শিক্ষাবর্ষ চালু হয়। আজ ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।”
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ রিহ্যাবিলিটেশন কাউন্সিল আইন’ যথাযথ বাস্তবায়নে আমরা কাজ করছি। বর্তমান সরকার এ চিকিৎসাকে সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য সব ধরনের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে। এদিকে আমরা যখন ঘোষণা দিলাম-সারা বাংলাদেশে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের স্কুল করব। তখন রাতারাতি বিভিন্ন উপজেলা-ইউনিয়নে ৩-৪টি করে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের স্কুল হয়ে গেছে। সেগুলো করছে কে? শিক্ষিত মানুষরাই। এখন এগুলো লাগামে আনতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এদিকে সারা দেশ ফিজিওথেরাপি সেন্টারে ছেয়ে গেছে। নিশ্চয় এসব সেন্টারের বেশিরভাগই অবৈধ। সংশ্লিষ্টরা দেখেও চ্যালেঞ্জ করছে না। আইন আছে কিন্তু আইনের প্রতি কেউই শ্রদ্ধাশীল নয়।
যুগান্তর সম্পাদক সাইফুল আলম : বৈঠকের শুরুতে যুগান্তর সম্পাদক ও জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম বলেন, একজন মানুষ যখন অসুস্থ হয়ে শারীরিকভাবে চলাফেরা করতে অক্ষম হয়ে পড়েন, তখন ফিজিওথেরাপি সেবার বিশেষ দরকার হয়। বাংলাদেশ ফিজিওথেরাপি অ্যাসোসিয়েশনের সনদধারী দক্ষ চিকিৎসকরা সেই কাজটি করে থাকেন। আমি মনে করি, মানব কল্যাণেই তারা কাজ করছেন। এজন্য তাদের সাধুবাদ জানাই। তবে এক্ষেত্রে গণমাধ্যমকর্মীদেরও দায়িত্ব রয়েছে। সেটা হলো, আপনাদের কাজ ও কাজের মূল্যায়ন লেখনীর মাধ্যমে সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া। বাংলাদেশ ফিজিওথেরাপি অ্যাসোসিয়েশন ভালো কাজ করছে। যুগান্তর সব সময় ভালো কাজের সঙ্গে আছে এবং থাকবে। আপনাদের পাশেও সব সময় থাকবে।
ডা. জামাল উদ্দিন চৌধুরী : স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি ডা. জামাল উদ্দিন চৌধুরী বলেন, এমবিবিএস ডিগ্রি ছাড়া যে কারও চিকিৎসক পদবি ব্যবহার করা উচিত নয়। তবে উচ্চ আদালত যদি ডাক্তার পদবি লেখার অনুমতি দেন সেটি সবাইকে মানতে হবে। আমি বাংলাদেশ ফিজিওথেরাপি কাউন্সিলে কাজ করছি বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের একজন প্রতিনিধি হিসাবে। কিন্তু করোনার ২ বছর ছাড়াও পরবর্তী বছরগুলোতে এই কাউন্সিলের তেমন কাজ দেখিনি। কারণ এখন পর্যন্ত এই কাউন্সিলের রেজিস্ট্রার নিয়োগ হয়নি। মন্ত্রণালয়ের একজন যুগ্মসচিব দিয়ে কাজ করছে। এর প্রধান সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব যিনি ভীষণ ব্যস্ত।
ডা. সাহাদৎ হোসেন : বাংলাদেশ ফিজিওথেরাপি অ্যাসোসিয়েশনের (বিপিএ) সাধারণ সম্পাদক ডা. সাহাদৎ হোসেন বলেন, বাংলাদেশ রিহ্যাবিলিটেশন কাউন্সিল আইন বাস্তবায়নে বিপিএ শুরু থেকেই জোরালো ভূমিকা পালন করে আসছে। কাউন্সিল গঠন প্রক্রিয়ায় জনমত গঠন, স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে অ্যাডভোকেসি ও সরকারকে তথ্য-উপাত্ত দিয়ে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। ২০১৮ সালে বিপিএ’র আয়োজনে প্রথম আন্তর্জাতিক রিহ্যাবিলিটেশন পেশাজীবী সম্মেলন করা হয়েছে। সেখানে প্রধান অতিথি ছিলেন তৎকালীন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। সম্মেলনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রীর কন্যা, অটিজম ও স্নায়বিক বিকাশ সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি সায়মা ওয়াজেদ। তিনি সম্মেলনে দেশের সব রিহ্যাবিলিটেশন পেশাজীবীদের নিয়ে কাউন্সিল গঠনে গুরুত্বারোপ করেন।
ডা. ফিরোজ কবির : যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিজিওথোরপি ও রিহ্যাবিলিটেশন বিভাগের চেয়ারম্যান ডা. ফিরোজ কবির বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালে বাংলাদেশে ‘রিহ্যাবিলিটেশন ইনস্টিটিউট অ্যান্ড হসপিটাল ফর ডিজেবেল্ড’ প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমানে যেটি জাতীয় অর্থোপেডিকস হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান নামে পরিচিত। ১৯৯৮ সালে প্রধানমন্ত্রীর হাত ধরে বাংলাদেশে কলেজ অব ফিজিওথেরাপি প্রতিষ্ঠার কাজ শুরু হয়। ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় এসে সেটি বাতিল করে। ২০০৯ সালে ফের শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর তৎকালীন স্বাস্থ্যমন্ত্রী বাংলাদেশে কলেজ অব ফিজিওথেরাপি প্রতিষ্ঠার কাজ এগিয়ে নেন। ২০১০ সালে মহাখালীতে ভিত্তিপ্রস্তর উন্মোচন করা হলেও সেটি আজ পর্যন্ত হয়নি। ২০১৮ সালে রিহ্যাবিলিটেশন কাউন্সিল আইন পাশ হলেও কোনো কাজ হচ্ছে না। দেশে শত শত ভুয়া ফিজিওথেরাপি সেন্টার অপচিকিৎসা দিলেও তাদের ঠেকানো যাচ্ছে না।
ডা. আলতাফ হোসেন সরকার : বাংলাদেশ ফিজিওথেরাপি অ্যাসোসিয়েশনের উপদেষ্টা ডা. আলতাফ হোসেন সরকার বলেন, ‘যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য রিহ্যাবিলিটেশন ইনস্টিটিউট অ্যান্ড হসপিটাল ফর ডিজেবল্ড’ চালু করা হয়। তখন ভারতীয় একজন চিকিৎসক গ্রাস্ট এই সেবায় মুখ্য ভূমিকা পালন করেন। বর্তমানে এই চিকিৎসার প্রসার ঘটেছে। পোস্ট কোভিড, পোস্ট চিকুনগুনিয়াসহ নানা কারণে অসংখ্য মানুষ শারীরিক ব্যথায় ভুগছেন। প্রত্যেক সিনিয়র সিটিজেনের এই চিকিৎসা দরকার। কারণ অনেকে ব্যাক পেইন, শোল্ডার পেইনসহ নানা সমস্যায় প্রতিবন্ধী অবস্থায় জীবনযাপন করছেন। কিন্তু সেবাটি এখনো গ্রামগঞ্জে পৌঁছানো যায়নি। অনেকে সেবাটির নামে প্রতারণা করছে। সঠিক চিকিৎসা দিতে পারছে না। এ বিষয়ে আইন রয়েছে সেটার বাস্তব প্রয়োগ করতে হবে।
সাংবাদিক মোহসীন-উল-হাকিম : ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা বিষয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে গণমাধ্যমে এর প্রচার-প্রচারণা আরও বাড়াতে হবে জানিয়ে যমুনা টিভির বিশেষ প্রতিনিধি মোহসীন-উল-হাকিম বলেন, পেশাগত কাজ করতে গিয়ে দেখেছি, পক্ষাঘাতগ্রস্ত মানুষের দুঃখ-কষ্ট। সবচেয়ে বড় সমস্যাটি হচ্ছে, এ নিয়ে যথাযথ চিকিৎসা মিলছে না। মানুষ এ চিকিৎসায় বিশ্বাসী হয়ে উঠছে না। এক্ষেত্রে যে পরিমাণ সচেতনতামূলক সংবাদ প্রচার-প্রচারণা প্রয়োজন তা হচ্ছে না।
সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে দায়িত্ব পালনে রয়েছে যথেষ্ট ঘাটতি। আবার এই ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা নিয়ে নানা ধরনের অপচিকিৎসাও হচ্ছে। এতে সাধারণ মানুষ আরও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
আবুল খায়ের চৌধুরী : যুগান্তরের সিনিয়র জিএম (বিজ্ঞাপন) আবুল খায়ের চৌধুরী বলেন, একজন ব্যক্তির কাছে কোনো রোগের চিকিৎসার গুরুত্ব তখন বাড়ে, যখন তিনি নিজে অথবা তার পরিবারের কোনো সদস্য আক্রান্ত হন। সেজন্য আমি আহ্বান জানাব, আজকের আলোচনায় যেসব দাবি ও পরামর্শগুলো উঠে এসেছে, নীতিনির্ধারকদের মাধ্যমে সেগুলো যেন দ্রুত বাস্তবায়ন হয়। এছাড়াও বৈঠকে বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ডিএনএ ল্যাবরেটরি ম্যানেজমেন্টের মহাপরিচালক ডা. এএম পারভেজ রহিম, রিহ্যাবিলিটেশন কাউন্সিলের রেজিস্ট্রার ও যুগ্মসচিব মেহেদী হাসান, বাংলাদেশ ফিজিওথেরাপি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, যুগান্তরের চিফ রিপোর্টার মাসুদ করিম প্রমুখ।