Logo
Logo
×

নগর-মহানগর

২৯ বছর ধরে একই দাম

বাগাতিপাড়ায় লালনের দোকানে ১ টাকার চা

Icon

বাগাতিপাড়া (নাটোর) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ৩১ মার্চ ২০২৩, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

বাগাতিপাড়ায় লালনের দোকানে ১ টাকার চা

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির এ বাজারে অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি এখনো এক কাপ চায়ের দাম ১ টাকা, এক খিলি পান ১ টাকা। বর্তমান বাজারে এক কাপ চা অথবা একটা পানের সর্বনিম্ন মূল্য ৫ টাকা। কিন্তু নাটোরের বাগাতিপাড়ায় এক দোকানে এখনো পাওয়া যায় ১ টাকা দামের চা ও ১ টাকার পান। উপজেলার ফাগুয়াড়দিয়াড় ইউনিয়নের নওপাড়ার রজব আলী ব্যাপারী ওরফে লালন (৪৫) এখনো এ দামে চা-পান বিক্রি করেন। ২৯ বছর ধরে এ দামেই বিক্রি করছেন তিনি। মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে দাম বাড়াননি লালন। এত কম দামে চা ও পান বিক্রি করে এরই মধ্যে সাড়া ফেলেছেন। কৌতূহল থেকেই ছুটির দিনগুলোতে বিকালে লালনের দোকানে ভিড় জমান বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা মানুষ। তবে রমজানে ইফতারের পর বেশি ভিড় হয় তার দোকানে। অন্য সময় বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত প্রতিদিন প্রায় পাঁচশ থেকে দেড় হাজার লোক চা খেতে আসেন। লালন জানান, ১৯৯১ সালে তিনি চা-পান বিক্রির ব্যবসা শুরু করেন। সে সময় তিনি ৫০ পয়সায় এক কাপ চা ও একই দামে একটি পান বিক্রি করতেন। তখন এ মোড়ের নাম ছিল ‘নওপাড়া মোড়’। ১৯৯৪ সালে তা বাড়িয়ে প্রতি কাপ চা ও পানের দাম এক টাকা করেন। তার এ এক টাকায় চা-পান বিক্রির সুবাদে মোড়টির নাম এখন ‘১ টাকার মোড়’ নামে পরিচিতি পেয়েছে। তার দোকানের এ চা ও পান খেতে বাংলাদেশের প্রায় সব জেলা থেকেই মানুষ এসেছে। এমনকি সুইজারল্যান্ডের পর্যটকরাও এ চা ও পান খেয়ে গেছেন। তিনি প্রতিদিন ১২শ থেকে ১৩শ কাপ চা এবং ৮শ-৯শ পান বিক্রি করেন।

তিনি বলেন, যদিও বর্তমান বাজারে চিনি, চা পাতার দাম বেড়েছে তবু মানুষের যে ভালোবাসা পেয়েছি, এখনো পাচ্ছি তাতে বেঁচে থাকা পর্যন্ত দাম বাড়ানোর আর ইচ্ছা নেই। পৈতৃক সূত্রে পাওয়া পাঁচ বিঘা জমি আর এ ব্যবসা দিয়ে দুই সন্তানের পরিবার খেয়ে-পরে চলে যায়।

ক্রেতারা জানান, লালনের দোকানের চা অন্য দোকানের চেয়ে স্বাদে-গুণে কোনো অংশেই কম নয়। তার এই এক টাকার চায়ের খবর অনেক দূর পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে। অনেকে দূর-দূরান্ত থেকে তার দোকানে চা-পান খেতে আসেন।

চা খেতে আসা পেড়াবাড়িয়া দাখিল মাদরাসার সুপারিনটেনডেন্ট শামসুল আরেফিন জানান, তিনি প্রায় প্রতিদিনই এ দোকানে বসে এক টাকার চা খান। লালন সকালের দিকে মাঠে শ্রম দেন আর বিকাল থেকে শুরু হয় তার চা বিক্রি। তবে এত কম দামে আর কোথাও চা বিক্রি করতে দেখেননি তিনি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিলুফা সরকার বলেন, সম্প্রতি তিনি এ উপজেলায় যোগদান করলেও ইতোমধ্যে এক টাকায় চা বিক্রির খবর শুনেছেন। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে লালনের প্রতি তিনি শুভকামনা জানান।

 

Jamuna Electronics
wholesaleclub

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম