
প্রিন্ট: ১২ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:৪৬ এএম

দিনাজপুর ও বিরল প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৬ এপ্রিল ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
আরও পড়ুন
লিচুর বাগানে মধু আহরণ করতে এসে নিঃস্ব হয়ে পথে বসেছেন মৌচাষিরা। অসময়ে লিচুর মুকুলে কীটনাশক স্প্রে করায় মৌমাছি মরে সাবাড় হয়েছে। বিরলের কয়েকটি গ্রামের মৌখামারে ঘটেছে এমন ঘটনা। শুক্রবার চকভবানী গ্রামে বেশ কয়েকটি লিচুর বাগানে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্রায় প্রতিটি লিচুর বাগানে লিচুর ফুল থেকে মধু আহরণের জন্য মৌচাষিরা স্থাপন করেছে শত শত মৌমাছির বক্স। এসব বক্সে নেই মৌমাছির আনাগোনা। বক্সের আশপাশে এমনকি গোটা লিচুর বাগানজুড়ে মরে পড়ে আছে লাখ লাখ মৌমাছি। ঈদের দিন থেকে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে ওই এলাকার লিচু বাগানের মৌখামারগুলোতে। আফজাল হোসেন নামে এক লিচুর বাগান মালিকের লিচুর বাগানে গিয়ে দেখা যায়, স্থাপিত মৌবক্সের ওপর গালে হাত দিয়ে বিমর্ষ হয়ে বসে আছে রায়হান হোসেন নামে এক মৌচাষি। লিচুর বাগানে মধু আহরণের জন্য বসিয়েছেন প্রায় ৮শ মৌবক্স। তিনি বলেন, ভাই সব শেষ। বাগান মালিকরা অসময়ে লিচুর মুকুলে কীটনাশক প্রয়োগ করায় মৌমাছিগুলো মরে যাচ্ছে। ইতিমধ্যেই প্রায় ৮০ শতাংশ মৌমাছি মরে গেছে। মধু তো দূরের কথা, দীর্ঘদিনের এই মৌখামার ধ্বংস হয়ে গেছে। পাশের বাগানেই মৌবক্স স্থাপন করেছেন ভাঙ্গুরা থেকে আগত মৌচাষি আব্দুস সালাম। তিনি জানালেন, এবার ৯০টি বক্স স্থাপন করেছেন। কীটনাশক প্রয়োগের ফলে মৌমাছি মরে প্রায় প্রতিটি বক্সেই এখন প্রায় খালি। ভাঙ্গুরা থেকে আগত আরজু আলম নামে আরেক মৌচাষির সঙ্গে কথা বলতেই তার চোখে পানি ঝরছিল। ক্রন্দনরত সুরে তিনি বলেন, ২০০৭ সাল থেকে তিলে তিলে এই মৌখামারটি গড়ে তুলেছি। আমার কষ্টে গড়া মৌখামারটি এবার ধ্বংস হয়ে গেল। মুকুলে বিষ প্রয়োগের ফলে আমার ১৫০টি মৌ বক্সের সব মৌমাছি মরে শেষ। চকভবানী গ্রামের লিচুর বাগান মালিক আজিজুর রহমান বলেন, লিচুর গুটি (ফল) আসার পর পরিপক্ক হওয়া পর্যন্ত ক্ষতিকারক পোকামাকড় দমনে ৮ থেকে ১০ বার কীটনাশক স্প্রে করার প্রয়োজন পড়ে। কিন্তু মুকুলের সময় কীটনাশকের প্রয়োজন হয় না। এরপরও যারা মুকুলের এই সময়ে কীটনাশক প্রয়োগ করেছে, তারা ঠিক করেনি। বিরল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোস্তফা হাসান ইমাম বলেন, মৌমাছির ক্ষতি করে কীটনাশক প্রয়োগ করা যাবে না।