ফাইনালের সেরা রোহিত টুর্নামেন্টসেরা রাচিন

ক্রীড়া ডেস্ক
প্রকাশ: ১০ মার্চ ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
টুর্নামেন্টের ২৭ বছরের ইতিহাসে অনেক নায়ক দেখেছে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। তাদের কেউ পুরো আসরের নায়ক, কেউবা শেষের ঝলকে ফাইনালের নায়ক। এবার যেমন পুরো আসরে নিজের ছায়া হয়ে থাকা ভারত অধিনায়ক রোহিত শর্মা ফাইনালে ৮৩ বলে ৭৬ রানের অসাধারণ এক ইনিংস খেলে হলেন শেষের নায়ক। দুবাইয়ে রবিবাসরীয় ফাইনালে রোহিতের ভারতের কাছে নিউজিল্যান্ড চার উইকেটে হারলেও টুর্নামেন্টসেরা হয়েছেন কিউই অলরাউন্ডার রাচিন রবীন্দ্র। আসরে সর্বোচ্চ ২৬৩ রান করার পাশাপাশি তিন উইকেট নেন তিনি। ফাইনালে ম্যাচসেরা হওয়ার প্রতিক্রিয়ায় রোহিত বলেন, ‘এটা দারুন ব্যাপার। আমরা টুর্নামেন্টজুড়ে দুর্দান্ত ক্রিকেট খেলেছি। ফল পক্ষে আসায় দারুণ আনন্দিত।’ অন্যদিকে রাচিন বলেন, ‘ফাইনালে দারুণ লড়াই হলেও আমরা হেরে যাওয়ায় অভিজ্ঞাতাটা অম্ল-মধুর বলতে হবে।’
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ইতিহাসে একইসঙ্গে ফাইনালের সেরা ও টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড়ের স্বীকৃতি পেয়েছেন শুধু একজন। তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার কিংবদন্তি অলরাউন্ডার জ্যাক ক্যালিস। ১৯৯৮ সালে ঢাকায় চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির প্রথম আসরের ফাইনালে ক্যালিসের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে চার উইকেটে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। ফাইনালে পাঁচ উইকেট নেওয়ার পাশাপাশি ৩৭ রান করেন ক্যালিস। আসরে সর্বোচ্চ আট উইকেট নেওয়ায় ফাইনাল ও টুর্নামেন্টসেরা দুটি পুরস্কারই উঠেছিল ক্যালিসের হাতে।
২০০০ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে ক্রিস কেয়ার্নসের অসাধরণ সেঞ্চুরিতে খাদের কিনারা থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে ভারতকে চার উইকেটে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় নিউজিল্যান্ড। ১১৩ বলে ১০২* রানের মহাকাব্যিক ইনিংসের সুবাদে ফাইনালের সেরা হন কেয়ার্নস। সেবার টুর্নামেন্ট সেরার পুরস্কার ছিল না। কলম্বোয় ২০০২ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনাল ভেসে গিয়েছিল বৃষ্টিতে। দুই ফাইনালিস্ট শ্রীলংকা ও ভারতকে যৌথ চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করা হয়। ফাইনাল ও টুর্নামেন্ট সেরার পুরস্কার সেবার দেওয়া হয়নি। ২০০৪ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৩৪* রান করার পাশাপাশি দুই উইকেট নেওয়ায় ফাইনালের সেরা হন ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইয়ান ব্রাডশ। টুর্নামেন্টসেরা হন রামনরেশ সারওয়ান।
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির পরের দুই আসরেই চ্যাম্পিয়ন হয় অস্ট্রেলিয়া। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ২০০৬ আসরের ফাইনালে ৫৭* রান করার পাশাপাশি দুই উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা হন শেন ওয়াটসন। টুর্নামেন্টসেরা হয়েছিলেন উইন্ডিজের ক্রিস গেইল। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ২০০৯ আসরের ফাইনালে সেঞ্চুরি (১০৫*) হাঁকিয়ে আবারও ম্যাচসেরা হন শেন ওয়াটসন। টুর্নামেন্ট সেরা হন অসি অধিনায়ক রিকি পন্টিং। ২০১৩ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে দারুণ বোলিংয়ে ভারতকে জিতিয়ে ফাইনালের সেরা হন রবীন্দ্র জাদেজা। টুর্নামেন্টসেরা হন আরেক ভারতীয় শিখর ধাওয়ান। সবশেষ ২০১৭ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে ঝড়ো সেঞ্চুরির (১০৬ বলে ১১৪) সুবাদে ম্যাচসেরা হন পাকিস্তানের ফখর জামান। টুর্নামেন্টসেরা হন আরেক পাকিস্তানি হাসান আলী।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
নিউজিল্যান্ড ২৫১/৭, ৫০ ওভারে
(রাচিন রবীন্দ্র ৩৭, ড্যারিল মিচেল ৬৩, গ্লেন ফিলিপস ৩৪, মাইকেল ব্রেসওয়েল ৫৩*। বরুন চক্রবর্তী ২/৪৫, কুলদীপ যাদব ২/৪০।
ভারত ২৫৪/৬, ৪৯ ওভারে
(রোহিত শর্মা ৭৬, শুবমান গিল ৩১, শ্রেয়াস আয়ার ৪৮, অক্ষর প্যাটেল ২৯, লোকেশ রাহুল ৩৪*। মিচেল স্যান্টনার ২/৪৬, মাইকেল ব্রেসওয়েল ২/২৮।
ফল : ভারত চার উইকেটে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ : রোহিত শর্মা।
ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্ট : রাচিন রবীন্দ্র।