করোনা মোকাবিলায় বিশ্ব এখন দুভাগ
যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ০৯ আগস্ট ২০২১, ০২:০০ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
করোনাভাইরাস মহামারি আকারে রূপ নেওয়ার পর থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের লড়াইয়ের পথ এক হলেও টিকা আসার পর তা পালটে গেছে।
মার্কিন গণমাধ্যম সিএএনের এক প্রতিবেদন বলছে, করোনা প্রতিরোধের বড় হাতিয়ার টিকা বিশ্বকে এখন স্পষ্ট দুই ভাগে ভাগ করে ফেলেছে।
এর এক ভাগে আছে ধনী দেশগুলো, যাদের হাতে প্রচুর টিকা। অন্য ভাগে গরিব দেশগুলো, যাদের টিকার জন্য হাহাকার করতে হচ্ছে প্রতিদিন।
সোমবার প্রকাশিত প্রতিবেদনে করোনা টিকার বৈষম্য চিত্র তুলে ধরে সিএনএন বলছে, ভয়ংকর ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের বিস্তারের মধ্যেই ধনী দেশগুলো টিকার মজুত শক্তিশালী করছে। ঠিক একই সময়ে গরিব দেশগুলোতে টিকার অভাবে মারা যাচ্ছে মানুষ।
যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের দেশগুলো এখন তাদের সব নাগরিককে টিকা দেওয়াকেই পাখির চোখ করেছে, আর এক্ষেত্রে অনেকটাই এগিয়ে গিয়ে স্বাভাবিক জীবনযাপনের দিকেও যাচ্ছে। ঝুঁকিতে থাকা নাগরিকদের জন্য বুস্টার ডোজের দিকেও যাচ্ছে তারা। আফ্রিকা-এশিয়ায় এর উলটো দৃশ্য। কোটি কোটি মানুষ এখনো প্রথম ডোজের অপেক্ষায়। যেখানে টিকাদানের হার সবচেয়ে কম, সেই অঞ্চলের দেশগুলো এখন সংক্রমণ কমাতে হিমশিম খাচ্ছে। দেশগুলোর কর্মকর্তাদের এখন টিকা ছাড়াই কীভাবে মৃত্যু কমানো যায়, মানুষ বের হলেও কীভাবে সংক্রমণ কমানো যায়, সেই পথ বের করতে ব্যস্ত। ভাবতে হচ্ছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) তথ্য অনুযায়ী, ধনী দেশগুলোতে এখন প্রতি একশ জনে একশ ডোজ টিকা দিতে পারছে। বিপরীতে গরিব দেশগুলোতে প্রতি একশ জনের জন্য মিলছে টিকার ১ দশমিক ৫ ডোজ। উত্তর আমেরিকা এখন প্রতি একশ জনে ১০৮ ডোজ টিকা দিতে পারছে। ইউরোপে এই হার একশতে ৮৮। এশিয়াতে প্রতি একশ জনে টিকার ডোজ ৬১। লাতিন আমেরিকায় প্রতি একশতে ৬০। ওশানিয়ায় একশতে ৩৮, আফ্রিকাতে একশ জনে মাত্র ছয় ডোজ।
যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে প্রাপ্তবয়স্কদের ৭০ শতাংশই কমপক্ষে টিকার একটি ডোজ পেয়েছেন। আফ্রিকা টিকা দিতে পারেনি ৫ শতাংশকেও। বিরাট এ বৈষম্য নিয়ে উদ্বিগ্ন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও। সংস্থার প্রধান তেদ্রোস আধানম গেব্রেয়াসুস সম্প্রতি বলেন, ‘অধিকাংশ টিকা এখন ধনী দেশগুলোতে যাচ্ছে, আমাদের জরুরি ভিত্তিতে এই চিত্র বদলাতে হবে। অধিকাংশ টিকা পাঠাতে হবে গরিব দেশগুলোকে।’
ডিউক ইউনিভার্সিটির গ্লোবাল হেলথ ইনোভেশন সেন্টারের সহকারী পরিচালক অ্যান্ড্রে টাইলর সিএনএনকে বলেন, ধনী দেশগুলোর নাগরিকদের টিকার বুস্টার ডোজ দেওয়া সমস্যার সমাধান নয়। এতে বিশ্বে সংক্রমণ কমানো যাবে না। ‘এটা অনেকটা বড় গর্তে একটি ব্যান্ডএইড দেওয়ার মতো’, বলেন তিনি। তার মতে, বিশ্বের অধিকাংশ মানুষ টিকা না পেলে কারও সুরক্ষাই নিশ্চিত হবে না।