মোবাইল ফোনের ক্ষতিকর প্রভাব
আফসানা রিজোয়ানা সুলতানা
প্রকাশ: ১৮ ডিসেম্বর ২০১৮, ০৬:০০ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
আমরা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে যে বস্তু বা জিনিসটির ওপর অনেকটাই নির্ভরশীল, সেটা হল মোবাইল ফোন। সকালবেলা ঘুম থেকে ওঠার জন্য অ্যালার্ম দেয়া থেকে শুরু করে সারাটি দিন বিভিন্ন কাজে আমরা এর প্রয়োজনীতা অনুভব করি। বিভিন্ন হিসাব-নিকাশ করা, সময় দেখা, প্রয়োজনীয় ছবি তোলা থেকে শুরু করে আমরা এর মাধ্যমে পত্রিকাও পড়তে পারি। দিনের সব আপডেট তথ্য আমরা এর মাধ্যমেই পেয়ে থাকি। তবে এত প্রয়োজনীতার ভিড়ে আমরা কিন্তু এর ক্ষতিকর দিকটি উপেক্ষা করছি। কীভাবে এই বস্তুটি আমাদের মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে, সে সম্পর্কে আমাদের অনেকের জ্ঞানই খুবই সীমিত।
মোবাইল ফোনে দীর্ঘক্ষণ কথা বললে, কানে হেডফোন লাগিয়ে দীর্ঘক্ষণ গান শুনলে মানুষের শ্রবণশক্তি হ্রাস পায়। তাছাড়া মোবাইল ফোনে দীর্ঘক্ষণ কথা বললে তা আমাদের মস্তিষ্কে বিরূপ প্রভাব ফেলে। এতে করে মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়; অস্থিরতা, অমনোযোগিতা বৃদ্ধি পায়। এত গেল মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সরাসরি মানবশরীরে সৃষ্টি হওয়া কিছু ক্ষতিকর দিক। কিন্তু সব থেকে দীর্ঘমেয়াদি যে ক্ষতিটি হয়, তা আমাদের দৃষ্টি এড়িয়ে গেছে। আমরা সবাই জানি, গ্রাহকদের মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্ক সুবিধা দেয়ার জন্য টাওয়ার নির্মাণ করা হয়ে থাকে। এই টাওয়ারগুলোয় বিভিন্ন তরঙ্গ দৈর্ঘ্যরে দুই ধরনের এন্টেনা থাকে। মূলত এই তরঙ্গের মাধ্যমেই আমরা দূরে অবস্থিত মানুষটির সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করতে পারি। তরঙ্গ চলার সময় তার চারপাশে ইলেকট্রো ম্যাগনেটিক ফিল্ড উৎপন্ন করে আর এ থেকে তৈরি হয় ইলেকট্রো ম্যাগনেটিক রেডিয়েশন, যা আমাদের শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকর। প্রযুক্তিতে উন্নত দেশগুলোয় গবেষণা করে দেখা গেছে হার্ট অ্যাটাক, কিডনি রোগ ও ব্রেন ক্যান্সারের রোগীর সংখ্যা অনেক বেড়ে গেছে। এর একটি উল্লেখযোগ্য কারণ হল মোবাইল ফোন। সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে, কম্পিউটার ও মোবাইল ফোনের সংস্পর্শে আসা প্রতি ৪ জন শিশুর মধ্যে ১ জন শিশু স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ে। এই রেডিয়েশন যে শুধু মানব শরীরেরই ক্ষতিসাধন করে তাই নয়; এর ফলে টাওয়ারের আশপাশে অবস্থিত গাছপালা ও ফসলের ফলনও কমে যায়।
পরিতাপের বিষয় হল, এমন ভয়াবহ ক্ষতিকর দিক থাকা সত্ত্বেও দেশের বেশির ভাগ মোবাইল ফোনের টাওয়ার বসতবাড়ি ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাদে স্থাপন করা হয়েছে। এদিকে নজর দেয়ার মতো যেন কেউ নেই। এভাবে চলতে থাকলে ভবিষ্যতে আমাদের একটি বিকলাঙ্গ প্রজš§ দেখতে হবে। কারণ গর্ভবতী নারীর শরীরে এই রেডিয়েশন বিরূপ প্রভাব ফেলে। স্বাস্থ্যকর, সুন্দর ও নিরাপদ ভবিষ্যতের জন্য এখনই আমাদের সচেতন হওয়া প্রয়োজন।
কৃষি অনুষদ, চতুর্থ বর্ষ, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
