মাধবী বা মাধবীলতার অনেক নাম- মণ্ডপ, কামী, পুষ্পেন্দ্র, অভীষ্টগন্ধক, অতিমুক্ত, বিমুক্ত, কামুক ও ভ্রমরোৎসব। এর গণ নাম হিপটেইজ। এর আরেক নাম পুন্ড্রকও। এক সময় ময়মনসিংহে মাধবী প্রচুর পাওয়া যেত। মাধবী বৃক্ষারোহী লতা এবং দীর্ঘজীবী। ডাল ছোট ছোট এবং ঝোপঝাড় হয়ে যায়। এভাবে বহুবর্ষী হলে ধীরে ধীরে মূল লতাটি বেশ মোটা হয়ে যায়। ডাল দু-তিন বছর পরপর কেটে দিতে হয়, তারপর লতা যতই বাড়তে থাকে ততই নতুন নতুন ডালপালা গজায়, ফুল বেশি ফোটে। এর মোটা মোটা ডালের ছাল মেটে রঙের, ভেতরের কাঠ লালচে ও শক্ত। পাতা বিপরীতমুখী, আয়তাকার, বোঁটার দিক থেকে আগা ক্রমশ সরু, সাধারণত ৪ থেকে ৬ ইঞ্চি লম্বা হয়। অনেকটা চাঁপা ফুলের পাতার মতো। বাগানের শোভার জন্য যত্ন করে মাধবী লাগানো হয়। মাধবীর ফুল গুচ্ছবদ্ধ ও বিন্যাস সুসংবদ্ধ। মুকুলগুলো সূক্ষ্ম রোমে ভরা। ফুল সাদা রঙের, পাঁচটি পাপড়ি এবং তার মধ্যে পঞ্চম পাপড়িটির গোড়ার দিক হলদেটে। ফুল দেখতে তিল ফুলের মতো এবং খুব সুগন্ধি। বসন্ত ও গ্রীষ্ম এ ফুলের ঋতু হলেও কখনও কখনও বর্ষা পর্যন্ত ফোটে। ফুল থেকে ফল হয়, বীজ থাকে ২-৩টি এবং তা রোমশ। মাধবীলতার ঔষধি গুণও অনেক। পুরনো বাত সারাতে মাধবীলতার পাতার রস উপকারী। হাঁপানির শ্বাসকষ্টের জন্য পাতা ও ডালের রস উপকারী। মাধবীলতার শুকনো ছালের গুঁড়া বিষাক্ত ঘা সারিয়ে তোলে।