জাতীয় নির্বাচন ঘিরে আস্থার সংকট
বোরহানউদ্দীন ইউসুফ
প্রকাশ: ১০ জুলাই ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
প্রতীকী ছবি
বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিশ্বাস-অবিশ্বাসের দোলাচল আগেও ছিল; তবে এমন ঘনীভূত আস্থার সংকট বোধকরি কখনোই ছিল না। আস্থাহীনতার বিপরীত মেরু থেকে ঐকমত্যে পৌঁছা বা সমান্তরালে এগিয়ে যাওয়ার পথ যেন একেবারেই বন্ধ হয়ে গেছে। এ জন্য ‘পারস্পরিক দোষারোপ, প্রতিহিংসার রাজনীতি ও ক্ষমতার মোহ’ দায়ী। রাজনীতিতে প্রতিপক্ষের দুর্বলতা খুঁজে বের করা ও প্রতিযোগিতা গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ কিন্তু ‘একমাত্র আমিই সঠিক’ এ দৃষ্টিভঙ্গি সংকট জিইয়ে রাখে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সমাগত। সর্বস্তরের মানুষ আশা করে, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষার জন্য আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সব দলের অংশগ্রহণে অবাধ, নিরপেক্ষ হোক। রাজনৈতিক সমঝোতা ছাড়া সেটা অসম্ভব। রাজনীতিতে পরস্পরের প্রতি যে আস্থাহীনতা; সেখানে একসঙ্গে বসা ও আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতার পথ খুঁজে বের করার অবস্থা নেই।
কেন আস্থাহীনতা : বিরোধী দলের দৃষ্টিভঙ্গি মোটাদাগে হলো-নির্বাচনে জনমতের প্রতিফলন ঘটার সুযোগ নেই বা ক্ষমতাসীন দল নির্বাচন প্রভাবিত করবে। সরকারি দলের দৃষ্টিভঙ্গি মোটাদাগে-বিরোধী দল পরিস্থিতি ঘোলাটে করে ২০০১ সালের মতো নৈরাজ্য সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে।
ধরে নিলাম নির্বাচনকালীন সরকার ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন ইস্যুতে উভয়ের আশঙ্কাই সঠিক। তবে উত্তরণের উপায় খোঁজার আগে পরিষ্কার হওয়া দরকার ‘কী চাই’ তা চিহ্নিত করা। প্রথমত নির্বাচনে জনমতের প্রতিফলন ঘটতে হবে। দ্বিতীয়ত নির্বাচনোত্তর সহিংসতা বন্ধ করতে হবে। বর্তমান অবস্থায় রাজনৈতিক সরকারের অধীনে নির্বাচনে জনমত প্রতিফলনের সম্ভাবনা কম। প্রশাসনের সর্বস্তরে দলীয়করণ এবং দুর্বল নির্বাচন কমিশন-এজন্য দায়ী। সর্বশেষ ৪ জুন মঙ্গলবার ভোট বন্ধে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ক্ষমতা কমিয়ে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) সংশোধনী বিল জাতীয় সংসদে বিরোধীদলের আপত্তির মুখে পাশ হলো। আরপিওর সংশোধনী অনুযায়ী, রিটার্নিং কর্মকর্তা ফলাফল ঘোষণার পর কোনো আসনের পুরো ফলাফল স্থগিত বা বাতিল করতে পারবে না ইসি। তাই দৃশ্যমান যাত্রা এখনো উলটো পথে। নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য করার জন্য অবাধ, নিরপেক্ষ পরিবেশ এবং প্রাতিষ্ঠানিক বিশ্বাসযোগ্যতা জরুরি। এটা ঠিক করতে হবে প্রধান রাজনৈতিক শক্তিগুলোকেই।
নির্বাচনোত্তর সহিংসতা বন্ধ করা প্রসঙ্গে আসি। ক্ষমতার পালাবদলের পর সদ্য বিদায়ি রাজনৈতিক দলের ওপর নিপীড়ন ক্রমাগত ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। প্রতিহিংসা ও প্রতিশোধপরায়ণতার বিভীষিকা দেখা গেছে নিকট অতীতের সব সদ্য বিদায়ি শাসকের ওপর। বিএনপি, আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি; প্রতিটি দলই ক্ষমতা ছাড়ার পর নির্যাতিত হয়েছে। দেশের বৃহত্তর স্বার্থে এ ক্ষেত্রেও মতৈক্য জরুরি। না হয় ‘আস্থার সংকট’ দূর হবে না, চলতে থাকবে পুনরাবৃত্তি। রাজনৈতিক দল ও আমলাতন্ত্রকে একাকার করে ফেলা আস্থাহীনতা তৈরির জন্য বিশেষভাবে দায়ী। তখন নির্বাচনকালীন সরকারের আমলে প্রশাসনে ওলট-পালট হওয়ার পথ তৈরি হয়। সাম্প্রতিক সময়ে ‘অতিউৎসাহী পুলিশ কর্মকর্তা’দের তালিকা তৈরি আস্থার সংকটের আরেকটি বড় দৃষ্টান্ত। আমলাতন্ত্রে মেধা ও যোগ্যতার মানদণ্ডে নিয়মতান্ত্রিক শাসন ও পেশাদারিত্ব সুশাসনের জন্য যেমন জরুরি, একাধারে পারস্পরিক আস্থার সংকট দূর করতেও সহায়ক হবে।
প্রতিটি দেশে ‘গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকার’ একটা নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য নির্বাচিত হন। একইসঙ্গে প্রতিনিয়ত বিরোধী দলের মাধ্যমে জনগণের কাছে জবাবদিহি অব্যাহত রাখে। সবচেয়ে বড় কথা আস্থা হারালে যে কোনো সময় সংসদ ভেঙে দায়িত্ব ছেড়ে দিতে হয়, এটা গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি। নিকট অতীতে মাত্র ১ বছরে কয়েকবার সংসদ ভেঙে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে খোদ যুক্তরাজ্যে। আমাদের দেশে আস্থা হারানো দূরের কথা ‘প্রশ্নবিদ্ধ’ নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসীন সরকার শুরুতেই আস্থা নিয়ে আসতে ব্যর্থ হয়।
অনাস্থার পটভূমি : গত ৫ দশকের বাংলাদেশে যে কোনো বিবেচনায় দুটি প্রধান রাজনৈতিক ধারা বা শক্তি বিদ্যমান। একটি খালেদা জিয়ার নিরঙ্কুশ নেতৃত্বাধীন বিএনপি, আরেকটি শেখ হাসিনার নিরঙ্কুশ নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ। এদের কাছাকাছি তৃতীয় কোনো উল্লেখযোগ্য শক্তি সংগঠিত হতে পারেনি এখনো। ইসলামি দলগুলোর জিহাদি হুংকার বা বাম দলগুলোর বৈপ্লবিক লড়াই সবকিছু প্রধান দুই শক্তির ক্ষমতার দৌড়ের কাছে একবারেই তুচ্ছ। তাই মোটাদাগে বিএনপির প্রধান প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগ; এটা হলো মাঠের বা ভোটের চিত্র। কিন্তু রাজনৈতিক স্ট্র্যাটেজি সম্পূর্ণ ভিন্ন। গোষ্ঠীগত একাত্মতা ও সহমর্মিতা ‘পরীক্ষিত প্রতিনিধি’ মনোনয়নে গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামক হিসাবে কাজ করে। যেমন পাকিস্তানি শাসকের বিরুদ্ধে বাঙালি জাতীয়তাবাদী চেতনা ও বঞ্চনার চিত্র লড়াইকে দুর্বার করে। পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, আওয়ামী লীগ সরকার রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক দায়িত্বশীল জায়গায় দলীয় একান্ত বিশ্বস্ত না হলে নির্দিষ্ট একটি জেলা ও একটি সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর সদস্যকে আস্থায় রাখে। অনুরূপভাবে, বিএনপি সরকারের সময় রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক দায়িত্বশীল জায়গায় দলীয় একান্ত বিশ্বস্ত না হলে জোটের একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের সদস্য বা ধর্মভীরু সদস্যকে আস্থায় রাখতে দেখা যায়। এ শক্তিগুলো অধিক জনপ্রিয় না হলেও বিশেষ সুসংগঠিত। দুর্দিনে এ সহযোগীরা উভয় দলের প্রতিরক্ষাব্যূহ হিসাবে আগলে রাখতে পারবে এবং বিশ্বস্ত হিসাবে থাকবে; কার্যত এটাই অন্যতম প্রধান সংকট।
মুখে স্বীকার না করলেও, আওয়ামী লীগ তাই প্রতিপক্ষ জোটের এসব সদস্য ও ধর্মভীরু সদস্যদের বিরুদ্ধে ‘ছক ভাঙা’র অ্যাকশনে যায় এবং কথায় কথায় ‘বিএনপি-জামায়াত’ ও ‘মৌলবাদী শক্তি’ জাতীয় বিশেষণ দিয়ে ক্ষোভের প্রকাশ ঘটায়। এতে দীর্ঘমেয়াদে বিএনপির বিনিয়োগটা নস্যাত হয়ে যায়। একইভাবে বিএনপির সময় নির্দিষ্ট একটি জেলা ও বিশেষ সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর অনেক সদস্যকে ‘অঘোষিতভাবে লাল তালিকা’য় নিয়ে আসে। যা আওয়ামী লীগেরও বিশেষ নজর কাড়ে! এটিকে তারা সংখ্যালঘু নির্যাতন হিসাবে প্রচার করে। এ শ্রেণি দুর্বল হয়ে পড়লে দুর্দিনে বিনিয়োগটা কাজে লাগে না। আসলে নির্বাচনের সময় প্রভাব বিস্তারের ইচ্ছা থাকলে কেউ-ই সাজানো ছক ভাঙতে চাইবে না। আরও লক্ষণীয় দিক হলো, উভয় জোটের এসব বিশেষ স্বার্থগোষ্ঠী বড় দলের প্যারালাল নিজেদের চেইন অব কমান্ড বা দেশব্যাপী নেটওয়ার্ক তৈরি করতে পারে সহজেই।
এসবের পাশাপাশি প্রধান প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলকে ভাঙার চেষ্টা, বিকল্প দল গঠনে পৃষ্ঠপোষকতা এবং চূড়ান্ত নিষ্পত্তির আগে আদালতের কাঁধে বন্দুক রেখে প্রতিদ্বন্দ্বীকে বাইরে রেখে ক্ষমতা ধরে রাখার নির্বাচন রাজনৈতিক প্রতিহিংসার নামান্তর। এসবই পরস্পরের আস্থার পরিবেশ নষ্ট করে।
এখন পর্যন্ত আমাদের দেশে এমন বাস্তবতা তৈরি হয়নি যে, নির্বাচনের ৬ মাস আগে শাসকরা ভাববে-আমাকে ভোটারের আস্থা নিয়ে ‘প্রকৃত ভোটে জয়ী হয়ে’ আবার দায়িত্ব নিতে হবে, অথবা বিরোধী দলের সারিতে বসতে হবে। তাদের ভাবতে হয়-
১. অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে দেশে এখন ভালো নির্বাচন হয়।
২. নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে বিরোধী দলের দাবি বেআইনি; এটি আদালত বাতিল করেছে।
৩. সরকারের ‘উন্নয়ন কাজের ধারাবাহিকতার স্বার্থে’ এ সরকার জনগণের ভোটে আগামীতেও নির্বাচিত হবে।
৪. বিএনপি জোট ক্ষমতায় এলে মৌলবাদী শক্তি মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে।
৫. সরকারপ্রধান শুধু দেশে নন-তিনি এখন বিশ্ব নেত্রী। তাকে জনগণ আরও ক্ষমতায় দেখতে চায়।
৬. আন্দোলনে যেহেতু হারাতে পারেনি, কেন বিরোধী দলের কথা শুনতে হবে।
৭. বিরোধী দলের শীর্ষ দুই নেতাই সাজাপ্রাপ্ত, তারা জিতলে কে প্রধানমন্ত্রী হবেন এর নিশ্চয়তা নেই।
৮. যুদ্ধাপরাধী জামায়াত কি বিএনপি জোটে আছে না নেই-পরিষ্কার করতে হবে।
এখন পর্যন্ত আমাদের দেশে কার্যকর বিরোধী দল গড়ে ওঠেনি। তারা সংসদে ছায়া সরকারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়ার অবকাশ পায় না। শুরু থেকেই আস্থাহীনতার লড়াই। আর মামলা-হামলা প্রতিরোধের বেড়াজালে প্রকৃত সাংবিধানিক দায়িত্ব থেকে দূরে রয়ে যায়। বিরোধী দল কেন আস্থার সংকটে ভুগছে, মোটা দাগে তাদের ভাষায়-
১. নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সক্ষমতার অভাব।
২. সিভিল সার্ভিসে দলীয়করণ নজিরবিহীন।
৩. ক্ষমতাসীন দলের ইচ্ছার বাইরে কিছু হওয়ার পরিবেশ নেই।
৪. বিরোধীদলের নেতাকর্মী মামলা-হামলায় পর্যুদস্ত, ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে মাঠে সহাবস্থানের পরিবেশ নেই।
৫. নির্বাচনে বিতর্কিত আইন ও পদ্ধতির দ্বারা প্রভাবিত করার চেষ্টা।
এমতাবস্থায় কোনো পক্ষই প্রতিপক্ষকে আস্থায় নিতে পারছে না। দেশের অভ্যন্তরে সিভিল সোসাইটির সদস্যদের মাঝে বিভক্তির কারণে সমঝোতার লক্ষ্যে উল্লেখযোগ্য তৎপরতা দেখা যায়নি। বিদেশিদের নজরদারি কিংবা ভিসানীতিসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ সরকারকে কিছুটা বিব্রত করলেও ছাড় দেওয়ার মতো চাপ অনুভব করছে না বলেই প্রতীয়মান হয়। সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘সাধারণ মানুষের মতো এ উদ্বেগ আমাদেরও। আমরা একটা অপরাজনীতির কবলে পড়ে গেছি। রাজনীতি হলো একটা প্রক্রিয়া। আলাপ-আলোচনা, মতবিনিময়ের মাধ্যমে ঐকমত্যে পৌঁছানো এবং সমস্যা সমাধানের প্রক্রিয়া। এখন আমাদের রাজনীতি এমন হয়ে গেছে-একে অপরের ছায়াও মাড়ায় না। কথাও বলে না। রাজনীতি চর দখল বা যুদ্ধ নয়। রাজনীতিবিদরা সেটা অনুধাবন করে সমঝোতায় পৌঁছাবে। জাতিকে চরম বিপর্যয় থেকে রক্ষা করবে।’
আস্থার সংকট দূর না হলে ২০১৪ বা ২০১৮ সালের মতো ‘বিতর্কিত নির্বাচনে’র মাধ্যমে ‘প্রশ্নবিদ্ধ সরকার’ গঠিত হবে। বলাবাহুল্য ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচন ছিল বাস্তবে একটি ‘বয়কট’-এর নির্বাচন। আস্থা তো অনেক পরের এবং সূক্ষ্ম বিষয়। আপনি যদি বয়কটকে আমলে না নেন তবে আস্থা-অনাস্থার প্রশ্ন অবান্তর। একটা কথা বলতেই হয়, বিএনপিতে যেমন খালেদা জিয়ার বিকল্প তৈরি হয়নি; তেমনি আওয়ামী লীগে শেখ হাসিনার বিকল্প নেই। আওয়ামী লীগের আগামী নেতৃত্বে সজীব ওয়াজেদ জয়ের প্যারালাল কাউকে ভাবতে পারে না অনুসারীরা-তেমনি বিএনপির আগামী নেতৃত্বে তারেক রহমানের প্যারালাল কাউকে ভাবতে পারে না এর অনুসারীরা! এটাই রাজনৈতিক বাস্তবতা। এ বাস্তবতা এড়িয়ে গিয়ে যতই মনগড়া তথ্য-উপাত্ত দাঁড় করে পরিস্থিতি মোকাবিলা করি; তা হবে হঠকারিতা। নেতৃত্ব কোনোদিন প্রতিপক্ষের পছন্দে পরিবর্তন হয় না। এটা ‘মনে রেখে এবং মেনে নিয়ে’ একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চাইলে পারস্পরিক আস্থার সংকট দূর করতে হবে। আস্থা তৈরির জন্য বিরোধী দলের প্রধান দাবি ‘গ্রহণযোগ্য নির্বাচনকালীন সরকার’ প্রতিষ্ঠায় ঐকমত্যে পৌঁছা। সেটা যে নামেই হোক। নির্বাচনে কে জয়ী হবে সেটা যেমন নিশ্চিত নয়-তবু গত কয়েক টার্ম নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে বিরোধী দল এগিয়ে যায়! এটাও ক্ষমতাসীন দলের আস্থার সংকটের অন্যতম প্রধান কারণ। নির্বাচনের পর সেফ এক্সিটের নিশ্চয়তা তৈরি হলে ‘গণতান্ত্রিক যাত্রা’ মসৃণ হবে। কোনো দল বিরোধী দলে গেলেও অচিরেই ‘জনপ্রিয়তা’ অর্জনের মাধ্যমে ক্ষমতাসীন হওয়ার রাস্তা উন্মুক্ত থাকবে। তাই দীর্ঘমেয়াদি বিবেচনায় পারস্পরিক ‘মামলা-হামলা’র সংস্কৃতি থেকে বের হওয়ার সর্বোত্তম উপায় বের করতে হবে; এটাও অন্যতম চ্যালেঞ্জ। বিশেষ ব্যতিক্রম ছাড়া সরকারের কাজের ধারাবাহিকতা রক্ষায় ঐকমত্য গড়ে তুলতে হবে। সংসদ পরিচালনার বিষয়ে প্রধান দুই দলের সময়োপযোগী কর্ম-পরিকল্পনার অঙ্গীকার করতে হবে। আশা করা যায় দুই-এক টার্ম চড়াই-উতরাই পেরিয়ে আগামী প্রজন্মের জন্য একটা চমৎকার গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির সূচনা করা কঠিন হবে না। এ জন্য আমাদের উদারচিত্তে, সুচিন্তিতভাবে ‘আস্থার সংকট’ দূর করতে হবে।
বোরহানউদ্দীন ইউসুফ : প্রধান সমন্বয়কারী, কাউন্সিল ফর ন্যাশনাল এজেন্ডা (সিএনএ) ও ফেমা’র সাবেক দীর্ঘমেয়াদি পর্যবেক্ষক
borhun2022@gmail.com