Logo
Logo
×

বাতায়ন

স্বদেশ ভাবনা

ষড়যন্ত্রের রাজনীতি বন্ধ হওয়াই কাম্য

Icon

আবদুল লতিফ মণ্ডল

প্রকাশ: ১৭ আগস্ট ২০২১, ০২:০০ পিএম

প্রিন্ট সংস্করণ

ষড়যন্ত্রের রাজনীতি বন্ধ হওয়াই কাম্য

প্রতীকী ছবি

বাংলাদেশ থেকে হত্যা ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতি চিরতরে বন্ধ করার জন্য জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলা আবশ্যক বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

গত ১০ আগস্ট আওয়ামী লীগের মুখপত্র ‘উত্তরণ’ আয়োজিত ‘শোকাবহ আগস্ট : ইতিহাসের কালো অধ্যায়’ শীর্ষক ওয়েবিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। এ প্রসঙ্গে তিনি ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যা, ওই বছরের ৩ নভেম্বর কারা অন্তরালে জাতীয় চার নেতাকে হত্যা এবং ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার উল্লেখ করেন। তবে ১৯৮১ সালের ৩০ মে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে হত্যার ব্যাপারে তিনি কিছু বলেননি।

তিনি আরও বলেন, ‘গণতন্ত্র, মূল্যবোধ ও আদর্শকে আক্রমণ করা হচ্ছে। তাই ষড়যন্ত্রের রাজনীতিকে চিরতরে নির্মূল করতে হবে’ (যুগান্তর, ১১ আগস্ট)। একটানা একযুগের বেশি সময় ধরে রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত আওয়ামী লীগের এ উপলব্ধি নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবি রাখে। তবে দেশের ৫০ বছরের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে, রাষ্ট্রক্ষমতা ভোগ করা তিনটি রাজনৈতিক দলের কোনোটিই এ ধরনের অনাকাক্সিক্ষত কার্যকলাপ থেকে পুরোপুরি মুক্ত নয়। এসব বিষয় পর্যালোচনা করাই এ নিবন্ধের উদ্দেশ্য।

গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা এবং এর বিকাশের অন্যতম প্রধান শর্ত হলো সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন-সে নির্বাচন জাতীয় বা স্থানীয় যে পর্যায়েই অনুষ্ঠিত হোক। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, দেশের গণতন্ত্র ও সুষ্ঠু নির্বাচনব্যবস্থাকে অকার্যকর করার জন্য স্বাধীনতার পরপরই একটি ষড়যন্ত্র দানা বেঁধে ওঠে। স্বাধীনতার পর ১৯৭৩ সালে অনুষ্ঠিত প্রথম সাধারণ নির্বাচনে শাসক দল আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে পত্রপত্রিকা, রাষ্ট্রীয় রেডিও-টেলিভিশন ও যানবাহনসহ প্রশাসনযন্ত্রকে ব্যবহারের অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ ওঠে আওয়ামী লীগ কর্তৃক বিরোধী দলের প্রার্থীকে ভয়ভীতি প্রদর্শনেরও।

বিচারপতি মো. ইদ্রিসের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন শাসক দলের প্রভাব-প্রতিপত্তির কাছে নিশ্চুপ থাকাই শ্রেয় মনে করে। কমিশন জাতীয় সংসদের মোট ৩০০ আসনের ২৯৭টিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে নির্বাচিত ঘোষণা করে। জাতীয় সংসদে শাসক দল আওয়ামী লীগের একচেটিয়া আধিপত্য থাকায় ১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি সংবিধানের ৪র্থ সংশোধনীর মাধ্যমে বহুদলীয় সংসদীয় গণতন্ত্রের স্থলে একদলীয় রাষ্ট্রপতি পদ্ধতির শাসনব্যবস্থা চালুর বিধান করা হয়। এতে গণতন্ত্রের কণ্ঠ রুদ্ধ হয়ে আসে।

সেনাবাহিনীর কতিপয় উচ্চাভিলাষী সদস্য ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা ও রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তার পরিবারের উপস্থিত সব সদস্যকে হত্যা করে। এ হত্যাকাণ্ডের বেনিফিশিয়ারি ছিলেন আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের একটি বড় অংশ। আওয়ামী লীগ নেতা ও মন্ত্রী খন্দকার মোশতাক আহমদ রাষ্ট্রপতি পদে আসীন হন এবং তার নেতৃত্বে গঠিত ২৩ সদস্যবিশিষ্ট মন্ত্রিসভার ২১ জনই ছিলেন বাকশাল মন্ত্রিসভার সদস্য।

১৯৭৫ সালের ৫ নভেম্বর মোশতাক সরকারের পতন হলে দুজন সামরিক শাসক সামরিক ও বেসামরিক পোশাকে প্রায় ১৫ বছর দেশ শাসন করেন। মোশতাক সরকারের পতনের পর নানা ঘটনাপ্রবাহের মধ্য দিয়ে চিফ অব আর্মি স্টাফ মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক বিচারপতি আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েমের কাছ থেকে ১৯৭৬ সালের ১৯ নভেম্বর প্রথমে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসকের এবং পরের বছর ২১ এপ্রিল একইসঙ্গে রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব নিয়ে নেন। ১৯৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রামের সার্কিট হাউজে সেনাবাহিনীর একদল বিপথগামী সদস্যের হাতে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান নিহত হন।

রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমান এবং রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের হত্যা উভয়ের পরিবার এবং দেশের দুটি বড় রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে ‘শত্রুতা’ সৃষ্টির বীজ বপন করে। শেখ মুজিবুর রহমান হত্যাকাণ্ডে জিয়াউর রহমানের সংশ্লিষ্টতা আছে বলে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ নেতারা অভিযোগ করে আসছেন।

অন্যদিকে জিয়াউর রহমানের পরিবার ও বিএনপি নেতারা জিয়াউর রহমান হত্যায় আওয়ামী লীগের পরোক্ষ সমর্থন ছিল বলে অভিযোগ করে আসছেন। এ প্রসঙ্গে রাজনৈতিক বিশ্লেষক শ্রী রাধা দত্ত লিখেছেন, তাদের মধ্যকার শত্রুতা বাংলাদেশের স্থপতি ও প্রথম রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমান এবং বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের হত্যাকে ঘিরে। ১৯৭৫ সালের আগস্টে শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকারীদের প্রতি জেনারেল জিয়াউর রহমানের সহানুভূতি প্রদর্শনে যেমন বিএনপির প্রতি আওয়ামী লীগের শত্রুতা বৃদ্ধি পায়, তেমনি ১৯৮১ সালের মে মাসে জিয়াউর রহমানের হত্যায় পরোক্ষ সমর্থনের জন্য বিএনপি আওয়ামী লীগকে অভিযুক্ত করে (Bangladesh : A Fragile Democracy)।

১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ চিফ অব আর্মি স্টাফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল এইচএম এরশাদ নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি আবদুস সাত্তারের কাছ থেকে ক্ষমতা নেন। এরশাদ প্রথমে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক হন এবং কিছুদিন পর তার মনোনীত রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আ ক ম আহসান উদ্দিন চৌধুরীর কাছ থেকে রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন। জিয়াউর রহমান ও এরশাদের শাসনামলে, বিশেষ করে আশির দশকের দ্বিতীয়ার্ধে নির্বাচনব্যবস্থা ভেঙে পড়ে। মানুষ নির্বাচনের ওপর আস্থা হারিয়ে ফেলে। ফলে গণতন্ত্র দুর্বল হয়ে পড়ে।

১৯৯০ সালের ডিসেম্বরে গণআন্দোলনের মুখে জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা ও রাষ্ট্রপতি এইচএম এরশাদের নেতৃত্বাধীন সরকারের পতন হলে ১৯৯১ সালের ফেব্রুয়ারিতে বিচারপতি সাহাবুদ্দিন আহমদের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে জয়ী হয়ে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি সরকার গঠন করে।

১৯৯১ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত বিএনপি ও আওয়ামী লীগ পালাক্রমে দেশ শাসন করে এলেও যখনই তারা নির্বাচনে পরাজিত হয়েছে, তখনই নির্বাচনে অনিয়ম, ভোট কারচুপি ইত্যাদি অভিযোগ এনে নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেছে, সরকার পতনের আন্দোলন, হরতালসহ হিংসাত্মক কর্মকাণ্ডের আশ্রয় নিয়েছে। উভয় দল সংসদকে সব কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করার প্রতিশ্রুতি দিলেও তা বাস্তবায়নের কোনো লক্ষণ দেখা যায়নি। পঞ্চম সংসদের মেয়াদকালে (মার্চ ১৯৯১-নভেম্বর ১৯৯৫) প্রধান বিরোধী দল আওয়ামী লীগের সংসদ বর্জনের মধ্য দিয়ে সংসদ বর্জনের যে সংস্কৃতির সৃষ্টি হয়, পরে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ তা অনুসরণ করে।

১৯৯৪ ও ১৯৯৫ সালে প্রধান বিরোধী দল আওয়ামী লীগের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৯৬ সালের মার্চে বিএনপি সংবিধান সংশোধন করে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা প্রবর্তন করে। নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ১৯৯৬ সালের ১২ জুন অনুষ্ঠিত সপ্তম জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জয়লাভ করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার গঠন করে। পাঁচ বছর পর নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ২০০১ সালের ১ অক্টোবর অনুষ্ঠিত অষ্টম সাধারণ নির্বাচনে বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট জয়ী হয়ে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে সরকার গঠন করে।

এ সরকারের পাঁচ বছর মেয়াদ শেষে নবম সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগের ব্যাপারে বিএনপি ষড়যন্ত্রের আশ্রয় নেয়। বিএনপি সংবিধান মোতাবেক নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগের পদক্ষেপ না নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগের সর্বশেষ পন্থা হিসাবে তাদের মনোনীত রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিন আহমদকে নিজ দায়িত্বসহ প্রধান উপদেষ্টার পদ গ্রহণে উদ্বুদ্ধ করে। আওয়ামী লীগ এটিকে নবম সাধারণ নির্বাচনে বিএনপির ক্ষমতায় যাওয়ার নীলনকশা হিসাবে অভিহিত করে এবং ঘোষণা দেয় যে, তারা নিজে এবং তাদের সঙ্গে যুক্ত দলগুলো ২২ জানুয়ারি ২০০৭ সালে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া নবম সাধারণ নির্বাচন বর্জন করবে। একদিকে জাতীয় নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক অচলাবস্থার সৃষ্টি, অন্যদিকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতিতে ইয়াজউদ্দিন আহমদ প্রধান উপদেষ্টার পদে এবং উপদেষ্টারা নিজ নিজ পদে ইস্তফা দেন। দুবছরের জন্য প্রতিষ্ঠিত হয় সেনাসমর্থিত নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার, যা গণতন্ত্র বিকাশের পথকে রুদ্ধ করে।

এরপর ২০০৮ সালে নবম সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়ে ক্ষমতায় আসা আওয়ামী লীগের শাসনামলে বিলুপ্তি ঘটে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সকারব্যবস্থার। নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনঃপ্রবর্তনে দাবি আদায়ে ব্যর্থ হয়ে বিএনপি ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দশম সংসদ নির্বাচন বর্জন করে।

এতে ওই নির্বাচন অনেকটা একদলীয় রূপ নেয়। এ নির্বাচনে জাতীয় সংসদের মোট ৩০০ আসনের ১৫৪টিতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও তাদের গুটিকয়েক সহযোগী দলের প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হওয়ার ফলে দেশের মোট ৯ কোটি ১৯ লাখ ৬৫ হাজার ৯৭৭ জন ভোটারের মধ্যে ভোট দেওয়ার সুযোগ পান মাত্র ৪ কোটি ৩৯ লাখ ৩৮ হাজার ৯৩৮ জন। অন্যরা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের অধিকার থেকে বঞ্চিত হন। এতে গণতন্ত্র আরও দুর্বল হয়ে পড়ে। এদিকে আওয়ামী লীগ সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে জাতীয় সংসদ বহাল রেখে সংসদ নির্বাচনের বিতর্কিত বিধান প্রবর্তন করে। সংসদীয় পদ্ধতির সরকারব্যবস্থা চালু থাকা অন্য কোনো দেশে এরূপ ব্যবস্থা না থাকলেও বাংলাদেশের সংবিধানে এ বিধানটি অন্তর্ভুক্ত করা হয়, যাতে তারা দীর্ঘ সময় ধরে রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত থাকতে পারে।

২০১৮ সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত একাদশ সাধারণ নির্বাচনে নজিরবিহীন অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। এসব অভিযোগের মধ্যে রয়েছে, নির্বাচন অনুষ্ঠানের নির্ধারিত দিনের আগের রাতে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীদের ব্যালট বাক্সে ভোট প্রদান। অভিযোগ রয়েছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য ও ভোট গ্রহণে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় এসব ঘটেছে। এতে গণতন্ত্র পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়ে।

মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের তার বক্তব্যে গণতন্ত্র, মূল্যবোধ ও আদর্শকে আক্রমণের অভিযোগ এনেছেন। উল্লেখ্য, আমাদের সংবিধানের ১৫২ অনুচ্ছেদে ‘রাজনৈতিক দলে’র সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, রাজনৈতিক দল বলতে এমন একটি অধিসংঘ বা ব্যক্তিসমষ্টি অন্তর্ভুক্ত, যে অধিসংঘ বা ব্যক্তিসমষ্টি সংসদের অভ্যন্তরে বা বাইরে স্বাতন্ত্র্যসূচক কোনো নামে কার্য করেন এবং কোনো রাজনৈতিক মত প্রচারের বা কোনো রাজনৈতিক তৎপরতা পরিচালনার উদ্দেশ্যে অন্যান্য অধিসংঘ হতে পৃথক কোনো অধিসংঘ হিসাবে নিজদিগকে প্রকাশ করেন।

উপর্যুক্ত আলোচনা থেকে এটা পরিষ্কার, রাষ্ট্রক্ষমতা ভোগ করা তিনটি দলের মধ্যে কোন্ দলের পক্ষ থেকে গণতন্ত্রের ওপর বেশি আঘাত এসেছে। আর দেশের কোনো রাজনৈতিক দল অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের আদর্শকে না মানলে সেটাকে আক্রমণ বলা যায় না।

মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ষড়যন্ত্রের রাজনীতিকে চিরতরে নির্মূল করার যে আহ্বান জানিয়েছেন, আপাতদৃষ্টিতে তা প্রশংসনীয়। এ জন্য যা যা করা প্রয়োজন সেগুলোর মধ্যে রয়েছে-ক. অন্য কোনো রাজনৈতিক দলকে শত্রু না ভেবে প্রতিদ্বন্দ্বী ভাবা এবং সহাবস্থানে বিশ্বাসী হওয়া, খ. বিরোধী দলগুলোর জন্য স্পেস রাখা, গ. জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠান নিশ্চিত করা,

ঘ. রাজনৈতিক দলগুলোর ভেতরে গণতন্ত্রের চর্চা করা, এবং ঘ. ‘উইনার্স টেক ইট অল’ মনোভাব থেকে সরে আসা। এসব ক্ষেত্রে ক্ষমতাসীন দলকে অগ্রণী ভূমিকা নিতে হবে। বিরোধী দলগুলোকেও সহযোগিতার হাত নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে।

আবদুল লতিফ মন্ডল : সাবেক সচিব, কলাম লেখক

latifm43@gmail.com

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম