বাইফোকাল লেন্স
দুর্নীতিগ্রস্তরাই নয় শুধু, পৃষ্ঠপোষকরাও উন্মোচিত হোক
একেএম শামসুদ্দিন
প্রকাশ: ২৪ জুন ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
১২ লাখ টাকার এক ছাগল নিয়ে দেশব্যাপী এখন তোলপাড় চলছে। বিশেষ এ ছাগলের যিনি ক্রেতা, তিনি লোকচক্ষুর আড়ালে চলে গেলেও তার পিতৃপরিচয় নিয়ে বাদানুবাদ শুরু হয়েছে। ছাগলের ক্রেতার নাম মুশফিকুর রহমান ইফাত। তিনি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সদস্য ড. মো মতিউর রহমানের সন্তান। কিন্তু গোলমাল বাদে মতিউর রহমান যখন ইফাতকে তার সন্তান হিসাবে অস্বীকার করেন। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়। বেসরকারি একটি টেলিভিশনের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে তিনি ইফাতকে সন্তান হিসাবে শুধু অস্বীকারই করেননি, তাকে চেনেন না বলেও তিনি জানান। এরপরই মূলধারার কয়েকটি গণমাধ্যম অনুসন্ধান চালিয়ে ইফাতের প্রকৃত পরিচয় সবার সামনে তুলে ধরে প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এসব প্রতিবেদনের মাধ্যমে জানা যায়, ইফাত মতিউর রহমানেরই ঔরসজাত সন্তান। ইফাত মতিউর রহমানের দ্বিতীয় স্ত্রীর গর্ভে জন্ম নেন এবং মার সঙ্গে ধানমণ্ডির এক বাড়িতে থাকেন। এ ঘরে মতিউর রহমানের আরও দুজন সন্তান আছে। মতিউর রহমানের প্রথম স্ত্রীর ঘরে আরও একজন ছেলে ও মেয়ে সন্তান আছে। মতিউর রহমান জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কাস্টম, এক্সাইজ ও ভ্যাট আপিল্যাট ট্রাইব্যুনালের সদস্য হলেও শেয়ারবাজারের একজন ‘গ্যাম্বলার’ হিসাবে অধিক পরিচিত। তিনি তার পদ ও পদবি ব্যবহার করে বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন। তার এ সম্পদের বর্ণনা গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে দেশজুড়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। শেয়ারবাজারেও তার বিপুল অঙ্কের বিনিয়োগ আছে। শেয়ারবাজারে একাধিক ছোট কোম্পানি আনার মাধ্যমে বাজারসংশ্লিষ্টদের কাছে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেন। এ শেয়ারবাজার সূত্রেই তিনি সামরিক-বেসামরিক অনেক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাসহ সমাজের প্রভাবশালী মহলের সঙ্গে বেশ ভালো সম্পর্ক গড়ে তোলেন। এ ছাড়া ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের ঘনিষ্ঠ এবং শেয়ারবাজার কারসাজিতে জড়িত সমাজের মুখচেনা অতি পরিচিত ব্যক্তিদের সঙ্গেও তার গভীর যোগাযোগ রয়েছে। জানা গেছে, এ সম্পর্ককে কাজে লাগিয়ে তিনি সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। শুধু তাই নয়, বিভিন্ন সময়ে তার অবৈধ কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপিত হলে তিনি এসব মুখচেনা ব্যক্তির কাঁধে ভর করেই বৈতরণী পার হয়েছেন।
টেলিভিশনের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে শেয়ারবাজারে মুনাফা অর্জনে যে কারসাজির বর্ণনা তিনি দিয়েছেন, তাতে একজন সরকারি কর্মকর্তা হিসাবে প্রচলিত আইনের যে লঙ্ঘন করেছেন, তা নিয়েও এখন কথা উঠেছে। মতিউর রহমানের এরূপ আইন লঙ্ঘনের রেকর্ড অনেক আছে। এসব নিয়ে তার ভয়-ডর কোনোকালেই ছিল না। তার বিরুদ্ধে ওঠা অনেক অভিযোগই তিনি দক্ষতার সঙ্গে ম্যানেজ করে আজও বহাল তবিয়তে সরকারি চাকরি করে যাচ্ছেন। এর আগে ২০০৪, ২০০৮, ২০১৩ ও ২০২১ সালে মোট চারবার অভিযোগ উঠলেও দুদকের তৎকালীন অভিজ্ঞ ও দক্ষ (?) কর্মকর্তারা অনুসন্ধান করে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি বলে প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। ফলে, মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের অনুসন্ধানের পরিসমাপ্তি ঘোষণা করে দুদক, অর্থাৎ মতিউর রহমানকে নিয়ে কমিশন থেমে যায়। তবে এ মাসের গোড়ার দিকে দুদক মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থ পাচারের অভিযোগ পঞ্চমবারের মতো অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয়।
দুদক এখন বলছে, মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে দেশে ও বিদেশে কয়েক হাজার কোটি টাকার মালিক হওয়ার অভিযোগ আছে। দেশে একটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে দুই হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ এবং কানাডায় বাড়ি, দুবাই, সিঙ্গাপুর ও যুক্তরাষ্ট্রে বিনিয়োগ রয়েছে তার। দুদক অনুসন্ধান করে এ পর্যন্ত তার নিজের, দুই স্ত্রী ও পরিবারের সদস্যদের নামে ঢাকায় অন্তত ১৫টি ফ্ল্যাট ও তিনটি বাড়ির সন্ধান পেয়েছে। এ ছাড়া বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় একটি সাততলা ভবনসহ অন্য আরেকটি বহুতল ভবনের অংশ আছে তার। মতিউর রহমানের মালিকানায় ময়মনসিংহের ভালুকায় প্রায় ৩০০ বিঘা জমি এবং বরিশালে গ্লোবাল ম্যাক্স নামের দুটো জুতার কারখানা এবং টঙ্গীতে এসকে ট্রিমস নামে ব্যাগ ম্যানুফ্যাকচারিং ও এক্সেসরিজ কারখানা আছে। চাঁদপুরে একটি গরুর খামারও আছে তার। নরসিংদীর রায়পুরে অবস্থিত ওয়ান্ডার পার্ক ও ইকো রিসোর্টের মালিক তার প্রথম স্ত্রীর দুই সন্তান। এ ছাড়া গাজীপুরের পুবাইলে আপনভুবন পিকনিক ও শুটিং স্পটেরও মালিক তারা। এর বাইরেও এ কর্মকর্তার শ্যালক, শ্যালিকা, ভাই ও আত্মীয়স্বজনের নামে-বেনামে প্রচুর সম্পদের তথ্য দুদকের কাছে রয়েছে বলে জানা গেছে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য মতিউর রহমানই শুধু নয়, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সরকারি কর্মকর্তাদের অবৈধ সম্পদ গড়ার যে কিচ্ছা-কাহিনি সিরিজ আকারে গণমাধ্যমে প্রকাশিত হচ্ছে, তা সরকারকে বিব্রত করছে বৈকি। সরকারি দল হিসাবে আওয়ামী লীগের জন্যও এসব ঘটনার এমন নগ্ন প্রকাশ সুখকর নয়। প্রথমে পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ, তারপর সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ, সর্বশেষ সাবেক ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়ার দুর্নীতির যে ফর্দ বেরিয়েছে, তাতে এ দুটি বাহিনীর যে ক্ষতি হয়েছে, তা সত্যিই দুঃখজনক। যদিও গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য যাচাই-বাছাই ও সুষ্ঠু বিচারে সত্য প্রমাণ না হওয়া পর্যন্ত তাদের অপরাধী বলা ঠিক হবে না। আছাদুজ্জামান মিয়া তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ অস্বীকার করে উলটো চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন। এর আগে অবশ্য আমরা বেনজীর আহমেদকেও একইরকম চ্যালেঞ্জ ছুড়ে বক্তব্য দিতে শুনেছি; কিন্তু দুদকের অনুসন্ধানে যখন একের পর এক খবর বেরিয়ে আসতে শুরু করল, বেনজীরের পক্ষ থেকে আর কোনো প্রতিবাদ শোনা যায়নি। তবে আছাদুজ্জামান মিয়া যদি নিজ সম্পর্কে এতই আস্থাশীল হয়ে থাকেন, তাহলে তিনি সরকারকে অনুরোধ করে তদন্তের মাধ্যমে তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণ করার ব্যবস্থা করতে পারেন। তাতে তিনি মানুষের তির্যক মন্তব্য থেকে রেহাই পাবেন। অভিযোগ ওঠা এসব ব্যক্তি সরকারেরই নিয়োগপ্রাপ্ত এবং ঘনিষ্ঠ হওয়ায় সরকারও এর দায় এড়াতে পারে না। আমি যুগান্তরে আমার লেখা আরেকটি নিবন্ধেও একই কথা বলেছি।
মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ আরও একবার প্রমাণ করে দিল, উল্লেখযোগ্যসংখ্যক সরকারি কর্মকর্তা দিনের পর দিন দুর্নীতি করেও পার পেয়ে যাচ্ছেন। যারা সামাল দিতে পারছেন না, গণমাধ্যমে যখন তাদের কীর্তিকলাপ প্রকাশ পেয়ে যাচ্ছে, দেশের মানুষ কেবল তখনই জানতে পারছেন। একসময় এমনও ছিল, যখন গণমাধ্যমে এ ধরনের অনুসন্ধানী প্রতিবেদন সমাজে আলোড়ন তৈরি করত, তখন সরকারের নীতিনির্ধারণী মহলে তার প্রভাব পড়ত। ফলে সরকার এক ধরনের চাপ অনুভব করত। এখন দিন বদলেছে। এখন যে প্রক্রিয়ায় দল ক্ষমতায় আসে, তাতে জনগণের কাছে জবাবদিহি করার প্রয়োজনও অনুভব করে না। এ কারণে ক্ষমতার উঁচু মহলে তেমন প্রতিক্রিয়াও লক্ষ করা যায় না। এখন বড়জোর আলোচনার ঝড় ওঠে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। কিছুদিন স্থায়ী হয়, তারপর নতুন কোনো ঘটনায় চাপা পড়ে যায়। সরকারি কর্মকর্তারা এত সম্পদের পাহাড় গড়েন কীভাবে? টিআইবির এক জরিপে দেখা গেছে, বাংলাদেশে ৭০ দশমিক নয় শতাংশ খানা সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে সেবা নিতে গিয়ে দুর্নীতির শিকার হয়েছে। জরিপে উঠে আসা ১৭টি খাতের মধ্যে শীর্ষ দুর্নীতিগ্রস্ত খাত হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা। জরিপে ৭২ শতাংশ ভুক্তভোগী কারণ হিসাবে বলেছেন, ঘুস না দিলে সেবা পাওয়া যায় না। এর অর্থ হলো সরকারি সেবা পেতে হলে উপরি দেওয়াই এখন সেখানে অনেকটা প্রাতিষ্ঠানিক নিয়মে পরিণত হয়েছে। এক হিসাবে দেখা গেছে, বছরে মোট ঘুস দেওয়ার পরিমাণ প্রায় ১০ হাজার ৮৩০ কোটি টাকা, যা গত বছর উদ্বোধন হওয়া কর্ণফুলী টানেলের নির্মাণ খরচের চেয়েও বেশি।
পর্যালোচনা করে মনে হয়েছে, কর্মকর্তাদের দুর্নীতির প্রবণতা ঠেকাতে সরকারের পদক্ষেপ ও সদিচ্ছার অভাব রয়েছে। যদিও কিছু ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়, তাতে দেখা যায়, উচ্চপদের কর্মকর্তারা থাকেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত দুদকের করা শতাধিক দুর্নীতির মামলায় প্রায় ৩৭৪ জনকে আসামি করা হয়েছে, যাদের অর্ধেকই সরকারি চাকরিজীবী। দেখা গেছে, এ আসামিদের মধ্যে ৯৬ শতাংশই মধ্যম ও নিম্নসারির কর্মকর্তা-কর্মচারী। উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা রয়েছেন মাত্র চার শতাংশের মতো। এর আগের বছরগুলোর চিত্রও একই। পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানা যায়, ২০১৬ থেকে ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দুদক ৭৯৯ জনকে গ্রেফতার করেছিল, তাদের মধ্যে ৩৯০ জন ছিলেন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, যার ৯৭ শতাংশের বেশি ছিলেন নিম্ন পদের চাকরিজীবী। উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের তুলনায় নিম্ন পদের কাউকে ধরা সহজ ও নিরাপদ। কারণ, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তারা ক্ষমতাবলয়ের বাইরে অবস্থান করেন। যেখানে দুর্নীতি বা অনিয়মে সরকারের উচ্চ পদের কর্মকর্তা বা রাজনৈতিক ব্যক্তির সংশ্লিষ্টতা রয়েছে, এরকম ক্ষেত্রে খুব কমই আমরা কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখি। বাংলাদেশে দুর্নীতির যে ব্যাপকতা, সে তুলনায় এ মামলার সংখ্যা খুবই কম। দুদক বলছে, তাদের পক্ষ থেকে যেসব মামলা করা হচ্ছে, সেগুলোর সাজার হার প্রায় ৬০ শতাংশ। যদিও আপিল বিভাগ পর্যন্ত সে সাজা নিষ্পত্তির হার একেবারেই হাতেগোনা। যাদের বিরুদ্ধে মামলা হচ্ছে, তাদের অনেকেই আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে পার পেয়ে যাচ্ছেন।
সরকারি কর্মকর্তাদের এমন লাগাম ছাড়া দুর্নীতি নিয়ে সম্প্রতি সংসদে দেওয়া সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আবদুল মোমেনের বক্তব্য প্রণিধানযোগ্য। তিনি বলেছেন, আমলাদের একটি অংশ দুর্নীতিপরায়ণ হয়ে উঠেছে, এতে জনগণের হয়রানি বাড়ছে। অল্পসংখ্যক দুর্নীতিপরায়ণ আমলার জন্য সারা আমলাতন্ত্র বদনামের ভাগীদার হতে পারে না। ২০২০ সালে একে মোমেন ঢাকার এক অনুষ্ঠানে দুর্নীতিবাজ সরকারি কর্মকর্তাদের কানাডায় অর্থ পাচার ও গাড়ি-বাড়ি কেনা বিষয়ে আরও একবার কথা বলে সমালোচনার ঝড় তুলেছিলেন। শুধু বেনজীর, আছাদুজ্জামান কিংবা মতিউর রহমানই নয়, সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থায় এমন অনেক দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তা বহাল তবিয়তেই চাকরি করে যাচ্ছেন। প্রশ্ন হচ্ছে, এসব কর্মকর্তার পৃষ্ঠপোষক কারা? কাদের জাদুর মন্ত্রবলে তারা বারবার পার পেয়ে যান? এদের প্রকৃত পৃষ্ঠপোষকদের পরিচয় উন্মোচন হওয়া উচিত। তা না হলে দুর্নীতি দমন সম্ভব নয়। সমাজের বিশিষ্টজনরা বলেন, পৃষ্ঠপোষকদের পরিচয় জানা থাকলেও মুখ ফুটে বলা যাবে না। তাতে নিরাপদ জীবনযাপনে বিঘ্ন ঘটতে পারে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সরকারি কর্মকর্তাদের অনেকের আচরণ ও বক্তব্যে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীর চেয়ে তাদের দলীয় পরিচয়ই বেশি প্রকাশিত হয়েছে। দেশ চালাতে গিয়ে এসব কর্মকর্তার ওপর অতি নির্ভরশীলতা দুর্নীতির পথ সুগম করে দিচ্ছে কিনা, তা-ও দেখতে হবে। এসব যতদিনে না বন্ধ করা যাবে, ততদিন এদেশ দুর্নীতিমুক্ত হবে না।
একেএম শামসুদ্দিন : অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা