স্বাধীনতা দিবসে আরজি করকাণ্ডে বিস্তর সমালোচনা শুরু হয়েছে। রাজ্যজুড়ে চলছে প্রতিবাদ। তারপরও কেন চুপ তৃণমূল কংগ্রেসের হুগলির সংসদ সদস্য তা নিয়ে শুরু হয়েছে সমালোচনা।
এবার প্রকাশ্যে এলেন রচনা ব্যানার্জি। সামাজিকমাধ্যমে একটি ভিডিও পোস্ট করে স্বাধীনতা দিবসে তিনি প্রশ্ন তোলেন— সত্যিই কি নারীরা স্বাধীন, তারা কি স্বাধীনভাবে ঘুরতে পারছেন?
এ ভিডিও পোস্টে সারা ভারতের নারীদের কথাই তুলে ধরে রচনা বলেন, ‘সারা ভারতে নারীরা কি স্বাধীনভাবে ঘুরতে পারছেন? উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ থেকে মণিপুর— একটার পর একটা ঘটনা ঘটে চলেছে। আমরা মেয়েরা কবে স্বাধীনভাবে ঘুরে বেড়াব। তিনি বলেন, কলকাতা শহরে আরজি করের এ ঘটনা অত্যন্ত নিন্দনীয়। ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। আমরা রাস্তায় নেমেছি। আওয়াজ তুলেছি। আমিও আপনাদের সঙ্গেই আছি। নারীরা যেভাবে পথে নেমেছেন তা ভারতবর্ষে আগে কোথাও কখনো হয়নি বলেই জানিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি সব নারীকে কুর্নিশ জানিয়েছেন এ অভিনেত্রী।
আরজি করকাণ্ডে মৃতা চিকিৎসকের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে হুগলির সংসদ সদস্য বলেন, যতক্ষণ না মৃতা চিকিৎসক সুবিচার পাচ্ছেন, আপনারা আওয়াজ তুলবেন। ওর বাবা–মা যাতে সুবিচার পায়। দোষী যাতে শাস্তি পায়। আমি আছি আপনাদের সঙ্গে।
তিনি আরও বলেন, তার নিজের জীবন স্বাচ্ছন্দ্যের হলেও সমাজের একটি বড় অংশের মেয়েরা যেভাবে যাতায়াত করেন, সেই নিয়ে চিন্তিত তিনি। অশ্রুসজল চোখে রচনা ব্যানার্জি বলেন, রাতে কাজ সেরে আমি গাড়ি করে বাড়ি ফিরি। তবে বহু মেয়ে ট্রেনে ঝুলতে ঝুলতে ফেরে, কেউ বাসে ফেরে, আবার কেউ ফেরে অটোতে। অনেকে অনেক কষ্ট করেন। আমি একজন বোন, একজনের মেয়ে। পুরুষ আমাকে সম্মান করবে, বিপদে পড়লে সাহায্য করবে। কিন্তু পুরুষের জাত আমাকে ছিঁড়ে খাবে, আমি চিৎকার করব, কেউ শুনবে না—তা মানা যায় কি?
ভারতের বিচারব্যবস্থা প্রসঙ্গে এ অভিনেত্রী বলেন, ‘আমাদের কঠিন একটা পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। ভারতের বিচারব্যবস্থা এমন হতে হবে, যাতে কোনো পুরুষ কোনো মেয়ের দিকে কুনজরে না তাকাতে পারে। যাদের নজর খারাপ তারা পাল্টায় না। এই অন্যায়ের প্রতিবাদ হওয়া উচিত। সবাই একজোট হয়ে থাকুন। আপনারা ভাববেন না আমরা শিল্পী, রাজনীতির মানুষ, আমাদের মন কাঁদে না তেমন নয়। আমরা আপনাদের সঙ্গেই আছি।
এর আগে বৃহস্পতিবার কলকাতা শহর থেকে মফস্বল—সর্বত্র প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছিলেন সর্বস্তরের নারীরা। টলিউডের একটি বড় অংশ পথে নেমেছিলেন আরজি করকাণ্ডের মৃতা চিকিৎসকের ন্যায়বিচারের দাবিতে। তেমনই গত কয়েক দিন ধরেই সামাজিকমাধ্যমে খোঁজ পড়েছিল তৃণমূল কংগ্রেসে অভিনেত্রী-সংসদ সদস্যদের। সে তালিকায় ছিলেন সায়নী ঘোষ, রচনা ব্যানার্জি, জুন মাল্য, শতাব্দী রায়। কোথাও কোথাও পোস্টার পড়েছিল ‘লাপাতা লেডিস’ নামে। এ নিয়ে বিস্তর সমালোচনা হয়। রাজ্যজুড়ে যখন এমন প্রতিবাদ চলছে, তখন কেন চুপ তৃণমূল কংগ্রেসের এই সংসদ সদস্যরা?