ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের ভূরাজনীতি ও বাংলাদেশ
ড. দেলোয়ার হোসেন
প্রকাশ: ১৪ মে ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলকে কেন্দ্র করে কয়েক বছর ধরে ব্যাপক আলোচনা-বিশ্লেষণ চলছে। ২০০৮-০৯ সালে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার Asian Rebalancing Strategy কিংবা Asian Pivot-এর মাধ্যমে যে নতুন কৌশলগত অবস্থান নির্ধারণ করা হয়, তা থেকেই ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের গুরুত্ব বিশেষভাবে পরিলক্ষিত হয়। প্রায় এক দশক ধরে যুক্তরাষ্ট্র ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলকে সামনে নিয়ে আসছে। ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ গুরুত্বের বিষয়টি অনুধাবন করে এ অঞ্চলকে কেন্দ্র করে তাদের পররাষ্ট্রনীতিকে ঢেলে সাজিয়েছে। আমরা লক্ষ করছি, এ অঞ্চলের বড় ধরনের উত্থান হয়েছে। বিশেষ করে চীন ও ভারতের ব্যাপক উত্থানের কারণে এশিয়া এবং এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল তথা ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের গুরুত্ব বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ অঞ্চলে শুধু চীন বা ভারতেরই অবস্থান নয়, রয়েছে আসিয়ান দেশগুলোও। আসিয়ানও বিশ্ব রাজনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ পক্ষ। আসিয়ানের পাশাপাশি রয়েছে জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া। ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ পক্ষ হচ্ছে অস্ট্রেলিয়া।
সব মিলিয়ে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রহ যেমন বেড়েছে, তেমনই এ অঞ্চলের দেশগুলোর অর্থনৈতিক বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে এ অঞ্চলের ভূরাজনৈতিক গুরুত্বও বেড়েছে। এশিয়ায় অবস্থিত গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি অঞ্চল যেমন: দক্ষিণ এশিয়া, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং পূর্ব এশিয়ার অর্থনৈতিক উত্থান আমরা সমষ্টিগতভাবে লক্ষ করছি এবং আবার একে পৃথকভাবেও দেখা যেতে পারে। যেমন, বাংলাদেশ ও ভারতের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি। যদিও দক্ষিণ এশিয়ায় একসময় বরাবরই ভারত ও পাকিস্তানের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির কথা বলা হতো, কিন্তু গত এক দশকে বাংলাদেশ পাকিস্তানকে অতিক্রম করেছে। দক্ষিণ এশিয়ায় বর্তমানে বাংলাদেশ দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনৈতিক শক্তি হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এসব পরিবর্তন ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে।
একসময় বিশ্ব অর্থনীতি এবং বিশ্ব রাজনীতির প্রাণকেন্দ্র ছিল ইউরোপ। পরবর্তী সময়ে ইউরোপের পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্যের গুরুত্ব ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছিল। স্নায়ুযুদ্ধের সময়ে তেল সম্পদের ওপর ভিত্তি করে মধ্যপ্রাচ্যের বিশেষ গুরুত্ব আমরা দেখতে পেয়েছি। মধ্যপ্রাচ্যে দুই পরাশক্তি ব্যাপকভাবে যুক্ত ছিল। এ অঞ্চলকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন ঘটনা, বিশেষ করে ফিলিস্তিন সংকট এবং ইরানের উত্থান-সবকিছু মিলে মধ্যপ্রাচ্যের একটি বিশেষ গুরুত্ব ছিল। এখন আমরা লক্ষ করছি, এক দশক ধরে মধ্যপ্রাচ্যের গুরুত্বকে ছাড়িয়ে, এমনকি ইউরোপের গুরুত্বকে ছাড়িয়ে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের গুরুত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের দিকে একদিকে যুক্তরাষ্ট্র এগিয়ে আসছে, অন্যদিকে ইউরোপের যথেষ্ট দৃষ্টিও আমরা লক্ষ করছি। এ অঞ্চলে জার্মানি, ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যের ব্যাপক অর্থনৈতিক ও সামরিক উপস্থিতি আমরা দেখতে পাচ্ছি। ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের এ গুরুত্ব বৃদ্ধির পেছনে রয়েছে চীন কর্তৃক বিশ্বের অন্যতম পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্বব্যাপী আধিপত্যের প্রতি চ্যালেঞ্জ। তাছাড়া চীনও এ অঞ্চলে অর্থনৈতিক ও সামরিক কর্তৃত্ব ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি করেছে। এ প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্র এবং তাদের মিত্র ইউরোপের কাছে এ অঞ্চলের গুরুত্ব অপরিসীম।
স্নায়ুযুদ্ধের আমল থেকেই জি-সেভেন বৈশ্বিকভাবে একটি বড় ধরনের মোড়ল গোষ্ঠী হিসাবে পরিচিত। জি-সেভেনকে যে দেশগুলো একটি প্রতিদ্বন্দ্বিতা বা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে, সে দেশগুলো হচ্ছে চীন, ভারত, রাশিয়া এবং তাদের সঙ্গে যুক্ত আছে ব্রাজিল ও দক্ষিণ আফ্রিকা। তবে চীন ও ভারতের সম্মিলিত অংশগ্রহণ জি-২০ এবং ব্রিকসে নতুন বাস্তবতা তৈরি করেছে। ফলে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের ভূরাজনৈতিক গুরুত্ব নতুনভাবে লক্ষণীয়। এখানে জাপানও খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করার চেষ্টা করছে। আমরা জানি, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য যৌথভাবে একটি সামরিক চুক্তি করেছে, যেটিকে বলা হয় ওকাস। তাছাড়া এখানে কোয়াডের তৎপরতাও বিদ্যমান। এর ফলে একধরনের সামরিক মিত্রতা তৈরি হয়েছে। পাশাপাশি অর্থনৈতিক বিষয়গুলোও রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র তার নিজস্ব ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল ঘোষণা করেছে। জাপান, ভারত এবং ইউরোপের দেশগুলোও ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল ঘোষণা করেছে। বাংলাদেশ ইন্দো-প্যাসিফিক আউটলুক নামে নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করেছে। ফলে আমরা দেখতে পাই কোয়াডের অর্থাৎ ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, জাপান ও অস্ট্রেলিয়ার কৌশলগত অবস্থান। এ কৌশলের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলকে উন্মুক্ত ও নিরাপদ রাখা। সেখানে আন্তর্জাতিক আইনভিত্তিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা। একই সঙ্গে চীনের আধিপত্য ও উত্থান মোকাবিলা করারও একটি ইঙ্গিত আমরা দেখতে পাই।
বাংলাদেশ ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলকে এমন একটি অঞ্চল হিসাবে বিবেচনা করে, যেটা যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, চীন, ইউরোপের দেশগুলো, রাশিয়াসহ সবার জন্যই উন্মুক্ত থাকবে; সবাই সেখানে তার নিরাপত্তা ও উন্নয়নের জন্য যুক্ত থাকবে। একটি পারস্পরিক যোগসূত্র তৈরি এবং একটি বহুমাত্রিক সহযোগিতার কাঠামোর জায়গা থেকে বাংলাদেশ বিষয়টি বিবেচনা করছে। আমরা জানি, বিশ্ব রাজনীতিতে বিভিন্ন কৌশল রয়েছে; পররাষ্ট্রনীতিতে বিভিন্ন ধরনের অ্যাপ্রোচ রয়েছে। বাস্তববাদী দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বিভিন্ন দেশ একদিকে যেমন জাতীয় স্বার্থ বৃদ্ধি করার জন্য তৎপর রয়েছে, তেমনই একই সঙ্গে সমমনা দেশগুলো যৌথ প্রচেষ্টার মাধ্যমে জাতীয় স্বার্থ এবং ভূরাজনৈতিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করছে। সেদিক থেকে বিবেচনা করলে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের দিকে পশ্চিমা দেশগুলোর বিশেষ আকর্ষণের বিষয়টি সহজেই অনুমান করা যায়।
এ অঞ্চলের একটি গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্র হিসাবে বাংলাদেশের জন্যও ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র অত্যন্ত পরিষ্কারভাবেই উল্লেখ করেছে, বাংলাদেশের সঙ্গে তাদের সম্পর্কের পেছনে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে নিরাপত্তা এবং শান্তিপূর্ণ অবস্থান তৈরি করার বিষয়টি সম্পর্কিত। এমনকি যুক্তরাষ্ট্র মালদ্বীপ ও শ্রীলংকার সঙ্গেও সম্পর্ক ঢেলে সাজাচ্ছে, যাতে এ অঞ্চলে মার্কিন অবস্থান আরও সুদৃঢ় হয়। একইভাবে চীন দক্ষিণ এশিয়া এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াসহ পুরো অঞ্চলেই প্রভাব বৃদ্ধির চেষ্টা করছে। ফলে একদিকে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে পশ্চিমা বিশ্বের প্রভাব বৃদ্ধির চেষ্টা দৃশ্যমান, একই সঙ্গে প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জ থেকে শুরু করে মালদ্বীপ পর্যন্ত সর্বত্রই চীনের প্রভাব বৃদ্ধির চেষ্টা লক্ষণীয়। এক্ষেত্রে চীন ও পশ্চিমা বিশ্বের মধ্যে সরাসরি কোনো সাংঘর্ষিক অবস্থা তৈরি না হলেও দুপক্ষের মধ্যে যে দৃষ্টিভঙ্গি ও অ্যাপ্রোচের মধ্যে যে পার্থক্য রয়েছে, সেটি সহজেই অনুমেয়। এখানে ভারত ও বাংলাদেশ একটি বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে। যদিও ভারত পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ, কিন্তু ভারত তার স্বকীয় পররাষ্ট্রনীতি পরিচালনার বিষয়টি পরিষ্কার করে দিয়েছে। বিশেষ করে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে বিষয়টি আরও বেশি পরিষ্কার হয়েছে।
সব মিলে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলটি একেবারেই দ্বিমেরুকেন্দ্রিক বিশ্ব বাস্তবতা দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে, সেটি বলা যাবে না। সেখানে ভারত, বাংলাদেশ এবং আসিয়ান দেশগুলোকে একটি ভিন্ন পক্ষ হিসাবে আমরা দেখতে পাই। এ অঞ্চলটিকে একটি বহুমুখী প্রতিদ্বন্দ্বিতার ক্ষেত্র হিসাবে আমরা দেখতে পাই। তবে এটি পরিষ্কারভাবে বলা প্রয়োজন, ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের মাধ্যমে এশিয়ার গুরুত্ব কিংবা বিশ্ব রাজনীতি ও বিশ্ব অর্থনীতিতে এশিয়ার আধিপত্যের প্রতিফলন আমরা দেখতে পাই। পাশাপাশি এ অঞ্চলটিকে নিরাপদ রাখা, বিভিন্ন যুদ্ধ-সংঘাত থেকে মুক্ত রাখা প্রতিটি দেশেরই অন্যতম দায়িত্ব। তা যদি না করা হয়, তাহলে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত দেশগুলো যেমন: ভারত, বাংলাদেশ, আসিয়ান, চীন, জাপান, অস্ট্রেলিয়াসহ সব দেশই কোনো না কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বিভিন্ন কারণে বিশ্ব রাজনীতি ও বিশ্ব অর্থনীতির মেরূকরণ হলেও এ অঞ্চলটিকে শান্তিপূর্ণ ও নিরাপদ রাখা অত্যন্ত জরুরি। এর মাধ্যমেই যুক্তরাষ্ট্র, বাংলাদেশ, ভারত, চীনসহ সবার স্বার্থই রক্ষা করা সম্ভব হবে। কাজেই ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল যেন স্নায়ুযুদ্ধের সময়ের মতো অস্ত্র প্রতিযোগিতার ক্ষেত্র না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখা প্রয়োজন।
এ প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিনিধি ডোনাল্ড লুর বাংলাদেশ সফর বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। ডোনাল্ড লু অতীতেও বাংলাদেশে একাধিকবার এসেছেন। মার্কিন প্রতিনিধিরা বিশেষ করে ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর থেকে বাংলাদেশের সঙ্গে যোগাযোগ বৃদ্ধি করছেন। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে একযোগে কাজ করার কথা বলছে। কিছুদিন আগে ঢাকার মার্কিন দূতাবাসে অনুষ্ঠিত একটি গুরুত্বপূর্ণ আলোচনাসভায় একজন মার্কিন বিশ্লেষক ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল ও পুরো বিশ্ব বাস্তবতার প্রেক্ষাপটে পরিষ্কারভাবে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে সরাসরি তাদের অবস্থান থেকে বিবেচনা করে। কারণ অনেকেই মনে করেন, বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক অনেক ক্ষেত্রে ভারতের ওপর নির্ভরশীল। এ প্রেক্ষাপটে মার্কিন বিশ্লেষক পরিষ্কার করে বলেছেন, বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র তার নিজস্ব বিবেচনা প্রয়োগ করে থাকে। শুধু বাংলাদেশই নয়, পৃথিবীর যে কোনো গুরুত্বপূর্ণ দেশের সঙ্গে অন্য যে কোনো দেশ সেদেশের নিজস্ব বাস্তবতা অনুযায়ী নিজস্ব অবস্থান থেকে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে, এটাই স্বাভাবিক।
বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের নতুন একটি অধ্যায় আমরা দেখতে পাচ্ছি। এক্ষেত্রে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের নিরাপত্তা, উন্নয়ন ও রাজনীতি-এ বিষয়গুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এ কারণে বলা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের ভূরাজনৈতিক বাস্তবতার দিকটি ক্রমেই আরও শক্তিশালী হচ্ছে, আরও স্পষ্ট হচ্ছে। ডোনাল্ড লুর এ সফর সেদিকটিই ইঙ্গিত করে। ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের পর থেকে মার্কিন প্রতিনিধিদের মুখেও আমরা এ ধরনের বক্তব্য শুনে আসছি। বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র নিরাপত্তার বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে এবং এর মানেই হচ্ছে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল, ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চল এবং আরও সুনির্দিষ্ট করে বললে বঙ্গোপসাগরীয় অঞ্চলের দিকে আরও গুরুত্ব প্রদান। এ প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক কীভাবে আরও সুদৃঢ় করা যায় এবং তা আরও কার্যকর করা যায়, সেদিকে দুদেশের নজর রয়েছে। তাছাড়া বিভিন্ন ইস্যুতে যেসব মতপার্থক্য আছে, সেগুলো দূর করা এবং পাশাপাশি এ সম্পর্কের অর্থনৈতিক ও ভূরাজনৈতিক ভিত্তিটিকে আরও শক্তিশালী ও মজবুত করার একটি প্রচেষ্টা আমরা দেখতে পাচ্ছি। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রতিনিধি বাংলাদেশসহ এ অঞ্চলের বিভিন্ন দেশ সফর করছেন এবং ভবিষ্যতেও এ ধরনের সফর অব্যাহত থাকবে। ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের যত গুরুত্ব বাড়বে, ততই আমরা মার্কিন নীতিনির্ধারকদের পদচারণা দেখতে পাব।
ড. দেলোয়ার হোসেন : অধ্যাপক, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়; সদস্য, সরকারি কর্ম কমিশন