Logo
Logo
×

বাংলার মুখ

চরফ্যাশনের ১০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল

দালাল পুষছেন চিকিৎসকরা

ডায়াগনস্টিক সেন্টার আর ক্লিনিকে রোগী টানাটানি

Icon

আমির হোসেন, চরফ্যাশন দক্ষিণ (ভোলা)

প্রকাশ: ১০ মার্চ ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

ভোলার চরফ্যাশনের ১০০ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সর্বত্রই ফাঁদ পেতে রেখেছে দালালরা। সেবাপ্রত্যাশীদের ফাঁদে ফেলতে পারলেই রোগীদের পার্শ্ববর্তী ডায়াগনস্টিক সেন্টার অথবা ক্লিনিকে নিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনাও ঘটছে অহরহ। ফলে তাদের কারণে সেবা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনদের ভোগান্তির সীমা নেই। এসব দেখেও না দেখার ভান করছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। অভিযোগ রয়েছে, খোদ চিকিৎসকদের ছত্রছায়ায় এসব দালালচক্র সক্রিয়। সরজমিনে হাসপাতাল এলাকায় এলাকায় রোগী ধরতে ব্যস্ত প্রায় শতাধিক দালাল। সরকারি হাসপাতাল সংলগ্ন বৈধ-অবৈধ ৩৮টি ডায়াগনস্টিক সেন্টার আর ১৪টি প্রাইভেট ক্লিনিকে রোগী ভাগিয়ে নিয়ে তারা কমিশনের বিনিময়ে কাজ করছেন। চিকিৎসকও এর ভাগ পেয়ে থাকেন। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত সরকারি হাসপাতালে থাকে দালালদের দৌরাত্ম। তারা চিকিৎসা নিতে আসা গ্রামের সহজ-সরল রোগীদের প্যাথলজি পরীক্ষা ও আধুনিক চিকিৎসার নামে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে, সরকারি হাসপাতাল ঘিরে গড়ে উঠা ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ক্লিনিকগুলোর বেশির ভাগেরই নেই অনুমোধন। নেই দক্ষ লোকবল ও উন্নতমানের যন্ত্রপাতি। আবেদন করেই আধাপাকা ঘরে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে অদক্ষ কিছু টেকনিশিয়ান দিয়ে করানো হচ্ছে পরীক্ষা-নিরীক্ষা। এতে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তারা ভুল ও ভুয়া রিপোর্ট প্রদান করে হাতিয়ে নেয় মোটা অঙ্কের টাকা। আবু বক্করপুর ইউনিয়নের সিমা বেগম নামের এক প্রসূতি নারী জানান, সম্প্রতি তিনি চরফ্যাশন হাসপাতালে চিকিৎসক দেখাতে গেলে মাঝপথেই পড়েন দালালদের খপ্পড়ে। তাকে ভুল ঝুঝিয়ে নিয়ে যান সিটিহার্ট প্রাইভেট হাসপাতালে। সেখানে তার রক্তের গ্রুপ নির্ণয় করতে গেলে রিপোর্ট আসে বি-পজেটিভ। বিষয়টি তার সন্দেহ হলে তিনি ওই পরীক্ষাটি পার্শ্ববর্তী এসটিএস ক্লিনিকে করালে রিপোর্ট আসে ওপজেটিভ। দুই ক্লিনিকে রক্তের গ্রুপের ভিন্নতার কারণে তার সিজারিয়ান অপারেশনে বিঘ্ন সৃষ্টি হয়। দুলারহাট থানার চরতোফাজ্জল গ্রামের বাসিন্দা আলমগীর হোসেন জানান, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও চিকিৎসকরা এসব দালালদের সঙ্গে জড়িত থাকায় ঘটনাটি জানলেও কোনো কথা বলেন না। কারণ এসব চিকিৎসকরা কমিশন নেওয়ার পাশাপাশি প্রাইভেট ক্লিনিকে রোগীও দেখেন। ফাস্ট কেয়ার মেডিকেল সাভির্সেসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিল্লাত এলাহী জানান, ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কোনো কর্মচারী দালালির সঙ্গে জড়িত নয়। কিছু ভাসমান লোক ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ক্লিনিকের নামে দালালি তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। চরফ্যাশন হাসপাতালের স্বাস্থ্য ও পঃপঃ কর্মকর্তা ডা. শোভন বসাক দালাল চক্রের দৌরাত্ম্যরে কথা স্বীকার করেন। তার দাবি, হাসপাতাল চত্বরে দালালদের উৎপাত ঠেকাতে উপজেলা প্রশাসনকে অবগত করা হয়েছে। দালাল নিমূলের চেষ্টা চলছে। তবে চিকিৎসকরা দালাল পুষছে এমন বিষয় সঠিক নয়। ইউএনও রাসনা শারমিন মিথি জানান, শিগগিরই ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করা হবে। এছাড়া ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর কাগজপত্র যাচাইপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম