বিশ্ববিদ্যালয়ে একক ভর্তি পরীক্ষা হোক
জালাল উদ্দিন ওমর
প্রকাশ: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা পাশের পর আমাদের দেশে ছেলেমেয়েরা মেডিকেল, ইঞ্জিনিয়ারিং এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে থাকে। বিজ্ঞান বিভাগ থেকে পাশ করা ছেলেমেয়েদের সাধারণত প্রথম পছন্দ থাকে মেডিকেল অথবা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ভর্তি হওয়া এবং সেখানে পড়াশোনা করা। এসব জায়গায় সুযোগ না পেলে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। মানবিক ও বাণিজ্য বিভাগ থেকে পাশ করা ছেলেমেয়েরাও একইভাবে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে না পারলে তাদের অনেকেই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে বিভিন্ন কলেজে অনার্স ও ডিগ্রি কোর্সে ভর্তি হয়। অপরদিকে আর্থিকভাবে সচ্ছল পরিবারের সন্তানদের অনেকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন বিষয়ের অনার্স কোর্সে ভর্তি হয়। অনেকে আবার উচ্চশিক্ষার্থে বিদেশে পাড়ি জমায় এবং সেখানকার বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে উচ্চশিক্ষা অর্জন করে। এই হচ্ছে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় পাশ করা ছাত্রছাত্রীদের পরবর্তী ধাপে ভর্তির সংক্ষিপ্ত রূপ।
উচ্চমাধ্যমিক পরবর্তী পর্যায়ে ভর্তি হওয়াটা একজন শিক্ষার্থীর জীবনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ সে কোন বিষয়ে পড়াশোনা করবে তা এ সময়েই নির্ধারিত হয়ে যায়। যে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা পাশের পর মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষায় পাশ করে ভর্তির সুযোগ পায়, তার পক্ষেই কেবল চিকিৎসাবিজ্ঞান অধ্যয়ন করে চিকিৎসক হওয়া সম্ভব। একইভাবে ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাওয়া ছাত্রছাত্রীর পক্ষেই কেবল প্রকৌশল বিদ্যা অধ্যয়ন করে প্রকৌশলী হওয়া সম্ভব। আবার কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় ভর্তি পরীক্ষায় পাশ করে ভর্তির সুযোগ পাওয়া ছাত্রছাত্রীর পক্ষেই কেবল কৃষিবিদ্যা অধ্যয়ন করে কৃষিবিদ হওয়া সম্ভব। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন বিষয়ে ভর্তির ক্ষেত্রেও একই নিয়ম প্রযোজ্য। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য এখনো একক কোনো নীতিমালা প্রণয়ন হয়নি। এতে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের অনেক ভোগান্তিতে পড়তে হয়। এর সমাধান হওয়া জরুরি। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে একক ভর্তি পরীক্ষা চালু করাই হতে পারে এর সমাধান। বিষয়টি নিয়ে আলোচনার সুবিধার্থে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে বিগত ২০২২-২০২৩ সাল পর্যন্ত ভর্তি প্রক্রিয়ায় যেসব নীতিমালা অনুসরণ করা হয়েছে, প্রথমে তার একটি সংক্ষিপ্ত আলোচনা করছি।
বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রছাত্রীরা চিকিৎসা ও প্রকৌশল বিজ্ঞানে পড়াশোনা করতে বেশি আগ্রহী থাকে। দেশে বর্তমানে ৩৭টি সরকারি মেডিকেল কলেজ রয়েছে। এ মেডিকেল কলেজগুলো দেশের বিভিন্ন স্থানে অবস্থিত এবং সবগুলোতেই এমবিবিএস কোর্স পড়ানো হয়। এসব মেডিকেল কলেজে এমবিবিএস কোর্সে ভর্তির জন্য একটি একক ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এ পরীক্ষায় পাশ করে মেধানুসারে যারা এগিয়ে থাকে, তারাই মেডিকেলে এমবিবিএস কোর্সে ভর্তির সুযোগ পায়। বেসরকারি মেডিকেল কলেজে এমবিবিএস কোর্সে ভর্তির জন্য ভর্তিচ্ছু ছাত্রছাত্রীদেরও ভর্তি পরীক্ষায় পাশ করতে হয়। মোটকথা, সরকারি-বেসরকারি মেডিকেলে এমবিবিএস কোর্সে ভর্তির জন্য ছাত্রছাত্রীদের একটি অভিন্ন পরীক্ষায় পাশ করতে হয়। এমবিবিএস কোর্সের পাশাপাশি বাংলাদেশে বর্তমানে নয়টি সরকারি ডেন্টাল কলেজ রয়েছে। এগুলো দেশের বিভিন্ন স্থানে অবস্থিত এবং এর সবগুলোতেই একই বিষয় অর্থাৎ বিডিএস কোর্স পড়ানো হয়। এসব ডেন্টাল কলেজে বিডিএস কোর্সে ভর্তির জন্য একটি একক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষায় পাশ করে মেধানুসারে যারা এগিয়ে থাকে, তারাই এসব কলেজে ভর্তির সুযোগ পায়। বেসরকারি ডেন্টাল কলেজে বিডিএস কোর্সে ভর্তির জন্যও এ পরীক্ষায় পাশ করতে হয়। মোটকথা, সরকারি-বেসরকারি ডেন্টাল কলেজে বিডিএস কোর্সে ভর্তির জন্য ছাত্রছাত্রীদের একটি অভিন্ন ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ এবং পাশ করতে হয়।
দেশে বর্তমানে চারটি প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে, যেখানে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করার পর বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রছাত্রীরা ভর্তি হয় এবং প্রকৌশল বিদ্যায় পড়াশোনা করে। প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যায়গুলোতে অনেক বিষয় রয়েছে এবং একজন শিক্ষার্থী কোন বিষয়ে ভর্তি হতে পারবে তা সে সময়ই নির্ধারিত হয়ে যায়। একজন শিক্ষার্থী যে বিষয়ে ভর্তির সুযোগ পায়, তাকে সেই বিষয়েই ভর্তি হতে হয় এবং পড়াশোনা করতে হয়। এ চারটি প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে বুয়েট, চুয়েট, কুয়েট ও রুয়েট। গত সেশন পর্যন্ত বুয়েটে ভর্তির জন্য একটি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় এবং চুয়েট-কুয়েট-রুয়েটে ভর্তির জন্য আরেকটি ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। চুয়েট-কুয়েট-রুয়েটে ভর্তির জন্য অনুষ্ঠিত একক ভর্তি পরীক্ষাটি প্রকৌশল গুচ্ছ পরীক্ষা নামে অভিহিত। প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে যেহেতু একাধিক বিষয় রয়েছে, তাই অনেকেই পছন্দের বিষয়ে পড়াশোনার জন্য বুয়েটে সুযোগ পাওয়া সত্ত্বেও সেখানে না পড়ে চুয়েটে অথবা কুয়েটে কিংবা রুয়েটে পড়ে; এমন বহু উদাহরণ আছে। যেমন একজন শিক্ষার্থীর কম্পিউটার সায়েন্স পড়ার খুব ইচ্ছা। সে বুয়েটে সুযোগ পেয়েছে; কিন্তু কম্পিউটার সায়েন্সে ভর্তির সুযোগ পাচ্ছে না। তবে এ শিক্ষার্থী চুয়েটে বা কুয়েটে কিংবা রুয়েটে কম্পিউটার সায়েন্স পড়ার সুযোগ পেয়েছে। এ অবস্থায় বুয়েটে না পড়ে সে চুয়েটে বা কুয়েটে কিংবা রুয়েটে চলে যাচ্ছে; এমন অনেক নজির রয়েছে।
ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় আলাদা আলাদাভাবে ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে থাকে। ফলে এখানে চারটি ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এর বাইরে ২২টি বিশ্ববিদ্যালয়ে একক ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়, যাকে আমরা গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা নামে অভিহিত করেছি। আবার কৃষিভিত্তিক আটটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য একটি একক ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। একে আমরা কৃষি গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা নামে অভিহিত করি। বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় এককভাবে একটি ভর্তি পরীক্ষা নেয়। এর বাইরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সাতটি কলেজে ভর্তির জন্য একটি একক ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে পাশ করে ছাত্রছাত্রীরা ভর্তি হয়। একে আমরা সাত কলেজের গুচ্ছ পরীক্ষা নামে অভিহিত করি। এই হচ্ছে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পদ্ধতি।
দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বিভিন্ন স্থানে অবস্থিত। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় বিভিন্ন ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কারণে ভর্তিচ্ছু ছাত্রছাত্রীদের এসব পরীক্ষায় অংশ নিতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যেতে হয়। অনেক সময় যাতায়াতের জন্য গাড়ি পাওয়া যায় না, থাকার জন্য জায়গাও পাওয়া যায় না। এছাড়া অর্থ ব্যয় ও শারীরিক ঝক্কি-ঝামেলা তো আছেই। এ সমস্যা সমাধানে একক ভর্তি পরীক্ষার কোনো বিকল্প নেই। একক ভর্তি পরীক্ষায় একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য একটি পরীক্ষাই হয়, ফলে একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য একাধিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হয় না। এতে ছাত্রছাত্রীদের কষ্ট কমে যায়। উন্নত দেশগুলোয় একক ভর্তি পরীক্ষা পদ্ধতি চালু আছে বহু আগে থেকেই। বাংলাদেশে বর্তমানে তিনটি গুচ্ছ পরীক্ষা চালু আছে। ২০২০-২০২১, ২০২১-২০২২ ও ২০২২-২০২৩-এ তিনটি সেশনে এসব গুচ্ছ পরীক্ষার মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীরা গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছে। একটি হচ্ছে প্রকৌশল গুচ্ছ, যার মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীরা চুয়েট, কুয়েট ও রুয়েটে ভর্তি হয়। দ্বিতীয়টি হচ্ছে গুচ্ছ বিশ্ববিদ্যালয়, যার মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীরা ২২টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়। তৃতীয়টি হচ্ছে কৃষিগুচ্ছ, যার মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীরা ৮টি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পায়। গুচ্ছ পরীক্ষার মাধ্যমে এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে আজ পর্যন্ত কোনো ধরনের সমস্যা হয়নি।
এবার গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার নিয়ম-কানুন সম্পর্কে একটু আলোচনা করছি। গুচ্ছ পরীক্ষার ক্ষেত্রে গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য একক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এ পরীক্ষায় পাশ করার পর শিক্ষার্থীরা তাদের মেধাতালিকা অনুসারে নিজেদের অবস্থান জানতে পারে। এরপর তারা তাদের পছন্দ অনুযায়ী গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ও বিষয় জানায়। প্রয়োজনে শিক্ষার্থীরা গুচ্ছভুক্ত সব বিশ্ববিদ্যালয় এবং সেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকা বিষয়ও পছন্দ হিসাবে জানাতে পারে। সেটা ছাত্রছাত্রীদের ফলাফলগত অবস্থান, কোন বিশ্ববিদ্যালয় এবং কোন বিষয়ে পড়বে তার ওপর নির্ভর করে। যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজ্ঞান, মানবিক ও বাণিজ্য অর্থাৎ সব বিভাগ রয়েছে, সেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য বিজ্ঞানের ছাত্রছাত্রীরা একটি পরীক্ষায়, মানবিকের ছাত্রছাত্রীরা একটি পরীক্ষায় এবং বাণিজ্যের ছাত্রছাত্রীরা একটি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। তবে একটি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করলেও ছাত্রছাত্রীরা বিভাগ পরিবর্তন করতে পারে। যেমন বিজ্ঞানের ছাত্রছাত্রীরা তাদের পরীক্ষায় পাশ করার পর তাদের অবস্থান অনুসারে যে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজ্ঞান বিভাগের বিষয়ের পাশাপাশি মানবিক ও বাণিজ্য বিভাগের বিষয়ও পছন্দ হিসাবে দিতে পারে এবং ভর্তি হতে পারে। মানবিক ও বাণিজ্য বিভাগের ছাত্রছাত্রীদের বেলায়ও এ নিয়ম প্রযোজ্য। পরীক্ষার ফলাফল ও পছন্দ অনুসারে ছাত্রছাত্রীরা বিষয় পায় এবং ভর্তি হয়। আর তথ্যপ্রযুক্তির কল্যাণে সবকিছু অনলাইনভিত্তিক হওয়ায় গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি প্রক্রিয়া এখন খুবই সহজ।
এ অবস্থায় দেশে একটি একক ভর্তি পরীক্ষা চালুর জন্য আমি কিছু প্রস্তাব রাখছি। প্রথমত, এমবিবিএস ও ডেন্টালে ভর্তির জন্য একটি পরীক্ষা। বুয়েট, চুয়েট, কুয়েট ও রুয়েটের জন্য একটি পরীক্ষা। কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একটি পরীক্ষা, যা বর্তমানে চালু আছে। টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলোর জন্য একটি পরীক্ষা। ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একটি পরীক্ষা। ছাত্রছাত্রীরা কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন বিষয়ে পড়বে, সেটা তার যোগ্যতা ও ইচ্ছার ওপর নির্ভরশীল। গুচ্ছ পরীক্ষায় ভালো ফল করা ছাত্রছাত্রীরা যদি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে চায় ও সুযোগ পায়, তাহলে তারা সেখানে পড়বে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাওয়া সত্ত্বেও বিভিন্ন কারণে সেখানে ভর্তি না হয়ে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির অনেক উদাহরণও কিন্তু আছে। শিক্ষার্থীদের পছন্দের বিষয় পাওয়া না পাওয়া এবং তাদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার ওপর এ বিষয়টি নির্ভর করে। এটি সব বিশ্ববিদ্যালয়ের বেলায় সমভাবে প্রযোজ্য। একইভাবে কেউ যদি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে চায়, তাহলে সে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়বে। কেউ যদি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে চায়, তাহলে সে সেখানেই পড়বে। কেউ যদি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে চায়, তাহলে সে সেই বিশ্ববিদ্যালয়েই পড়বে। যদি অন্য কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে চায়, তাহলে সেই বিশ্ববিদ্যালয়েই পড়তে পারবে। সুতরাং, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় যদি একক ভর্তি পরীক্ষায় অন্তর্ভুক্ত হয়, তাহলে সমস্যার কিছুই নেই। আমি বিষয়টি নিয়ে এ চারটি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সদয় দৃষ্টি ও সহযোগিতা কামনা করছি। ছাত্রছাত্রীদের বৃহত্তর কল্যাণেই তা করতে হবে। এ পদ্ধতি ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষ থেকেই বাস্তবায়ন করা হোক।
শিক্ষার উন্নতিতেই জাতির উন্নয়ন। শিক্ষায় পিছিয়ে পড়া মানে উন্নয়নে পেছনে পড়া। আর শিক্ষা অর্জন একজন মানুষের জন্মগত অধিকার, কারও দয়া নয়। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য একক নীতিমালা প্রণয়ন করা হোক, যার মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীদের ওপর চাপ কমবে, তাদের কষ্ট ও ভোগান্তি কমবে এবং সহজেই পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়ে পছন্দের বিষয়ে পড়াশোনা করতে পারবে। এ জন্য একক ভর্তি পরীক্ষার কোনো বিকল্প নেই। এ বিষয়ে সব বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও শিক্ষামন্ত্রীসহ সরকারের সহযোগিতা কামনা করছি। শিক্ষার অগ্রগতির মাধ্যমে দেশের কল্যাণেই এটি প্রয়োজন।
জালাল উদ্দিন ওমর : প্রকৌশলী ও উন্নয়ন গবেষক
omar_ctg123@yahoo.com