Logo
Logo
×

নগর-মহানগর

আমদানি বন্ধে খাতুনগঞ্জে বেড়েছে পেঁয়াজের দাম

Icon

মজুমদার নাজিম উদ্দিন, চট্টগ্রাম

প্রকাশ: ২২ মার্চ ২০২৩, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

আমদানি বন্ধে খাতুনগঞ্জে বেড়েছে পেঁয়াজের দাম

আমদানি বন্ধের পর চট্টগ্রামের ভোগ্যপণ্যের বৃহত্তম পাইকারি বাজার চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে এক দফা বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। ভারতীয় পেঁয়াজ এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে প্রায় ৫ টাকা বাড়িয়ে আড়তদাররা ৩৫ টাকায় বিক্রি করছেন। খুচরা বাজারে যা বিক্রি হচ্ছে ৪০-৪২ টাকায়। সেই সঙ্গে বেড়েছে দেশি পেঁয়াজের দামও।

তবে আড়তগুলোয় পেঁয়াজের পর্যাপ্ত মজুত আছে জানিয়ে পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলছেন, রমজানে সংকট হবে না। সাম্প্রতিক সময়ে ভারত থেকে বিপুল পরিমাণ পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। প্রতিটি আড়ত আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজে ভর্তি। মজুতের তুলনায় বরং বিক্রি হচ্ছে কম। তাই পেঁয়াজ নষ্ট হওয়ারও আশঙ্কাও করছেন আড়তদারদের কেউ কেউ। তাদের মতে, পণ্যটি পচনশীল হওয়ায় বেশি দিন রাখা যায় না। বিক্রির গতি না বাড়লে অনেক আড়তে পেঁয়াজ থেকে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে গুদামের ভেতর গরমে পচে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। অতীতে বিভিন্ন সময় খাতুনগঞ্জের আড়তগুলোয় শত শত মন পেঁয়াজ নষ্ট হওয়ার পর খাল-নদীতে ফেলে দিতে দেখা গেছে। অবশ্য ওইসময় দাম বাড়ানোর জন্য বিক্রি না করে মজুত করে রাখায় নষ্ট হয়েছে। এবার চাহিদা কম থাকায় নষ্ট হতে পারে।

দেশীয় চাষিদের কথা মাথায় রেখে সরকার পেঁয়াজ আমদানি সাময়িক বন্ধ রাখার ঘোষণা দেয়। এর ফলে ১৬ মার্চ থেকে দেশের বিভিন্ন স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে পণ্যটির আমদানি প্রায় বন্ধ রয়েছে। দেশীয় পেঁয়াজ এরই মধ্যে বাজারে আসতে শুরু করেছে। এ কারণে এখন ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি করলে কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। তারা সঠিক মূল্য পাবেন না। মূলত এ কারণে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি সাময়িক বন্ধ রাখার ঘোষণা দেওয়া হয়। অনেকে মনে করছেন, এর ফলে রমজান সামনে রেখে সিন্ডিকেটের কারসাজিতে পেঁয়াজের বাজার অস্থিতিশীল হয়ে উঠতে পারে। ইতোমধ্যে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধের পর পরই কেজিতে ৪ থেকে ৫ টাকা দাম বেড়েছে পাইকারি পর্যায়ে।

নগরীর খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে গিয়ে দেখা যায়, প্রতি কেজি ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩৪-৩৫ টাকা দরে, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৩০ টাকা। এই হিসাবে পাইকারিতে কেজিপ্রতি দাম বেড়েছে ৪-৫ টাকা। দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩০-৩২ টাকা কেজি দরে, যা ২৫-২৮ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। খুচরা বাজারে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ৩৫ থেকে ৩৮ টাকা আর ভারতীয় পেঁয়াজ ৪০-৪২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চট্টগ্রামে দেশি পেঁয়াজের চাহিদা কম। তাই আড়তগুলোয় ভারতীয় পেঁয়াজই বেশি রাখা হয়। দেশি পেঁয়াজের তুলনায় ভারতীয় পেঁয়াজের দামও তুলনামূলক কিছুটা বেশি থাকে।

খাতুনগঞ্জে পেঁয়াজের সবচেয়ে বড় বিপণিকেন্দ্র হামিদুল্লাহ মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. ইদ্রিস যুগান্তরকে বলেন, আমদানি বন্ধের ঘোষণার পর পেঁয়াজের দাম পাইকারিতে ৪-৫ টাকা বেড়েছে। আড়তগুলোয় বিপুল পরিমাণ ভারতীয় পেঁয়াজ রয়েছে। কিছু দিন ধরে আমদানিকারকরা একসঙ্গে অনেক পেঁয়াজ আমদানি করেছেন, যা অতীতে তেমন একটা দেখা যায়নি। পুরো রমজান মাস আমদানি বন্ধ থাকলেও সংকট হবে না। একসঙ্গে প্রচুর মাল দেশে আসায় সেই তুলনায় ক্রেতার সংখ্যা কম। আগে যেখানে খাতুনগঞ্জে প্রতিদিন ২০-৩০ ট্রাক পেঁয়াজ বিক্রি হতো, এখন সেখানে অনেক কম হচ্ছে। তিনি জানান, বিক্রি কমে যাওয়ায় অনেক আড়তদার পেঁয়াজ পচে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন। খাতুনগঞ্জে চাহিদার প্রায় ৯০ শতাংশই ভারতীয় পেঁয়াজ। দেশি পেঁয়াজের চাহিদা আছে ১০ শতাংশের মতো। দেশি পেঁয়াজের মধ্যে ফরিদপুরের ভালোমানের এবং মেহেরপুরের মাঝারি মানেরটা কোনো কোনো আড়তে বিক্রি হয়। আবার অনেক আড়তে দেশি পেঁয়াজ রাখাই হয় না।

খাতুনগঞ্জের আরেক বিপণি মোহাম্মদীয়া বাণিজ্যালয়ের মো. ফোরকান বলেন, রমজান ঘনিয়ে আসায় বেচাবিক্রি আগের চেয়ে কিছুটা বেড়েছে। পেঁয়াজের পর্যাপ্ত মজুত আছে আড়তগুলোয়। সাধারণত পেঁয়াজ আড়তে তোলার পর ১৫ দিন পর্যন্ত রাখা যায়। এরপর থেকে দাগ পড়তে শুরু করে। তাই দ্রুতই বিক্রি করে দিতে হয়। তা না হলে পণ্যটি পচে যায়। বিক্রির গতি না বাড়লে কোনো কোনো আড়তে পেঁয়াজ থেকে যেতে পারে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম