Logo
Logo
×

দশ দিগন্ত

বিশ্বের নয়া তেল সম্রাট যুক্তরাষ্ট্র

২০১৮ সালে দৈনিক তেল উৎপাদিত হবে ১ কোটি ১০ লাখ ব্যারেল

Icon

যুগান্তর ডেস্ক

প্রকাশ: ০৪ জানুয়ারি ২০১৮, ০৬:০০ পিএম

প্রিন্ট সংস্করণ

২০১৮ সালে বিশ্বের নতুন তেল সম্রাটের খ্যাতি অর্জন করতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। নতুন বছরে দেশটি অপরিশোধিত তেল উৎপাদন ১০ শতাংশ বাড়াবে। ফলে দৈনিক তেল উৎপাদনের পরিমাণ দাঁড়াবে প্রায় এক কোটি ১০ লাখ ব্যারেল। নরওয়েভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান রাইস্টাড এনার্জির বরাতে বৃহস্পতিবার সিএনএন এ তথ্য দিয়েছে। সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে সংস্থাটি জানায়, বিশ্বের তেল উৎপাদনে আধিপত্যকারী রাশিয়া ও সৌদি আরবকে টপকাবে যুক্তরাষ্ট্র। ১৯৭৫ সাল থেকে তেল উৎপাদনে রাশিয়া ও সৌদি আরবের পরের অবস্থানে রয়েছে দেশটি।

রাইস্টাডের ভাইস প্রেসিডেন্ট নাদিয়া মার্টিন উইগেন বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের শেল মেশিনের কারণে তেলের বাজার পরিস্থিতি সম্পূর্ণ পরিবর্তন হয়ে গেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে দেশটির জ্বালানি খাত কিভাবে পাওয়ার হাউসে পরিণত হবে, রাইস্টাপের প্রতিবেদনে সেই ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছে। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্র দাঙ্গা হাঙ্গামাপূর্ণ মধ্যপ্রাচ্যের ওপর তেল নির্ভরতা কমিয়ে আনতে সক্ষম হবে। প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বাড়াতে সৌদি আরব, রাশিয়াসহ রফতানিকারক দেশগুলো যখন সরবরাহ কমাচ্ছে, তখন উৎপাদন বাড়িয়ে এ বাজারে দ্রুত আধিপত্য বিস্তার করার পথে হাঁটছে যুক্তরাষ্ট্র। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দিক হল মধ্যপ্রাচ্যের তেলের বড় ক্রেতা এশিয়া এখন ক্রমেই যুক্তরাষ্ট্রের দিকে ঝুঁকছে।

যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি তথ্য প্রশাসন (ইআইএ) জানায়, ২০১৮ সালে দেশটি দৈনিক এক কোটি ব্যারেলের ওপর অপরিশোধিত তেল উৎপাদন করবে। বর্তমানে দেশটি দৈনিক গড় ৯ লাখ ৪২ হাজার ব্যারেল তেল উৎপাদন করে। সর্বশেষ ১৯৭০ সালে যুক্তরাষ্ট্র রেকর্ড পরিমাণ দৈনিক ৯৬ লাখ ব্যারেল তেল উৎপাদন করেছিল। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র তেল উৎপাদনের হারকে আরও বাড়াবে বলে জানিয়েছে রাইস্টাড এনার্জি। প্রতিষ্ঠানটি বলছে, গত দুই বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো বুধবার দেশটিতে তেলের মূল্য ব্যারেলপ্রতি ৬১ ডলারে ওঠে। ইরানে চলমান বিক্ষোভ ও সম্প্রতি লিবিয়ার পাইপ লাইনে বিস্ফোরণের কারণে তেলের মূল্য বেড়েছে।

ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সি (আইইএ) বলছে, নতুন বছরে যুক্তরাষ্ট্র জ্বালানিতে অনেকটাই স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে উঠতে সক্ষম হবে, যা আগে অচিন্তনীয় বলে মনে করা হচ্ছিল। শিল্পোন্নত বড় বড় দেশগুলোর জ্বালানি নীতির পরামর্শ দানকারী আইইএ তাদের আগের কয়েকটি প্রতিবেদনে জানিয়েছিল, ২০৩৫ সাল নাগাদ সৌদি আরবই বিশ্বের শীর্ষ তেল উৎপাদনকারী দেশ হয়ে থাকবে। কিন্তু এবার দীর্ঘমেয়াদের বার্ষিক প্রতিবেদনে আইইএ বলছে, যুক্তরাষ্ট্রে জ্বালানি খাতের প্রভূত উন্নতি হয়েছে। জ্বালানি খাতসহ উত্তর আমেরিকাতেও এর সুদূরপ্রসারী প্রভাব পরিলক্ষিত হবে। যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি উৎপাদন বৃদ্ধির ক্ষেত্রে এবারই আইইএ সবচেয়ে আশাব্যঞ্জক পূর্বাভাস দিল। নির্বাচনী প্রচারণায় ট্রাম্প প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে তার দেশ জ্বালানি খাতকে নেতৃত্ব দেবে। যুক্তরাষ্ট্র ২০১৮ সালের মধ্যে ট্রাম্পের প্রতিশ্রুতি পূরণের পথে হাঁটছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।আইইএ বলছে, গত ৯ বছরে যুক্তরাষ্ট্রের তেল আমদানির হার ২৫ শতাংশ কমেছে। পাশাপাশি গত কয়েক বছরের মধ্যে রেকর্ড পরিমাণ সর্বোচ্চ তিনগুণ তেল রফতানি বেড়েছে। যদিও দেশটির তেল রফতানির চেয়ে আমদানির পরিমাণ এখনও বেশি। এই হার ২০১৮ সালে কমে আসবে বলে জানিয়েছে রাইস্টাড।

২০১৬ সালে সৌদি আরবকে হটিয়ে তেল উৎপাদনে শীর্ষস্থান দখল করে রাশিয়া। দেশটির দৈনিক গড়ে এক কোটি দুই লাখ ৫০ হাজার ব্যারেল তেল উৎপাদন করে। তেলনির্ভরতা কমানোর উদ্যোগ নেয় সৌদি আরব। এরই ধারাবাহিকতায় আবাসন ও হজ মৌসুমকে টার্গেট করেছে দেশটি। ২০১৫ সালের শেষ দিকে সৌদি নেতৃত্বাধীন তেল উৎপাদনকারী দেশগুলোর সংগঠন ওপেক তেলের উৎপাদন কমিয়ে আনার বিষয়ে একমত হয়। ওপেকের সদস্য নয় রাশিয়া। সৌদি আরব দৈনিক গড়ে এক কোটি ৫০ হাজার ব্যারেল তেল উৎপাদন করে থাকে।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম