না ফেরার দেশে তিন ভাই
বড়াইগ্রামে বোনের বৌভাতের আনন্দ নিমিষেই বেদনাবিধুর
বড়াইগ্রাম (নাটোর) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
‘দুই বছর আগে স্বামীকে হারিয়েছি। একমাত্র ছেলেকে বুকে নিয়ে বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখেছিলাম। একটা দুর্ঘটনায় আমার বুকের মানিককে হারিয়েছি। সঙ্গে হারিয়েছি ভাতিজা ও ভাগিনাকে। ফাঁকা বাড়িতে কিভাবে বাঁচব আমি।’ দুচোখের অশ্রু মুছতে মুছতে কথাগুলো বলছিলেন সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত মাদ্রাসা ছাত্র খায়রুল বাশার সাগিরের মা। তিনি বড়াইগ্রামের গোপালপুর গ্রামের প্রয়াত মাওলানা ইউনুস আলীর স্ত্রী।
জানা যায়, গত ১২ এপ্রিল ধামানিয়াপাড়া গ্রামের এনজিও কর্মী সাইদুল ইসলামের সঙ্গে গোপালপুর গ্রামের আব্দুল খালেকের মেয়ে খায়রুন্নাহার আফরিনের বিয়ে হয়। ১৫ এপ্রিল সাইদুলের বাড়িতে বৌভাতের অনুষ্ঠান ছিল। সে অনুষ্ঠান শেষে দুলাভাইয়ের মোটরসাইকেল নিয়ে বাড়িতে ফিরছিল মাওলানা আব্দুল খালেকের ছেলে আকিব হাসান, মৃত মাওলানা ইউনুস আলীর ছেলে খায়রুল বাশার সাগির ও মাওলানা রুহুল আমিনের ছেলে জাওহার আমিন লাদেন। পথে বড়াইগ্রাম কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠ এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বৈদ্যুতিক খুঁটির সাথে মোটরসাইকেলের ধাক্কা লেগে তিনজনই গুরুতর আহত হন। পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান আকিব হাসান (১৫)। শনিবার মারা যান খায়রুল বাশার সাগির।
সবশেষে বুধবার রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান জাওহার আমিন লাদেন। নিহত আকিব বড়াইগ্রাম পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির, সাগির রাজশাহী মারকাজুল ইসলামিয়া সালাফিয়া মাদ্রাসার আলিম প্রথমবর্ষে এবং জাওহার বড়াইগ্রাম সরকারি কলেজের অনার্স প্রথমবর্ষের ছাত্র ছিল। নববিবাহিতা খায়রুন্নাহার আফরিন বলেন, বিয়ের পর হাসি-আনন্দে সংসার জীবনের স্বপ্ন দেখেছিলাম। কিন্তু একটা দুর্ঘটনায় আমার আদরের ভাইদের হারিয়ে সব শেষ হয়ে গেল।