বাগেরহাটে ভেসে গেছে ৪ সহস্রাধিক চিংড়ি ঘের
শওকত আলী বাবু, বাগেরহাট
প্রকাশ: ১০ আগস্ট ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
টানা বৃষ্টি ও প্রবল জোয়ারের পানিতে বাগেরহাটের চার হাজার চিংড়ির ঘের ভেসে। এতে চিংড়ি চাষিদের প্রায় দুই কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। বেসরকারি হিসাবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও বেশি বলে দাবি করছেন চাষিরা। ফলে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন চাষিরা। তবে এবারের বৃষ্টিতে কৃষিক্ষেত্রে তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি। এদিকে বুধবার সকাল থেকে বৃষ্টি না হওয়ায় অনেক এলাকার পানি কমে গেছে। ফলে জলাবদ্ধতার শিকার পরিবারের সংখ্যাও কমেছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।
বাগেরহাট জেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, কয়েকদিনের বৃষ্টিতে জেলায় ৪ হাজার ২৩০টি চিংড়ি মাছের ঘের ভেসে গেছে। এতে চাষিদের ১ কোটি ৭৮ লাখ ৪ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে বাগেরহাট সদর উপজেলায় ৩৭৫টি, কচুয়ায় ৬৪০টি, শরণখোলায় ১০০টি, রামপালে ১ হাজার ৫৪০টি, মোরেলগঞ্জে ৮৫৫টি এবং মোংলায় ৭২০টি ঘেরের মাছ ভেসে যায়। সব মিলিয়ে ৩ হাজার ৮২৫ একর জমিতে থাকা ঘেরের ক্ষতি হয়েছে। তবে মৎস্য অধিদপ্তরের তথ্যের বাইরেও বেশকিছু ঘের ও পুকুরের মাছ ভেসে গেছে বলে দাবি মৎস্য চাষিদের।
বাইনতলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফকির আব্দুল্লাহ বলেন, পানিতে অনেকেরই ঘের তলিয়ে গেছে। কারও কারও ঘেরের বেরি ভেঙে গেছে। আমার নিজের ঘেরও তলিছে। এক কথায় আমার ইউনিয়নের মাছ চাষিরা বেশ বিপদে পড়েছে বৃষ্টিতে। বাসতলী এলাকার ঘের চাষি সাবেক উপজেলার পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ আবু সাইদ বলেন, বৃষ্টির পানিতে সব একাকার। পানি মাঠ থেকে নামতে পারেনি, কারণ নদী-খাল পানিতে পরিপূর্ণ, যার ফলে ঘেরগুলোর অনেক ক্ষতি হয়েছে। আমার সবগুলো ঘের ডুবে গেছে।
এদিকে মঙ্গলবার দুপুর থেকে বৃষ্টি না থাকায় পানি কমতে শুরু করেছে। বুধবার সকাল থেকে উপকূল জুড়ে রোদ, উজ্জ্বল আবহাওয়া বিরাজ করায় অনেক চাষি তাদের অবশিষ্ট মাছ আটকাতে ঘেরের বাঁধ মেরামতের কাজ শুরু করেছেন। বিভিন্ন সড়কের ওপর থাকা পানি নেমে গেছে। জলাবদ্ধতার শিকার পরিবারের সংখ্যাও কমেছে বলে জানিয়েছেন জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাসুদুর রহমান। তিনি বলেন, সোমবার পর্যন্ত ৭ হাজার ৫১০টি পরিবার পানিবন্দি ছিল। সকাল থেকে বৃষ্টি না হওয়ায়, অনেক এলাকার পানি নেমে গেছে। বিকাল পর্যন্ত ৫ হাজার ৩৬৩টি পরিবার পানিবন্দি ছিল। বর্তমানে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে এসেছে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এএসএম রাসেল বলেন, প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, বৃষ্টির পানিতে জেলার ৪ হাজার ২৩০টি ঘেরের ক্ষতি হয়েছে। এতে আমাদের চাষিদের ১ কোটি ৭৮ লাখ ৩৪ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন উপজেলা থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত চাষিরা যাতে পুনরায় মাছ চাষ করে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারে সেজন্য পরামর্শ প্রদান করা হয়েছে।