
প্রিন্ট: ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ০২:২৫ এএম

নাঙ্গলকোট (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৪ এপ্রিল ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
আরও পড়ুন
নাঙ্গলকোটের জোড্ডা পূর্ব ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য পেয়ারা বেগম। যিনি তিনটি ওয়ার্ডের জনগণের সেবক, অথচ নিজেরই মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই। ভিক্ষার টাকায় চলে তার সংসার। পেয়ারা বেগম জোড্ডা পূর্ব ইউপির দক্ষিণ শ্রীহাস্য গ্রামের আলি আহমেদের স্ত্রী। বর্তমানে শ্রীহাস্য বাজারের পূর্ব পাশে চাঁন্দগড়া গ্রামের মোস্তফা নামে এক ব্যক্তির জায়গায় নড়বড়ে টিনের ঘর করে এক প্রতিবন্ধী ছেলেসহ ৪ সন্তান নিয়ে বসবাস করেন ভূমিহীন এই জনপ্রতিনিধি। জানা যায়, ১৯৯৯ সালে পেয়ারা বেগম বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়ে আড়াই বছর পর একটি ছেলে সন্তান জন্ম দিলেও ভাগ্যের নির্মমতায় ছেলেটি শারীরিক প্রতিবন্ধী হয়। সন্তানের চিকিৎসা খরচ জোগাড় করতে নিজের স্বামীর থাকা সর্বশেষ ৬ শতক জায়গা বিক্রি করে নিঃস্ব হয়ে পড়েন। এরপর হাতে তুলে নেন ভিক্ষার থালা। হয়ে যান ভূমিহীন। ২০২২ সালে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে জোড্ডা পূর্ব ইউপির সংরক্ষিত মহিলা আসন ৭, ৮ ও ৯নং ওয়ার্ডে তিন প্রার্থীর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিপুল ভোটে জয়লাভ করেন পেয়ারা। নির্বাচনে জয়ী হলেও ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটেনি তার। নিয়মিত ইউপির দায়িত্ব পালন শেষে নিজের ও সন্তানদের রুটিরুজির তাগিদে বের হয়ে যায় ভিক্ষার থালা নিয়ে। পেয়ার বেগমের বড় ছেলে পেয়ার আহমেদ (২৩) শারীরিক প্রতিবন্ধী হলেও প্রতিবন্ধী ভাতা মিলছে না তার। ট্রেনে ট্রেনে ভিক্ষা করে সংসারের কিছুটা ভার নিজের কাঁধে তুলে নেন এই প্রতিবন্ধী যুবক। জনপ্রতিনিধি পেয়ারা বেগম জানান, ‘বিয়ের পর প্রথম সন্তান প্রতিবন্ধী হয়েছে, চিকিৎসার খরচ জোগাড় করতে হিমশিম খেয়ে নিরুপায় হয়ে ভিক্ষার থালা হাতে তুলি। নির্বাচনে জয়ী হয়েও সৎ পথে থেকে জনগণের সেবা করে যাচ্ছি। আবার এই জনগণের কাছেই হাত পেতে সহযোগিতা নিয়ে চার সন্তান ও অসুস্থ স্বামীকে নিয়ে সংসারের ঘাঁটি টানতে হচ্ছে।’ গণমাধ্যমকর্মী মো. শাহাদাত হোসেন বলেন, পেয়ারা বেগমের সততা ও সরলতা এই এলাকার মানুষকে মুগ্ধ করেছে, তাই জনগণ নির্বাচনে তাকে বিপুল ভোটে জয়লাভ করিয়েছেন। ইউএনও মোহাম্মদ আল আমিন সরকার বলেন, পেয়ারা বেগমের পরিবারের এমন অসচ্ছলতা বিষয়টি আমার অজানা। খোঁজ খবর নেবো এবং সরকারি খাসের জায়গায় তার পুনর্বাসন ব্যবস্থা করা হবে। পাশাপাশি তার যেন ভিক্ষার প্রয়োজন না হয় সেদিকেও লক্ষ্য রাখা হবে।