৫ বছর আজ
সিল্ক রোডের লোভে চীনের ঋণের ফাঁদে বহু দেশ

যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

ছবি: সংগৃহীত
সিল্ক রোডের লোভে চীনের বিনিয়োগের ফাঁদে পড়ে ঋণে ফেঁসে গেছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ। বেইজিংয়ের উচ্চাভিলাষী ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ প্রকল্পের আওতায় চীনের দেয়া বড় অঙ্কের ঋণ শোধ করতে ব্যর্থ হচ্ছে এসব দেশ।
ফলে দেশগুলোর ঘাড়ে চেপে বসছে ঋণের বোঝা। ২০১৩ সালে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এ প্রকল্পের ঘোষণা দেন। ৬৮টি দেশকে এ প্রকল্পের আওতায় অন্তর্ভুক্তির স্বপ্ন দেখান তিনি।
৫ ট্রিলিয়ন ডলার ব্যয়ের উচ্চাভিলাষী এ প্রকল্পে চীন নিজেই ৬০ বিলিয়ন ব্যয় করবে বলে ঘোষণা দেন জিনপিং। তাতেই পটে যায় বিশ্বের দেশগুলো। ইতিমধ্যে বলকান অঞ্চলের সাত দেশ, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কাসহ এশিয়ার বহু দেশ এ প্রকল্পের ফাঁদে পা দিয়েছে। খবর এএফপির।
সোমবার বেল্ট অ্যান্ড রোড প্রকল্প ঘোষণার পাঁচ বছর পূর্তি উদযাপন করতে যাচ্ছে শি সরকার। এ উপলক্ষে জিনপিং বলেন, ‘এটি শুধু কোনো চীনা ক্লাব নয়। এখানে সবাই সুবিধা ভোগ করবে।’
এ প্রকল্পে পাকিস্তানের পূর্ববর্তী সরকারের অংশগ্রহণ নিয়ে দেশটির নতুন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান শঙ্কিত রয়েছেন। মাল্টিবিলিয়ন ডলার খরচ করে চীন-পাকিস্তান করিডরের অর্থ পরিশোধে তার দেশ সক্ষম নয়, সেটা ভালোভাবেই টের পেয়েছেন ইমরান।
এদিকে বড় অঙ্কের বিনিয়োগের নামে চীনের ‘চেক বুক কূটনীতি’র খপ্পরে পড়ছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ। ফলে বাধ্য হয়ে চীনের হাতে তুলে দিচ্ছে ভূমি, বন্দর, বিমানবন্দর।
হার্ভার্ভ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বের ১৬টি দেশ চীনের কাছ থেকে বড় অঙ্কের ঋণ নিয়েছে। এসব দেশের মধ্যে রয়েছে মালদ্বীপ, শ্রীলংকা, পাকিস্তান, কম্বোডিয়া, পাপুয়া নিউগিনি, মালয়েশিয়া, তাজিকিস্তান, কিরগিজস্তান, লাওস ও জিবুতি।
চীনের বিনিয়োগ জালে ফেঁসেছে আলবেনিয়া, বসনিয়া, বুলগেরিয়া, ক্রোয়েশিয়া, কসোভো, মেসিডোনিয়া ও মন্টিনেগ্রো। পরিস্থিতি এমন ভয়াবহ রূপ নিয়েছে যে, মন্টিনেগ্রো গত বছর জনকল্যাণমূলক ব্যয় হ্রাস, সরকারি কর্মচারীদের বেতন কর্তন এবং সিগারেট, অ্যালকোহল ও কয়লার ওপর কর বাড়িয়ে দেয়।
চীন-পাকিস্তান ইকোনমিক করিডর প্রকল্পে ৬,২০০ কোটি ডলার বিনিয়োগে প্রতিশ্র“তিবদ্ধ বেইজিং। এরই মধ্যে ১,৯০০ কোটি ডলার ঋণ নিয়েছে পাকিস্তান। এর বিনিময়ে চীনের কাছে একটি বন্দর হস্তান্তর করেছে ইসলামাবাদ।
বিভিন্ন অবকাঠামোগত প্রকল্পে শ্রীলঙ্কাকে ৯০০ কোটি ডলার ঋণ দিয়েছে চীন। বিনিময়ে শ্রীলঙ্কা হাম্বানতোতা বন্দর চীনকে ৯৯ বছরের জন্য লিজ দিয়েছে। এরই মধ্যে বন্দরটিতে দক্ষিণ চীন সাগর হয়ে চীনা জাহাজ নোঙর করা শুরু করেছে।