Logo
Logo
×

বাতায়ন

সুস্থ জীবনের জন্য লাইফস্টাইল বদলাতে হবে

Icon

ড. মুনীরউদ্দিন আহমদ

প্রকাশ: ০৪ জুলাই ২০২২, ০২:০০ পিএম

প্রিন্ট সংস্করণ

সুস্থ জীবনের জন্য লাইফস্টাইল বদলাতে হবে

বর্তমান বিশ্বে জ্ঞান-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত উন্নয়ন আমাদের যান্ত্রিক ও প্রকৃতিবিমুখ করে তুলেছে। প্রাকৃতিক জীবনযাত্রা থেকে মানুষকে কৃত্রিম, অসুস্থ ও ক্ষতিকর জীবনযাপনের প্রতি ঠেলে দিচ্ছে তথ্যপ্রযুক্তির উন্নয়ন ও বিশ্বায়ন প্রক্রিয়া। প্রাকৃতিক জীবনযাত্রা থেকে সরে আসার কারণে বিশ্বজুড়ে মানুষের শরীর-মন-আত্মার ওপর প্রবল বিরূপ প্রভাব পড়ছে।

ফলে আমরা অতিমাত্রায় অসুস্থ হয়ে পড়ছি। সুস্থ-সুন্দর জীবনের জন্য আমাদের নিজেদের বদলাতে হবে। ওষুধ ও স্বাস্থ্য সম্পর্কে আমাদের সচেতন হতে হবে, অন্যকে বদলানোর জন্য গণসচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। আমাদের জানতে হবে কোনটি নিরাপদ ওষুধ আর কোনটি ক্ষতিকর ও অপ্রয়োজনীয় ওষুধ। আমরা হয়তো জানি না, লাইফস্টাইল পরিবর্তন করে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ওষুধ ছাড়াই সুস্থ-সুন্দর জীবনযাপন করতে পারি।

স্বাস্থ্যকর পরিবেশে বসবাস, সঠিক ও পুষ্টিকর খাবার খাওয়া, নিয়মিত ব্যায়াম করা, ধূমপান বর্জন করা, লবণ, চর্বি, ক্ষতিকর কোলেস্টেরল এবং বিপুল ক্যালরিসমৃদ্ধ খাবার পরিহার, মদ্যপান না করা, পর্যাপ্ত বিশুদ্ধ পানি পান করা, পর্যাপ্ত নিরুপদ্রব ঘুম এবং দুশ্চিন্তামুক্ত জীবনযাপন আমাদের অনেক রোগের হাত থেকে রক্ষা করতে পারে। আমি আমার এক বইয়ে লিখেছিলাম- সব রোগের ওষুধ নেই, সব রোগে ওষুধের প্রয়োজনও নেই এবং রোগ নিয়ন্ত্রণ বা প্রতিকারে চিকিৎসা বিজ্ঞানের হাতে এখনো কোনো জাদুর কাঠি নেই, যা ছোঁয়ালেই রোগ ভালো হয়ে যাবে। সুস্থ জীবনযাপনের জন্য স্বাস্থ্য পরিচর্যা, রোগের উৎপত্তি প্রতিরোধ ও প্রতিকার এবং ওষুধ কোম্পানি ও চিকিৎসকদের অনৈতিক কর্মকাণ্ড সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য সবারই কিছু সাধারণ জ্ঞান অর্জন অবশ্যই দরকার। কারণ শরীর ও রোগ সম্পর্কে জ্ঞান ও সচেতনতা মানুষকে আত্মবিশ্বাসী করে তোলে এবং রোগকে সুষ্ঠু ও দক্ষতার সঙ্গে মোকাবিলা করার মতো শক্তি জোগায়।

এ শক্তিতে বলীয়ান হয়ে দৃঢ়প্রত্যয় নিয়ে রোগ প্রতিহত ও প্রতিরোধ করতে পারলে ওষুধের ওপর আমাদের নির্ভরশীলতা কমে যাবে। বর্তমান বিশ্বে প্রচলিত ওষুধের ওপর বিভিন্ন সময়ে লেখা প্রবন্ধগুলোয় আমি তুলে ধরেছি-সবসময় ওষুধের ওপর বেশি নির্ভর করার কোনো উপায় নেই। আমি বিশ্বাস করি-আমার এ লেখাটি পড়লে নকল, ভেজাল, অপ্রয়োজনীয় ও ক্ষতিকর ওষুধ ছাড়াই সুস্থ-সুন্দর, রোগমুক্ত জীবনযাপনের জন্য পর্যাপ্ত জ্ঞান ও অনুপ্রেরণা লাভ করা সহজ হবে।

চিকিৎসাশাস্ত্রের সংজ্ঞামতে কোনো ওষুধই নিরাপদ নয়। ওষুধ শরীরের জন্য বহিরাগত একটি রাসায়নিক পদার্থ এবং প্রতিটি বহিরাগত রাসায়নিক পদার্থেরই শরীরে কমবেশি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া, বিষক্রিয়া ও মিথষ্ক্রিয়া থাকে। একজন ফার্মাসিস্ট ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক হওয়ার সুবাদে আমার ওষুধশিল্প এবং চিকিৎসা পেশাকে সূক্ষ্মভাবে দেখা, জানা ও চেনার সুযোগ হয়েছে। কয়েক দশক ধরে ওষুধ শিল্প ও চিকিৎসা পেশায় বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি ও প্রতারণার বহু ঘটনা আমার নজরে এসেছে। ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া, বিষক্রিয়া ও মিথষ্ক্রিয়ার কথা ধর্তব্যের মধ্যে না নিয়ে অনিরাপদ, অপ্রয়োজনীয়, ক্ষতিকর ও ব্যবহার অনুপযোগী ওষুধ খাইয়ে ওষুধ কোম্পানি, দুর্নীতিবাজ ব্যবসায়ী এবং চিকিৎসকদের অনেকেই কীভাবে বিশ্বের অসহায় দরিদ্র মানুষকে ঠকিয়ে কোটি কোটি টাকা উপার্জন করছে এবং এসব ওষুধ কিনে ও সেবন করে মানুষ শারীরিক ও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ও সর্বস্বান্ত হচ্ছে। তার বিস্তৃত বিবরণ তুলে ধরার নৈতিক ও পেশাগত তাগিদ অনুভব করার কারণে এ প্রবন্ধটি লেখার প্রয়োজন অনুভব করেছি।

ওষুধের যুক্তিসংগত প্রয়োগের মাধ্যমে ক্ষতিকর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলো যথাসম্ভব ন্যূনতম রেখে রোগীকে সর্বোচ্চ মাত্রায় সুফল প্রদানের প্রচেষ্টাই চিকিৎসা বিজ্ঞানের আসল লক্ষ্য। রোগ প্রতিরোধ-প্রতিকারে আমরা ওষুধ ব্যবহার করি। ওষুধের রোগ সারানোর অপূর্ব ক্ষমতাকেই শুধু আমরা ধর্তব্যের মধ্যে নিয়ে থাকি। কিন্তু রোগ সারানোর পাশাপাশি ওষুধ আমাদের শরীরে কত মারাত্মক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বা বিষক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে, তা আমরা প্রায়ই বুঝে উঠতে পারি না বা মনে রাখি না। ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বা বিষক্রিয়ার কারণে বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ মানুষ মারা যাচ্ছে। ওষুধের অযৌক্তিক ও নির্বিচার ব্যবহার, বিভিন্ন স্তরে দুর্নীতি ও অনৈতিক কর্মকাণ্ডের ফলে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এ প্রাণঘাতী পরিস্থিতির উদ্ভব হয়। বিশ্বের ওষুধ কোম্পানিগুলো একদিকে যেমন ওষুধ উদ্ভাবন, ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল ও বিপণনে অনৈতিক ও প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে, অন্যদিকে বেশির ভাগ চিকিৎসক ব্যবসায়িক স্বার্থে নির্বিচারে ঢালাওভাবে ওষুধ প্রয়োগের মাধ্যমে তাদের আর্থিক ফায়দা লুটছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বিশ্বের লাখ লাখ মানুষ। অসহায়, দরিদ্র ও সাধারণ মানুষের অজ্ঞতা ও সরলতার সুযোগ নিয়ে একশ্রেণির ওষুধ কোম্পানি ও চিকিৎসক নিষ্ঠুর খেলায় মেতে উঠেছে। মনে রাখা উচিত, ওষুধ সাধারণ ভোগ্যপণ্যের মতো কোনো পণ্য নয়। ওষুধ দেওয়া বা নেওয়ার ক্ষেত্রে বিশেষ সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত। দুর্ভাগ্যবশত সেই সাবধানতা অনেক ক্ষেত্রেই মানা হয় না।

অ্যান্টিবায়োটিকের অপব্যবহার বা নির্বিচার ব্যবহার আমাদের প্রতিনিয়তই অন্য এক ধরনের ভয়ংকর বিপদ ও ঝুঁকির দিকে ঠেলে দিচ্ছে। গত সাত দশক ধরে অ্যান্টিবায়োটিককে সংক্রামক রোগের প্রতিকারে ম্যাজিক বুলেট হিসাবে গণ্য করে আসা হচ্ছে। অ্যান্টিবায়োটিক আবিষ্কারের পর থেকে একদিকে যেমন লক্ষ-কোটি লোকের জীবনরক্ষা করা গেছে, তেমনই এসব ওষুধের বিষক্রিয়া, বিরূপ প্রতিক্রিয়া ও অপপ্রয়োগের ফলে ভোগান্তি ছাড়াও বিশ্বের লাখ লাখ মানুষকে জীবন দিতে হয়েছে। যুক্তিহীন অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারে অনেক জীবাণু ইতোমধ্যে অ্যান্টিবায়োটিকের কার্যকারিতা রোধ করে বা ধ্বংস করে সফল চ্যালেঞ্জার হিসাবে টিকে থাকার দক্ষতা ও ক্ষমতা অর্জন করেছে। জীবাণুর প্রতিরোধ ক্ষমতা অর্জন এ শতাব্দীর চিকিৎসা বিজ্ঞানের জন্য এক ভয়াবহ চ্যালেঞ্জ হিসাবে আবির্ভূত হয়েছে। পর্যাপ্ত সংখ্যক নতুন নতুন কার্যকর অ্যান্টিবায়োটিক আবিষ্কৃত না হলে এবং অ্যান্টিবায়োটিকের যুক্তিসংগত প্রয়োগ নিশ্চিত না করা গেলে ভবিষ্যতে মানবসভ্যতাকে সমূহ বিপদের সম্মুখীন হতে হবে-এটি নিশ্চিতভাবে বলা যায়। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি-এ চির সত্য কথাটি অধিকাংশ চিকিৎসকই মানেন না, আমরাও মানি না।

রোগ শরীরের স্বাভাবিক সুস্থ অবস্থার পরিবর্তন বা ক্ষতি করে, অনেক সময় অপূরণীয় বিপর্যয় ডেকে আনে। এ অবস্থায় রোগ প্রতিকারের উদ্দেশ্যে চিকিৎসকের কাছে যাওয়া ছাড়া আর কোনো বিকল্প থাকে না। রোগীর চিকিৎসকের কাছে যাওয়া যেমন সুখকর কোনো ব্যাপার নয়, ওষুধও তেমনি সম্পূর্ণ নিরাপদ কোনো বস্তু নয়। প্রশ্ন আসতে পারে, ওষুধের ক্ষতিকর প্রভাব থাকা সত্ত্বেও আমরা ওষুধ খাই কেন। ওষুধ জীবনরক্ষাকারী বস্তু। অনেক রোগের ক্ষেত্রে ওষুধ না খেলে রোগ জটিল আকার ধারণ করতে পারে। ফলে রোগীর শরীরের ক্ষতি ছাড়া মৃত্যুও হতে পারে। তাই গ্রহণযোগ্য মাত্রায় পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বা ওষুধের অপরাপর ক্ষতিকর দিকগুলো বিবেচনার মধ্যে নিয়ে ওষুধ গ্রহণ করতে বা দিতে হয়। আমরা প্রায়ই একটি ভ্রান্ত ধারণায় ভুগী।

অনেকেই মনে করেন-সব রোগের প্রতিকারে ওষুধ আবশ্যক বা সব রোগের ওষুধ রয়েছে। ধারণাটি সত্যি নয়। সব রোগের জন্য ওষুধ দরকার হয় না বা বহু রোগের ওষুধ এখনো আবিষ্কৃত হয়নি। ঠান্ডালাগা বা ইনফ্লুয়েঞ্জার জন্য কোনো ওষুধ নেই বা দরকারও হয় না। সতর্কতা অবলম্বন করলে এ রোগ এমনিতেই ভালো হয়ে যায়। ক্যানসার বা এইডস রোগের শতভাগ ফলপ্রসূ কোনো চিকিৎসা এখনো আমাদের হাতে নেই। বিশ্বজুড়ে রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, হৃদ্রোগ, স্ট্রোকে এখনো লাখ লাখ লোক প্রাণ হারাচ্ছে। এসব রোগের আধুনিক চিকিৎসা থাকা সত্ত্বেও এ জটিল ও মারাত্মক রোগগুলোকে এখনো পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি। মাদকদ্রব্য গ্রহণে যারা অভ্যস্ত বা ক্ষতিগ্রস্ত তাদের সুস্থ করে স্বাভাবিক জীবনে পুনর্বাসন বর্তমান যুগের অন্য এক ভিন্ন চ্যালেঞ্জ। এ ক্ষেত্রেও প্রতিকার যেমন জটিল, আত্মনিয়ন্ত্রণ, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় উদ্যোগের মাধ্যমে প্রতিরোধের উপায় খুঁজে বের করা তেমন জটিল নয়। রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার জন্য প্রয়োজন উপযুক্ত শিক্ষা, কুসংস্কার বর্জন, বাস্তবসম্মত বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং সঠিক সময়ে উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ।

নকল ভেজাল বা নিম্নমানের ওষুধ গ্রহণের ফলে শরীরে সৃষ্ট প্রতিক্রিয়ার কারণে অনেক সময় নানা ধরনের বিভ্রান্তি দেখা দেয়। এসব বিভ্রান্তির কারণে মূল কালপ্রিট নকল, ভেজাল বা ক্ষতিকর ওষুধের পরিবর্তে আমরা আমাদের স্বাস্থ্যের অবনতি বা মৃত্যুর জন্য অন্যসব নির্দোষ উপাদানকে দায়ী করে বসি। ওষুধ যখন সেবন করা হয়, তখন বোঝার উপায় থাকে না ওষুধটি নকল বা আসল। ওষুধ সেবনের পর কাক্সিক্ষত ফলাফল পাওয়া না গেলে রোগী ভাবে তার রোগ নির্ণয় ঠিক হয়নি। তখন রোগী অন্য ডাক্তারের কাছে যায়, বহু পরীক্ষা-নিরীক্ষা সম্পন্ন করতে গিয়ে আর্থিকভাবে সর্বস্বান্ত হয়। নকল ভেজাল ওষুধের কারণে শরীরে কোনো বিষক্রিয়া বা ক্ষতিকর অবস্থার সৃষ্টি হলে ওষুধের অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়া হিসাবে চিহ্নিত করে রোগীকে অন্য ওষুধ প্রদান করা হয়।

মূল দোষী সেই নকল বা ভেজাল ওষুধটি বরাবরই দৃষ্টির বাইরে থেকে যায়। অনেক ক্ষেত্রে নকল ভেজাল ক্ষতিকর ওষুধের কারণে কারও স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটলে বা মৃত্যু হলে দোষ হয় রোগের, নতুবা ডাক্তারের অথবা হাসপাতালের। আমরা খুব কমই ভাবি নকল ভেজাল, নিম্নমানের ওষুধের কারণে বিশ্বের অধিকাংশ রোগী মারা যায়। তাই এসব নকল ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধের করালগ্রাস থেকে আমাদের বাঁচতে হবে এবং অন্যকেও বাঁচাতে হবে।

আমি অতীতে আমার লেখায় বহুবার উল্লেখ করেছি-বিশ্বের ওষুধ প্রস্তুতকারক কোম্পানিগুলো তাদের অপ্রয়োজনীয় ও বাজে ওষুধ বিপণনে প্রতি বছর প্রতি চিকিৎসকের পেছনে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে থাকে। ওষুধ কোম্পানিগুলোর এ বিশাল অবৈধ ও অনৈতিক বিনিয়োগ কোনোমতেই অর্থহীন নয়। কারণ এ বিনিয়োগ ওষুধ কোম্পানিগুলোকে শতসহস্রগুণ বেশি মুনাফা অর্জনে সাহায্য করছে। এসব মুনাফার অর্থ যাদের পকেট থেকে আসে তারা অসহায়-নিরীহ মানুষ। তারা জানে না কী ওষুধ তারা নিচ্ছে, কেন নিচ্ছে, এসব ওষুধের উপকারিতা, উপযোগিতা বা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কী। ওষুধ কোম্পানিগুলো তাদের উদ্ভাবিত ও বাজারজাত ওষুধের ট্রায়ালের জন্য আর্থিক, বৈষয়িক ও রোগ প্রতিকারের প্রলোভন দেখিয়ে তথ্য গোপন করে বিশ্বের অনুন্নত ও দরিদ্র দেশগুলোর অসহয়ায়, দরিদ্র ও অজ্ঞ সাধারণ মানুষকে গিনিপিগের মতো ব্যবহার করে আসছে।

এ ধরনের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল অবৈধ ও অনৈতিক। এ ধরনের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে বিশ্বের হাজার হাজার মানুষ বিষক্রিয়া, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বা মিথষ্ক্রিয়ার কারণে জীবন দিয়েছে, হাজার হাজার মানুষ পঙ্গু হয়ে গেছে বা শারীরিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ওষুধ কোম্পানিগুলোর এসব অবৈধ ও অনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ করতে হবে। বহুজাতিক ওষুধ কোম্পানিগুলোর এতসব অমানবিক ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের বিরুদ্ধে সরকারকে অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে এবং দোষী সাব্যস্ত হলে এসব কোম্পানির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। যেমন করেছে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত।

মানুষ ভাজা-পোড়া, তৈলাক্ত খাবার বেশি পছন্দ করে। এসব খাবার খেতে সুস্বাদু হলেও স্বাস্থ্যসম্মত নয় বলে বেশি করে ফল-মূল ও শাকসবজি খাওয়া উচিত। দিন দীর্ঘ ও গরমের কারণে আমাদের শরীরে পানিশূন্যতার সৃষ্টি হয়। ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্যতা আপনার শরীরে বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। মনে রাখবেন-পানির বিকল্প হিমশীতল ফান্টা, সেভেন আপ বা কোকাকোলা নয়। এসব কোল্ডড্রিংক আপনার শরীরের উপকারের চেয়ে অপকারই করবে বেশি। অনেকেই মনে করেন, কফি, চা ও সোডা থেকে তারা পর্যাপ্ত পানি আহরণ করেন। চা ও কফিতে রয়েছে ক্যাফেইন, যা সাধারণত ডাইইউরেটিক হিসাবে কাজ করে। ডাইইউরেটিকের কাজ হলো শরীর থেকে পানি বের করে দেওয়া। আরও একটি জরুরি কথা। বেশি চা বা কফি পান আপনার ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাবে, পর্যাপ্ত ঘুম আপনার একান্ত প্রয়োজন।

ড. মুনীরউদ্দিন আহমদ : প্রফেসর ও বিভাগীয় প্রধান, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি

drmuniruddin@gmail.com

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম