স্বদেশ ভাবনা
যেভাবে দেশে প্রশাসন ব্যবস্থার ভিত রচিত হয়েছিল
আবদুল লতিফ মন্ডল
প্রকাশ: ২০ এপ্রিল ২০২১, ০২:০০ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর ঢাকা রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে ওই বছর ২৬ মার্চ ঘোষিত বাংলাদেশের স্বাধীনতা পূর্ণতা পায়।
কিন্তু সেদিন স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রাণপুরুষ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানের কারাগারে আটক ছিলেন।
১৯৭২ সালের ৮ জানুয়ারি পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে লন্ডন হয়ে ১০ জানুয়ারি দেশে ফিরে ‘সংবিধান প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রপতি থাকবেন’-১৯৭১ সালের মুজিবনগর সরকারের জারিকৃত স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের এরূপ বিধানবলে তিনি যখন স্বয়ংক্রিয়ভাবে সশরীরে রাষ্ট্রপতি পদে অধিষ্ঠিত হন, তখন একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশে সরকার পরিচালনার মতো কোনো অবকাঠামো ছিল না বললেই চলে।
এ অবস্থায় বঙ্গবন্ধুর প্রায় সাড়ে তিন বছরের শাসনামলে তার নেওয়া পদক্ষেপ কীভাবে দেশে প্রশাসন ব্যবস্থার ভিত রচনা করে, তা আলোচনা করাই এ নিবন্ধের উদ্দেশ্য।
দেশে ফেরার পরপরই যে বিষয়টি বঙ্গবন্ধুকে চিন্তিত করে তোলে তা হলো, গণতান্ত্রিকভাবে এবং বিধিসম্মত উপায়ে বাংলাদেশে শাসন পরিচালনার উপায় খুঁজে বের করা।
এজন্য দেশে ফেরার পরদিন অর্থাৎ ১১ জানুয়ারি তিনি একাধিকবার অস্থায়ী মন্ত্রিসভার সদস্যদের সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হন। স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম এবং বঙ্গবন্ধুর শাসনামলে পুরো সময় মন্ত্রিপরিষদ সচিব এইচটি ইমামের লেখনী থেকে জানা যায়, ১১ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার দুটি বৈঠকে সংবিধান প্রণয়নের উদ্যোগ এবং ১৯৭২ সালের সাময়িক সংবিধান জারির বিষয়ে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
‘রাষ্ট্রপতির সাময়িক সংবিধান আদেশ ১৯৭২’ শীর্ষক আদেশে রাষ্ট্রপতি পরিবর্তন, মন্ত্রিসভা নিয়োগ, শপথ, সুপ্রিমকোর্ট প্রতিষ্ঠা ইত্যাদি বিষয় স্থান পায়। রাষ্ট্রপতিশাসিত সরকার পদ্ধতি পরিবর্তন করে সংসদীয় সরকারব্যবস্থা প্রচলনের জন্য বঙ্গবন্ধু প্রথমে বিচারপতি আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েমকে সাময়িক সংবিধান আদেশবলে প্রধান বিচারপতি হিসাবে নিয়োগ দেন।
১২ জানুয়ারি সকালে বঙ্গবন্ধু রাষ্ট্রপতি পদে ইস্তফা দিলে মন্ত্রিসভা বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরীকে রাষ্ট্রপতি হিসাবে নির্বাচিত করেন। প্রধান বিচারপতি তাকে শপথবাক্য পাঠ করান। এরপর অস্থায়ী মন্ত্রিসভার সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদসহ মন্ত্রিসভার সব সদস্য পদত্যাগ করলে রাষ্ট্রপতির সাময়িক সংবিধান আদেশ অনুযায়ী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করা হয়।
অতঃপর প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রথমে ১১ সদস্যবিশিষ্ট মন্ত্রিসভা গঠন করেন, যা শিগ্গির ২৩ সদস্যবিশিষ্ট মন্ত্রিসভায় উন্নীত করা হয়। বঙ্গবন্ধু গঠিত মন্ত্রিসভার সদস্যদের মধ্যে ছিলেন সৈয়দ নজরুল ইসলাম (শিল্প মন্ত্রণালয়), তাজউদ্দীন আহমদ (অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়), খন্দকার মোশতাক আহমেদ (বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়), ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী (যোগাযোগ মন্ত্রণালয়) আবদুস সামাদ আজাদ (পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়) এএইচএম কামরুজ্জামান (ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রণালয়)।
বেসামরিক প্রশাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং বিদ্যমান একটি প্রাদেশিক প্রশাসনকে কেন্দ্রীয় সরকারে রূপান্তর সরকারের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকার গঠিত সিভিল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন রেস্টোরেশন কমিটির অন্তর্বর্তীকালীন সুপারিশ অনুযায়ী প্রাদেশিক সচিবালয়কে জাতীয় সচিবালয়ে রূপান্তর করা হয়।
বাংলাপিডিয়ার তথ্য মোতাবেক, এতে ২০টি মন্ত্রণালয় এবং সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তর/বিভাগ ও স্বশাসিত সংস্থা রাখা হয়। তবে সমস্যার এখানে শেষ নয়; বেসামরিক প্রশাসনের অধিকাংশ জ্যেষ্ঠ ও মাঝপর্যায়ের বাঙালি কর্মকর্তা, যারা ইউনাইটেড পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাদের কেন্দ্রীয় সচিবালয় এবং পশ্চিম পাকিস্তানব্যাপী কেন্দ্রীয় সরকারের অন্যান্য কার্যালয়ে কর্মরত ছিলেন, তাদের খুব কমসংখ্যক মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পশ্চিম পাকিস্তান থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে ফিরে আসতে সক্ষম হয়েছিলেন।
তাদের বেশির ভাগই পশ্চিম পাকিস্তান সরকারের আদেশে আটকাবস্থায় ছিলেন। ১৯৭২ সালের আগস্টে পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে সিমলা চুক্তি সম্পাদিত হওয়ার পরই তারা আন্তর্জাতিক রেডক্রসের সহায়তায় বাংলাদেশে ফিরে আসতে সক্ষম হন। কাজেই অভিজ্ঞ সিনিয়র ও মাঝপর্যায়ের কর্মকর্তার অভাবে স্বাধীনতার পরপর সৃষ্ট উপর্যুক্ত মন্ত্রণালয়গুলো পরিচালনায় সরকারকে বেশ কিছুটা অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়।
সরকারের কার্যবিধিমালা অনুযায়ী মন্ত্রণালয়ের ভূমিকা নীতিনির্ধারণ, পরিকল্পনা প্রণয়ন, পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মূল্যায়ন এবং আইন প্রণয়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ। সরকারের নীতি, পরিকল্পনা ইত্যাদি বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজন সংযুক্ত দপ্তর (যেসব প্রতিষ্ঠান মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কযুক্ত) ও অধস্তন অফিস (যেগুলোর সঙ্গে মন্ত্রণালয়ের প্রত্যক্ষ যোগাযোগ নেই) এবং স্বশাসিত সংস্থা। বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করে বঙ্গবন্ধুর সরকার ১৯৭২ সালে রাষ্ট্রপতির আদেশ বলে বেশকিছুসংখ্যক স্বশাসিত সংস্থা প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেয়।
এসব সংস্থার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ জলযান করপোরেশন, বাংলাদেশ পাট রপ্তানি সংস্থা, বাংলাদেশ পানি ও বিদ্যুৎ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ বিমান সংস্থা, বাংলাদেশ শিল্প ঋণ সংস্থা এবং বাংলাদেশ শিল্প ব্যাংক (সূত্র: গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান)। তাছাড়া, রাষ্ট্রায়ত্ত ৮২টি পাটকল নিয়ে ১৯৭২ সালে গঠিত হয় বাংলাদেশ জুট মিলস করপোরেশন। এসব স্বশাসিত সংস্থা প্রতিষ্ঠার ফলে সরকারের নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়ন সহজ হয়ে ওঠে।
নতুন স্বাধীন দেশের ভবিষ্যৎ প্রশাসনিক কাঠামো এবং বেসামরিক চাকরি পদ্ধতি সম্পর্কে সরকারের নীতি কী হবে, তা নির্ধারণে বঙ্গন্ধুর সরকার তৎপর হয়ে ওঠে।
এসব বিষয়ে সুপারিশ প্রদানের জন্য বঙ্গবন্ধু ১৯৭২ সালের মার্চে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক মোজাফ্ফর আহমদ চৌধুরীর নেতৃত্বে তিন সদস্যবিশিষ্ট ‘প্রশাসনিক ও চাকরি পুনর্গঠন কমিটি’ গঠন করেন। ১৯৭৩ সালের এপ্রিল ও অক্টোবরে এ কমিটি দুই কিস্তিতে সরকারের কাছে রিপোর্ট পেশ করে।
রিপোর্টে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য সুপারিশগুলোর মধ্যে ছিল-ক. একটি একক শ্রেণিবিহীন গ্রেড-কাঠামোর আওতায় সব সরকারি চাকরিকে ১০টি গ্রেডে বিন্যাস করা; খ. প্রশাসনের সব পর্যায়ে গণতন্ত্রায়ণ জোরদার করা; গ. নির্বাচিত স্থানীয় সরকারের এখতিয়ার ক্ষমতা প্রত্যপর্ণসহ জাতীয় ও স্থানীয় সরকারের দায়িত্ব ও কর্তব্যের মধ্যে সুস্পষ্ট সীমারেখা টেনে দেওয়া।
তাছাড়া, কমিটি মহকুমাগুলোকে জেলায় রূপান্তরের প্রয়োজনীয়তার কথাও রিপোর্টে উল্লেখ করে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পরিবারের অধিকাংশ সদস্যসহ কতিপয় উচ্চাভিলাষী সেনাসদস্যের হাতে নিহত হলে প্রশাসনিক ও চাকরি পুনর্গঠন কমিটির রিপোর্টের সুপারিশ বাস্তবায়ন অনিশ্চিত হয়ে পড়ে।
১৯৭২ সালের ২১ জুলাইয়ের এক রেজুলেশনের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর সরকার সচিব আবদুর রবের নেতৃত্বে প্রথম জাতীয় বেতন কমিশন গঠন করে। প্রশাসনিক ও চাকরি পুনর্গঠন কমিটি এবং বেতন কমিশন একে অপরের সম্পূরক ছিল। তারা সরকার কর্তৃক ঘোষিত সমাজতান্ত্রিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য সামনে রেখে পারস্পরিক সমঝোতার ভিত্তিতে দায়িত্ব পালনে ব্রতী হয়।
এ নীতিকে সামনে রেখে প্রথম জাতীয় বেতন কমিশন ১৯৭৩ সালের মে মাসে সরকারের কাছে প্রতিবেদন পেশ করে। সাবেক পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক সরকার কর্তৃক সরকারি খাতে প্রচলিত প্রায় ২২০৮টি বেতন স্কেলের সংখ্যা কমিয়ে কমিশন দশটি জাতীয় গ্রেড ও বেতন স্কেলের কাঠামো সুপারিশ করে। এতে সর্বোচ্চ গ্রেডে অর্থাৎ ১নং গ্রেডে বেতন সুপারিশ করা হয় ২০০০ টাকা (নির্ধারিত)। সর্বনিম্ন গ্রেডে অর্থাৎ ১০নং গ্রেডে সুপারিশকৃত বেতন স্কেল ছিল ১৩০-২৪০ টাকা।
বেতন কমিশনের রিপোর্টে বলা হয়, বেতন স্কেল নির্ধারণের সময় নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী, যেমন: চাল, ডাল, গম, ভোজ্যতেল, চিনি ইত্যাদি রেশন দোকান এবং অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য ন্যায্যমূল্য ও ভোগ্যপণ্য সরবরাহ সংস্থার দোকান, সমবায় সমিতি ও টিসিবির দোকানের মাধ্যমে স্বল্পমূল্যে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে সরবরাহ করার বিষয়টি বিবেচনায় রাখা হয়।
কিন্তু বেতন কমিশনের উপর্যুক্ত সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে গিয়ে দেখা যায়, নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী ও ভোগ্যপণ্য স্বল্পমূল্যে বিক্রয়ের ধারণাটি বাস্তবায়ন দুরূহ। বাস্তব অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে সুপারিশকৃত ও সরকার অনুমোদিত বেতন কাঠামোর নিচের স্তরের ৬টি গ্রেড-গ্রেড ১০ থেকে ৫ পর্যন্ত বাস্তবায়িত হয়। আর উপরের স্তরের ৪টি গ্রেড-গ্রেড ১ থেকে ৪ পর্যন্ত বাস্তবায়িত হয়নি। তবে সর্বোচ্চ পদাধিকারীসহ কোনো কর্মকর্তাকে মাসিক ২০০০ টাকার বেশি বেতন দেওয়া হয়নি।
আগেই উল্লেখ করা হয়েছে, পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি দেশে ফিরে বঙ্গবন্ধুর প্রথম গুরুত্বপূর্ণ কাজটি ছিল রাষ্ট্রপতির সাময়িক সংবিধান আদেশ ১৯৭২ জারি করা। এ আদেশ জারির মধ্য দিয়ে সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে এবং বিধিসম্মতভাবে পরিচালিত হওয়ার প্রয়াস লক্ষ করা যায়।
এরপর স্বাধীন বাংলাদেশের জন্য একটি সংবিধান রচনা বঙ্গবন্ধুর চিন্তাচেতনায় প্রাধান্য পায়। সংবিধান রচনার দায়িত্বপ্রাপ্ত গণপরিষদ অক্লান্ত পরিশ্রম করে কাজটি সম্পন্ন করে।
তাদের রচিত গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান ১৯৭২ সালের ৪ নভেম্বর গৃহীত হয়। সংবিধানের প্রস্তাবনায় বলা হয়, রাষ্ট্রের মূল লক্ষ্য হবে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে এমন এক শোষণমুক্ত সমাজতান্ত্রিক সমাজের প্রতিষ্ঠা-যেখানে সব নাগরিকের জন্য আইনের শাসন, মৌলিক মানবাধিকার এবং রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক সাম্য, স্বাধীনতা ও সুবিচার নিশ্চিত হবে।
এর মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রব্যবস্থায় সুশাসন প্রতিষ্ঠার দৃঢ় অঙ্গীকার করা হয়। নতুন সংবিধানের এসব মহৎ উদ্দেশ্য গত প্রায় পাঁচ দশকে কতটা বাস্তবায়িত হয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠা অস্বাভাবিক নয়। গত প্রায় পঞ্চাশ বছরে এ সংবিধানটি অনেকবার কাটাছেঁড়া করা হলেও এটি এখনো আলোকবর্তিকা হয়ে আমাদের সামনে চলার পথ দেখিয়ে যাচ্ছে।
কিছুসংখ্যক উচ্চাভিলাষী সেনাসদস্যের হাতে নিহত হওয়ার কারণে বঙ্গবন্ধু প্রশাসনিক ও চাকরি পুনর্গঠন কমিটির সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন করতে না পারলেও পরবর্তী সময়ে জেনারেল জিয়াউর রহমানের শাসনকালে ১৯৭৬ সালে গঠিত ‘পে অ্যান্ড সার্ভিসেস কমিশন’ এবং জেনারেল এইচএম এরশাদের শাসনামলে ১৯৮২ সালে গঠিত ‘প্রশাসনিক সংস্কার ও পুনর্গঠন কমিটি’ তাদের সুপারিশ প্রণয়নে মোজাফ্ফর আহমদ চৌধুরী কমিটির রিপোর্ট গুরুত্ব সহকারে পর্যালোচনা করে।
এইচএম এরশাদের শাসনামলে মহকুমাকে জেলায় উন্নীতকরণ এর একটি প্রকৃষ্ট উদাহরণ। তাই এ কথা অনেকটা জোর দিয়ে বলা যায়, বঙ্গবন্ধু তার সাড়ে তিন বছরের শাসনকালে যেসব প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত দিয়েছিলেন সেগুলো দেশের প্রশাসন ব্যবস্থার ভিত রচনা করে। সে ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে সময়ের প্রয়োজনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দেশের প্রশাসনব্যবস্থা এগিয়ে যাচ্ছে।
আবদুল লতিফ মন্ডল : সাবেক সচিব
latifm43@gmail.com