ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েতে একের পর এক দুর্ঘটনা
![Icon](https://cdn.jugantor.com/uploads/settings/icon_2.jpg)
আরিফ উল ইসলাম, মুন্সীগঞ্জ
প্রকাশ: ২৫ মার্চ ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
![ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েতে একের পর এক দুর্ঘটনা](https://cdn.jugantor.com/assets/news_photos/2023/03/25/image-658318-1679714981.jpg)
দেশের আধুনিক সড়ক পথ ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে। কিন্তু এই সড়কেই প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। এতে অকালে ঝড়ে পড়ছে প্রাণ। পঙ্গুত্ব বরণ করে পরিবারের বোঝা হচ্ছেন অনেকে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নির্দিষ্ট গতিসীমা উপেক্ষা করে যানবাহন চলাচল করার কারণেই দুর্ঘটনা ঘটছে। গতিসীমা মেনে যান চালানোর আইন থাকলেও তা চালকরা মানছেন না। স্থানীয় প্রশাসন বলছে, হাইওয়ে পুলিশ নির্দিষ্ট জায়গায় মেশিন ও চেকপোস্ট বসিয়ে গতি নিয়ন্ত্রণ করলেও ওই জায়গা পার হয়েই চালকরা বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। তাই দুর্ঘটনা রোধ করা সম্ভব হচ্ছে না। আর এই সড়কে চলাচলকারীরা জানান, সামনে ঈদ। এ উপলক্ষ্যে সড়কে যানবাহনের চাপ কয়েকগুণ বাড়বে। দুর্ঘটনা রোধে এখনই ব্যবস্থা গ্রহণ করতে না পারলে ওই সময়ে বড় ধরনের বিপর্যয়ের মুখে পড়তে হতে পারে।
গত বছর জুনে উদ্বোধনের পর পদ্মা সেতুতে দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেলের দুই আরোহী নিহত হন। এরপরই সেতুর ওপর দিয়ে মোটরসাইকেল চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করে কর্তৃপক্ষ। ইতোমধ্যে সেতুতে যান চলার গতি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হলেও ঢাকা থেকে মাওয়া এবং জাজিরা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ৫৫ কিলোমিটারে গতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি। এজন্য পরিবহণ মালিকদের গাফিলতিও রয়েছে। তারা চালকদের কড়া নির্দেশনা দিলে গতি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হতো। কিন্তু তারা তা করছেন বলে মনে হয় না। এ ছাড়া সড়ক সংশ্লিষ্টদের পক্ষ থেকেও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেই। এ কারণেই ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে এখন দুর্ঘটনাপ্রবণ সড়ক হয়ে উঠছে।
এক্সপ্রেসওয়ের মুন্সীগঞ্জ অংশে ৫ মাসে দুর্ঘটনায় মোট ১৬ জন নিহত ও শতাধিক আহত হয়েছেন। পঙ্গুত্ববরণ করেছেন অনেকে। ২০ মার্চ শিবচরের কুতুবপুর এলাকায় বাস খাদে পড়ে ১৯ জন মারা গেছেন। আহত হয়েছেন অনেকে। এর আগে ১৮ মার্চ এক্সপ্রেসওয়েতে পৃথক তিন সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান ৪ জন। ১৯ নভেম্বর এক্সপ্রেসওয়ের সমষপুর এলাকায় ট্রাক-বাসের সংঘর্ষে ১ চালক নিহত হন। ২৮ নভেম্বর সিরাজদিখানে দুই বাসের সংঘর্ষে ১ জন নিহত ও ৩ জন আহত হন। ১৮ ডিসেম্বর পদ্মা সেতু উত্তর থানার সামনে দুই বাসের সংঘর্ষে ২ জন নিহত ও ৫ জন আহত হন। ২৪ ডিসেম্বর দুই বাসের সংঘর্ষে ৫ জন আহত হন। ২৮ ডিসেম্বর ৩ জন নিহত ও ২ জন আহত হন। ৩০ ডিসেম্বর দুই বাসের সংঘর্ষে ৫ জন আহত ও ২ জানুয়ারি ষোলঘরে ৫ জন আহত হন। ১৭ জানুয়ারি হাসাড়ায় গাড়ির চাপায় প্রভাষক নিহত হন। ২২ জানুয়ারি বাস উল্টে একজন নিহত ও ৩ জন আহত হন। ৪ ফেব্রুয়ারি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১জন নিহত ও ৩ জন আহত হন। ১০ ফেব্রুয়ারি দুই বাসের সংঘর্ষে ১ জন নিহত ও ২ জন আহত হন। ৮ মার্চ দুর্ঘটনায় ১ জন নিহত ও ১ জন আহত হন। ১৯ মার্চ দুই বাসের সংঘর্ষে ৫ জন আহত হন। আর ১৮ মার্চ পৃথক দুর্ঘটনায় নিহত হন ৪ জন। বাসচালক কাদির মিয়া জানান, দুর্ঘটনার জন্য অনেক সময় আমরা চালকরাই দায়ী। বড় ও ফ্রি রোড পেলে আমরা বেপরোয়া হয়ে উঠি। গতিসীমার তোয়াক্কা করি না। এখই এই সড়ককে সিসি ক্যামেরার আওতায় আনতে হবে। তবেই দুর্ঘটনা রোধ করা সম্ভব। পদ্মা সেতু উত্তর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন জানান, হাইওয়ে পুলিশ নির্দিষ্ট জায়গায় মেশিন বসিয়ে গতিসীমা নিয়ন্ত্রণ করলেও নির্দিষ্ট জায়গা অতিক্রম করে আবার গতি বাগিয়ে দেন চালকরা। দুর্ঘটনা রোধে সংশ্লিষ্ট মালিক-চালক, পথচারী সবাইকে সচেতন হতে হবে। তবেই দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে।