
বৈষম্য নিয়ে আলোচনা এখন সর্বস্তরে দানা বেঁধে উঠছে। রাষ্ট্রীয় নীতি হতে পারিবারিক চর্চা-সবখানেই ন্যায্যতার প্রশ্ন প্রবল হয়ে উঠছে। অধিকার ও সুযোগের সাম্য নেই-কান পাতলেই এমন অভিযোগ শোনা যায়। মুক্তিযুদ্ধ যে স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য সংঘটিত হয়েছিল তার স্বরূপই ছিল শোষণমুক্ত ও ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্রব্যবস্থা।
সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য অর্থনীতিতেও পরিবর্তনের আয়োজন চলছিল। পঁচাত্তরের পর পরিবর্তিত রাজনীতি ও অর্থনীতি বিভিন্ন সেবা খাতে রাষ্ট্রের অংশীদারত্ব ক্রমেই সংকুচিত করে ফেলে। স্বাধীন রাষ্ট্রে শিক্ষার চরিত্র ও লক্ষ্য নির্ধারণে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা কার্যত অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়ে। তৎকালীন বিশ্বব্যবস্থাও তদানীন্তন শাসকগোষ্ঠীর আশ্রিত দর্শনের অনুকূলে চলে যায়। সর্বজনীন ও সমতাভিত্তিক শিক্ষার অনুপস্থিতিতে জাতিসত্তার সুষম বিকাশ বাধাপ্রাপ্ত হয়। অসাম্য ও বিভক্তি রাষ্ট্রগঠনের প্রক্রিয়াকেও ক্ষতিগ্রস্ত করে।
শিক্ষাকাঠামোয় গ্রাম-শহর, ধনী-দরিদ্র, কারিগরি-মাদ্রাসা, বাংলা-ইংরেজি বা সরকারি-বেসরকারি-নানা মাপকাঠি ও প্রেক্ষিত সমসত্ত্ব একটি সমাজে বিভক্তির নানা চোরাস্রোত তৈরি করে; যা জনমানসকেও দ্বন্দ্ববহুল ও জটিল করে তোলে। মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত একটি দেশের দর্শন, রাষ্ট্রীয় নীতি কী হবে সে মৌলিক প্রশ্ন ক্রমেই গুরুত্বহীন হয়ে পড়ে। দ্রুত ধনী হয়ে ওঠা একটি উচ্চবিত্ত সমাজের বিকাশ ক্ষমতার কেন্দ্রকে ভারসাম্যহীন করে ফেলে। দ্রুতগতিতে একটি সাম্প্রদায়িক ও কায়েমি স্বার্থগোষ্ঠী দেশ পরিচালনায় চালকের আসনে চলে আসে। আর রাষ্ট্রের প্রশ্রয়ে মুনাফাসর্বস্ব বাণিজ্যে মেতে ওঠে সুবিধাভোগী একটি গোষ্ঠী। বাঙালির স্বাতন্ত্র্য ও সহজাত শক্তির উৎস আবহমান শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের মাঝে নিহিত।
পরিকল্পিতভাবে দেশের নিু ও মধ্যবিত্তের শিক্ষাকে বিভক্ত ও মানহীন করে ফেলা হয়। দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনঅধ্যুষিত শিক্ষার পরিসরকে দখল করে অপরিণামদর্শী এক ব্যবস্থা; যেখানে দুর্নীতি, নকল ও সন্ত্রাস একচেটিয়া আধিপত্য কায়েম করে। রাষ্ট্রের অবহেলায় বিপজ্জনকভাবে বেড়ে উঠতে থাকে মূল্যবোধহীন, অদক্ষ সনদনির্ভর একটি শ্রেণি; যারা কেবলই বেকারত্ব বাড়ায়, সমাজে অস্থিরতার কারণ হয়ে ওঠে। উগ্র সাম্প্রদায়িক ও অসহনশীল শ্রেণির বিকাশ এ প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
রাজনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সুস্থ চিন্তা, যুক্তিশীল মনন কিংবা বিজ্ঞানমনস্ক নাগরিক সমাজ নির্মাণ কঠিন হয়ে পড়ে। ক্ষমতালোভী সামরিক ও বেসামরিক আমলাতন্ত্র এ সুযোগকে ভালোভাবে কাজে লাগায়। নব্বইয়ের পর গণতান্ত্রিক রাজনীতির আনুষ্ঠানিক প্রত্যাবর্তন ঘটলেও পরিস্থিতির লক্ষণীয় উন্নতি হয়নি। সংখ্যাগরিষ্ঠ শিক্ষার্থীর মানসম্পন্ন শিক্ষার অধিকার রাষ্ট্রের অগ্রাধিকার এজেন্ডায় জায়গা পায়নি। অনস্বীকার্য যে, পঁচাত্তর থেকে বর্তমান সময় অবধি পাঠ্যপুস্তক পরিবর্তন অব্যাহত রয়েছে। ফলে সামাজিক বিভাজনের ক্ষেত্র মজবুত হয়েছে। বিভেদের দেয়াল ক্রমেই চওড়া হয়েছে। অসহিষ্ণুতা ও ঘৃণা প্রশ্রয় পেয়েছে। নগরকেন্দ্রিক এলিট শ্রেণির ইংরেজি মাধ্যমে লেখাপড়া ও বিদেশি সিলেবাস শিক্ষার্থীর আচরণে বিজাতীয় ভাবধারার ছাপ স্পষ্ট করেছে। মনোজগতে বাঙালি সংস্কৃতি, জাতীয়তা ও দেশপ্রেমের আবেগ ফিকে হয়ে এসেছে। সরকারি একটি সূত্রমতে দেশে ১৪৬টি ইংরেজি মাধ্যম স্কুল আছে। প্রায় ৮০ হাজার ছাত্রছাত্রী এসব স্কুলে পড়াশোনা করে। কেবল ঢাকাতেই ইংরেজি ভার্সন স্কুলের সংখ্যা ৫২।
গ্রামীণ দরিদ্র জনগোষ্ঠীর আরও একটি শ্রেণির জায়গা হয়েছে মাদ্রাসায়। উপমহাদেশে প্রথম মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠিত হয় কলকাতায় ১৭৮০ সালে। ১৯৭০ সালের আগে দেশে ২ হাজার ৭২১টি মাদ্রাসা ছিল। আর ২০০৮ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ১৪ হাজার ১৫২টিতে। এখন তা ৫৪ হাজার ১৩০। ৫০ লাখেরও বেশি ছাত্রছাত্রী লেখাপড়া করে এসব প্রতিষ্ঠানে। ৮২টি কামিল মাদ্রাসায় অনার্স কোর্সও চলমান আছে। অথচ এ বিপুল জনগোষ্ঠীর জন্য মানসম্পন্ন, সময়োপযোগী শিক্ষার সুযোগ নেই বললেই চলে। কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৮ হাজার ৬৭৫।
১২ লাখ শিক্ষার্থী এখন এসব প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া করে। ৫ বছর আগেও এ সংখ্যা ৯ লাখের বেশি ছিল না। ১৫ বছর আগেও কারিগরি শিক্ষায় অংশগ্রহণ ২ শতাংশেরও কম ছিল। এখন তা বেড়ে ২১ শতাংশ হয়েছে। দক্ষতামূলক কর্মমুখী শিক্ষার প্রতি সরকারের নজর বেড়েছে। স্ব-কর্মসংস্থানের সুযোগ থাকায় ছাত্রছাত্রীর আগ্রহও বাড়ছে। তবে কারিগরি প্রতিষ্ঠানগুলোতে লেখাপড়া কেমন হচ্ছে বা শিক্ষার মান কোন পর্যায়ে রয়েছে, তা নজরদারিতে আনা জরুরি। অন্যথায় অপচয় ও বৈষম্যের পরিধি কেবলই বাড়বে। তবে সময়ের সংকেত বুঝতে পেরে সাধারণ থেকে মাদ্রাসা-সব শিক্ষাক্রমেই সাম্প্রতিককালে বৃত্তিমূলক শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। এটা নিঃসন্দেহে ভালো উদ্যোগ।
এরপর রয়েছে গরিষ্ঠ অংশের সাধারণ স্কুল-কলেজ। প্রায় ৩ দশক দেশগঠনের এ গুরুত্বপূর্ণ ধাপে কর্তৃপক্ষের চূড়ান্ত অমনোযোগ ও ঔদাসীন্যের পরিচয় পাওয়া যায়। শিক্ষাবাণিজ্য, দুর্নীতি ও অব্যবস্থা শিক্ষাসেবার বিশ্বাসযোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। দক্ষ ও প্রশিক্ষিত শিক্ষকের তীব্র অভাব লক্ষ করা যায়। পরীক্ষার সনদও সন্দেহের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে যায়। বিজ্ঞান শিক্ষার পরিবেশ বৈরী হয়ে ওঠে। অভ্যন্তরীণ ব্যবহারিক ক্লাসের চর্চা প্রায় বিলুপ্ত হয়ে পড়ে। প্রাতিষ্ঠানিক গ্রন্থাগার ও ল্যাব গুরুত্ব হারাতে থাকে। পাবলিক পরীক্ষায় এখন নকল প্রায় উঠে গেলেও সুষ্ঠু পরীক্ষা বলতে যা বোঝায়, তা অনেক ক্ষেত্রেই হয় না। কোচিং-গাইডের দাপট, শ্রেণিকক্ষে সক্রিয়তার অভাব ও মূল্যবোধের অবক্ষয় শিক্ষার মানকে হুমকির মধ্যে ফেলে দেয়। ইনকোর্স থেকে ব্যবহারিক পরীক্ষা-সবখানেই বোঝাপড়ার সংস্কৃতি নামে নতুন একটা চর্চা কর্তৃত্ব আরম্ভ করে।
শহরের প্রতিষ্ঠানগুলোও ভালো নয়। এখানে বিত্তবানের কাছে সুযোগ থেকে যাচ্ছে। এরা প্রতিষ্ঠানকে পাশ কাটিয়ে নিজের উদ্যোগে সন্তানকে প্রস্তুত করছে। উদ্দেশ্য, বিদেশে দক্ষ কর্মী বা পেশাদার হিসাবে কাজ করতে পারা। এরা দেশকে ভালোবাসতে শিখছে না। স্বার্থপর হয়ে বেড়ে উঠছে। প্রবাসে জীবন উপভোগের স্বপ্নে এরা বিভোর। করোনাকাল আরও বিভক্তি তৈরি করেছে। প্রযুক্তিগত বিভাজনও মহামারির সৃষ্টি। সংক্ষিপ্ত সিলেবাস ও অনলাইন ক্লাস গরিব মানুষের সন্তানদের বেশ পিছিয়ে দিয়েছে। ব্যবহারিক ক্লাসগুলোও ভালোভাবে হয়নি। ড্যামেজ কন্ট্রোলে তদারকি কীভাবে হচ্ছে, তা বোঝা যায় না।
অনার্স কোর্স আরেকটি বৈষম্যের জায়গা। ’৯২ সাল থেকে এ অনার্স কোর্সের প্রবর্তন। মফস্বলে অপ্রস্তুত অবকাঠামোর ওপর দাঁড়িয়ে। যখন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মান নিয়েই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল, ঠিক তখনই তৈরি হলো অনার্স কোর্স বিকেন্দ্রীকরণ প্রবাহ। এক্ষেত্রে বেপরোয়াভাবে মানহীন শিক্ষাকে প্রশ্রয় দেওয়া হলো। মনে আছে, আশির দশকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা, শিক্ষকের মান, মূল্যায়ন প্রক্রিয়া ও শিক্ষা উপকরণ, বিশেষ করে গ্রন্থাগারের মাপকাঠিতে অনার্স কিংবা মাস্টার্স কোর্সের পঠন-পাঠন মোটামুটি মানসম্মত ছিল। এরপরও অনেককে ঠাট্টা করে বলতে শুনেছি-দেশে মাত্র দেড়টা বিশ্ববিদ্যালয় আছে। একটি ঢাকা আর বাকি অর্ধেক রাজশাহী। অনার্স বা মাস্টার্স কোর্সে একটি পেপারের জন্য বিদেশফেরত একাধিক বিশেষজ্ঞ শিক্ষক ছিলেন, যারা অনেকেই দেশে-বিদেশে খ্যাতির শীর্ষে উঠেছিলেন। ইংরেজি বিষয়ের শিক্ষার্থীদের দেখেছি ব্রিটিশ কাউন্সিল, সেমিনার ও সেন্ট্রাল লাইব্রেরির কার্ড করে লেখাপড়া করতে। ফলাফলে দেখা গেছে-বড় সংখ্যায় শিক্ষার্থীরা তৃতীয় শ্রেণি, এমনকি সম্মান ডিগ্রি না পেয়ে স্রেফ পাস সনদ পেয়েছে। তবে এদের অনেককেই সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে সচিব পর্যন্ত উন্নীত হতে দেখেছি। বিজ্ঞান অনুষদে যে কোনো ছাত্রছাত্রীকে ৬ ঘণ্টা ব্যবহারিক ক্লাস করতে হয়েছে। তবুও পাসের গ্যারান্টি ছিল না। অথচ ’৯২ সাল থেকে এ অনার্স মফস্বল পর্যন্ত ছড়িয়ে দেওয়া হয়। এসব বিষয়ে সনদ অর্জন এত সহজ হয়ে যায় যে, মনেই হয়নি কয়েক বছর আগে কত পড়াশোনা করে শিক্ষার্থীদের ডিগ্রি অর্জন করতে হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের অন্য একটি হতাশা ও উদ্বেগের কারণ ছিল-একটি দুর্বল ব্যাকগ্রাউন্ডের শিক্ষার্থী সহজে পাস করার বিষয় পছন্দ করতে পারত। ফলে তারা খুব সহজ পথে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সনদ পেয়ে চাকরির বাজারে এগিয়ে যেত। চিকিৎসা-প্রকৌশল, পদার্থ-রসায়ন, ইংরেজি-বাংলা, ইতিহাস-দর্শন-প্রাপ্ত সনদই চাকরির বাজারে সবার নিয়ামক হয়ে উঠত।
পাসকোর্সের ক্ষেত্রেও দেখেছি-একসময় পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, গণিত নিয়ে স্নাতক হওয়া রীতিমতো কষ্টসাধ্য ছিল। অথচ কলা বা বাণিজ্যে তা ছিল অনেক সহজ। একদা ক্লাসের ফার্স্টবয় শুধু বিভাগ নির্বাচনের কারণে পেছনের সারিতে চলে গেছে। দেখা যেত মেধার অনেক অপচয় হয়েছে বিজ্ঞান পড়তে গিয়ে। বিকল্প বিষয় নিলে এ শিক্ষার্থীরাই অনেক ভালো স্কোর করেছে। কিন্তু তাতে দেশের কী হবে? বিজ্ঞান, গণিত, প্রযুক্তি বা ভাষায় দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি করতে না পারলে মধ্যম আয়ের দেশে উত্তরণের পথে আমাদের ভবিষ্যৎ কী, তা সহজেই বোঝা যায়। যে কোনো মূল্যে মেধার এ অপচয় রুখতে হবে এবং সব ক্ষেত্রে মেধার মূল্যায়ন করতে হবে। তা না হলে প্রকৃত মেধাবীরা বিকল্প পথে হারিয়ে যাবে। দেশ হারাবে জনমিতির লভ্যাংশ।
এরপর দেখতে হবে-সরকারি-বেসরকারি বা গ্রাম-শহর ভেদে কীভাবে সুযোগের বৈষম্য সৃষ্টি হচ্ছে। ব্যবহারিক পরীক্ষা, অবকাঠামো সুবিধা, মানসম্পন্ন শিক্ষকের সমর্থন-সবই নগরভিত্তিক। একটি অপরিকল্পিত উপায়ে দেশের নাগরিকদের বৈষম্যের জালে কেবলই জড়িয়ে ফেলা হচ্ছে। সম্প্রতি অনেক প্রতিষ্ঠানকে সরকারি করা হয়েছে। অবশ্যই অভিন্ন মানের শিক্ষায় দেশের তারুণ্যকে সমৃদ্ধ করার উদ্দেশ্যে এটা যথেষ্ট আন্তরিক ও সৎ প্রচেষ্টা। কিন্তু দেখতে হবে-এ উদ্যোগের ফলে যেন নতুন করে অংশীজনের মনে অসাম্যের বোধ গেড়ে না বসে। দেখা যাবে একই অঞ্চলে পাশাপাশি একই ব্যাকগ্রাউন্ডের একজন শিক্ষক সরকারি একটি ঘোষণার সুবাদে সুযোগ-সুবিধার মানদণ্ডে এগিয়ে গেল বা অন্যরা পেছনে পড়ল। বিষয়টি আরও বেদনাদায়ক হয় যখন ভালো ও সফল একজন শিক্ষক বেসরকারি থাকায় আজীবন বঞ্চনার বৃত্তে আবর্তিত হবে, অন্যদিকে সরকারি হওয়ার সুবাদে ওই প্রতিষ্ঠানের সব শিক্ষকের ভাগ্য রাতারাতি বদলে যাবে। শক্তিশালী জাতিগঠনের ক্রান্তিকালে ব্যবস্থাপনার এসব দুর্বলতা ও ফাঁকগুলো মেরামত করা ভীষণ জরুরি।
একটি আধুনিক, মানবিক ও দক্ষ সমাজগঠন এখন আমাদের লক্ষ্য। মর্যাদাশীল ও উন্নত দেশগঠনের একটা বড় ধরনের চাহিদা জনমানসে তৈরি হয়েছে। একদিকে দেশ এখন আর বিদেশনির্ভর থাকতে চাইছে না, মধ্যম আয়ের দেশে উত্তরণের পথে এগিয়ে চলেছে। ফলে দেশের তারুণ্যকে দ্রুত সময়ের মধ্যেই প্রস্তুত করার তাড়না আছে। সেখানে একই ধরনের বৈশিষ্ট্য ও যোগত্যসম্পন্ন শিক্ষার্থীকে ন্যূনতম মানসম্পন্ন শিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলতে হবে। সে কারণে অবশ্যই নতুন কারিকুলাম একটা বড় উদ্যোগ। মাদ্রাসা-কারিগরি, গ্রাম-শহর বা সরকারি-বেসরকারি-সব প্রতিষ্ঠানের চরিত্রগত স্বরূপ এক ধারায় আনতে হবে। সেক্ষেত্রে অপরিকল্পিতভাবে এমপিওভুক্তি বন্ধ করে অবশ্যই দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষাকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে জাতীয়করণ করতে হবে। নিবিড় তত্ত্বাবধান, প্রশিক্ষণ ও মূল্যায়নের মাধ্যমে শিক্ষকের মান বৃদ্ধির প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রেও লক্ষ্য থাকতে হবে সর্বোচ্চ মেধাবী ও প্রস্তুত প্রার্থী। শিক্ষার শর্ত হবে আদর্শ ও সমতাভিত্তিক।
অমিত রায় চৌধুরী : সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ
principalffmmc@gmail.com