Logo
Logo
×

নগর-মহানগর

সিলেট সিটি নির্বাচন

ভোটযুদ্ধে বিএনপির অর্ধশত নেতা

Icon

সংগ্রাম সিংহ, সিলেট

প্রকাশ: ২৩ মে ২০২৩, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

ভোটযুদ্ধে বিএনপির অর্ধশত নেতা

সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচন বর্জনের ব্যাপারে বিএনপির হাইকমান্ড যতটুকু না কঠোর, তার চেয়েও বেশি কঠোর স্থানীয় বিএনপি নেতারা। দল থেকে চিরতরে বহিষ্কারসহ কোনো হুমকিই তাদের নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া থেকে বিরত রাখা যাচ্ছে না। ভোটের মাঠে তারা খুবই সিরিয়াস। জেলা-মহানগরের নেতারা শত চেষ্টার পরও তাদের বাগে আনতে পারছেন না। নির্বাচন বর্জনের আহ্বানে সাড়া না দিয়ে উলটো তারা ভোটযুদ্ধে নেমেছেন। তাদের মধ্যে জেলা ও মহানগর বিএনপি নেতা, মহিলা দল ও ছাত্রদলের নেতাসহ প্রায় অর্ধশত ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী হয়েছেন। দায়িত্বশীল ৩২ নেতাকে (প্রার্থী) সতর্কতার চূড়ান্ত চিঠি দিয়েছিল বিএনপি। কিন্তু সেই চিঠি আমলে নিচ্ছেন না তারা।

জেলা ও মহানগর বিএনপির দাবি-সোমবার পর্যন্ত ছয়জন কাউন্সিলর প্রার্থী নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। জেলা বিএনপির সভাপতি কাইয়ুম চৌধুরী ও মহানগর বিএনপির সভাপতি নাসিম হোসাইন জানান, এরমধ্যে তিনজন ইতিমধ্যে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছেন। নির্বাচন বর্জনকারী তালিকায় রয়েছেন- ৪নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক রেজাউল হাসান কয়েস লোদী, ২২নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও বিএনপির সভাপতি সৈয়দ মিসবাহ উদ্দিন, ৯নং ওয়ার্ডে বিএনপির সভাপতি আমির হোসেন, জেলা বিএনপির শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান হাবিব, ৩২নং ওয়ার্ডের দিনার খান হাসু, ১৯নং ওয়ার্ডের বজলুর রহমান ফয়েজ এবং ৪২নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ সুরমা উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক বজলুর রহমান।

সোমবার রাতে মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী যুগান্তরকে জানান, ১১ প্রার্থী নির্বাচন বর্জনের ব্যাপারে অনেকটা একমত হয়েছেন। তবে তিনি তাদের নাম জানাননি। আগামীতে নির্বাচন বর্জনকারীর সংখ্যা আরও বাড়বে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

দলীয় নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে কাউন্সিলর প্রার্থী হচ্ছেন- ৪নং ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর ও মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক রেজাউল হাসান কয়েস লোদী, ৬নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ফরহাদ চৌধুরী শামীম, ১নং ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর ও মহানগর বিএনপির সাবেক সদস্য সৈয়দ তৌফিকুল হাদী, ১৪নং ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর ও মহানগর বিএনপির সাবেক সদস্য নজরুল ইসলাম মুনিম, ১৮নং ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর ও মহানগর বিএনপির সাবেক সদস্য জিল্লুর রহমান উজ্জ্বল, ২১নং ওয়ার্ডে মহানগর বিএনপির সাবেক সদস্য আবদুর রকিব তুহিন, ২৫নং ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর ও মহানগর মহিলা দলের সাবেক আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট রোকশানা বেগম শাহনাজ, ২৫নং ওয়ার্ডের জেলা বিএনপির উপদেষ্টা ও মহানগর বিএনপির সাবেক সদস্য সেলিম আহমদ রনি, ২৯নং ওয়ার্ডে গোলাম মোস্তফা কামাল, ৪২নং ওয়ার্ডে জেলা যুবদল নেতা সুমন সিকদার, ৪০নং ওয়ার্ডে সাবেক ছাত্রদল নেতা আবদুল হাসিব, ৩৯নং ওয়ার্ডে জেলা ছাত্রদলের সভাপতি আলতাফ হোসেন সুমন, ৩৮নং ওয়ার্ডে মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক উসমান হারুন পনির, ৩৭নং ওয়ার্ডে উপজেলা বিএনপি নেতা দিলওয়ার হোসেন জয়, ৩৩নং ওয়ার্ডে জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক দিলওয়ার হোসেন নাদিম, ৩৩নং ওয়ার্ডে জেলা বিএনপির উপদেষ্টা গৌস উদ্দিন পাখি এবং সদর উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক কামাল আহমদ, ৩২নং ওয়ার্ডে মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক সৈয়দ মিছবাহ উদ্দিন এবং জেলা বিএনপির শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান হাবিব, ২৩নং ওয়ার্ডে মহানগর বিএনপি নেতা মামুনুর রহমান মামুন, ১৯নং ওয়ার্ডে মহানগর বিএনপি নেতা দিনার খান হাসু এবং সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে জেলা মহিলা দলের সভাপতি সালেহা কবির শেপী।

ভোটের মাঠ চষে বেড়ানো সিলেট বিএনপির একাধিক নেতানেত্রীর সঙ্গে যুগান্তরের কথা হয়। ফরহাদ চৌধুরী শামীম বলেন, আমি পাঁচবার কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছি। নির্বাচন ছাড়া আমার পালানোর কোনো রাস্তা নেই।

জেলা মহিলা দলের সভানেত্রী ও জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট রোকশানা বেগম শাহনাজ বলেন, তার মাঠের অবস্থা ভালো। অনেক কষ্টে এ মাঠ গুছিয়েছি। বর্তমান সিটি কাউন্সিলর শাহনাজ আরও বলেন, আমার এলাকাবাসী আমাকে নির্বাচনে যেতে বাধ্য করেছেন। এতে দলের নির্দেশনা কিছুটা লঙ্ঘন করতেই হচ্ছে। আশা করি বিষয়টি দলও বুঝবে।

জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক কাউন্সিলর সালেহা কবির শেপী বলেন, হঠাৎ বলা হচ্ছে- প্রার্থী হওয়া যাবে না। এটা কী ভোটার মেনে নেবে? এদিকে, শুধু বিএনপি নয়, নির্বাচন বর্জন আন্দোলনের সমমনা জামায়াত অনুসারী প্রার্থীরাও মাঠে সিরিয়াস। ২নং ওয়ার্ডে সাবেক কাউন্সিলর রাজিক আহমদ ও ১৬নং ওয়ার্ডে বর্তমান কাউন্সিলর আব্দুল মুহিত জাবেদসহ প্রায় এক ডজন জামায়াত অনুসারী সাধারণ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে প্রার্থী হয়েছেন। তাদের মধ্যে কয়েকজন প্রার্থী নৌকার প্রার্থী ও আওয়ামী লীগের নেতাদের সান্নিধ্যে থাকছেন প্রায় সময়। নৌকার প্রার্থীর সঙ্গে জাবেদের কয়েকটি ছবি ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম